Nepal News: 'যেটা পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মায়ানমারে বারবার হয়, নেপাল সেটা চাইছে না', যে ভূমিকা নিলেন সেনাপ্রধান...
Nepal Protest: ছাত্র-যুবর বিক্ষোভ কীভাবে সেনা এবং পুলিশকে পিছু হঠতে এবং শাসককে চেয়ার ছেড়ে পালাতে বাধ্য় করতে পারে তা দেখিয়ে দিল নেপাল।

সত্য়জিৎ বৈদ্য় ও সন্দীপ সরকার, কলকাতা : বুলেট দিয়েও দমানো গেল না বিদ্রোহ। বরং নেপালে ছাত্র-যুবর আন্দোলনের সামনে নতিস্বীকার করল সেনা এবং পুলিশও। সূত্রের খবর, আন্দোলনের চেহারা দেখে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে কে পি ওলি-কে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেন খোদ সেনাপ্রধানই। কে পি ওলি আরও সেনা নামাতে বললে সেনাপ্রধান পরিষ্কার বলে দেন, আপনি সরে দাঁড়ালে তবেই বাহিনী রাস্তায় নামবে।
বিদ্রোহের কাছে হার মানল বুলেট। গণবিদ্রোহের ঝড়ই উল্টে দিল নেপালের গদি। ছাত্র-যুবর বিক্ষোভ কীভাবে সেনা এবং পুলিশকে পিছু হঠতে এবং শাসককে চেয়ার ছেড়ে পালাতে বাধ্য় করতে পারে তা দেখিয়ে দিল নেপাল।
সোমবার থেকে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে নেপালে ছাত্র-যুবর বিক্ষোভে লাগাম টানার চেষ্টা করেছিলেন সদ্য় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি। কিন্তু, Gen-Z র বিদ্রোহের ঝড় দেখে সেই সেনাই অবস্থান বদলাতে বাধ্য় হল। সূত্রের খবর, খোদ সেনাপ্রধানই কে পি ওলি-কে পরামর্শ দেন, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার ছেড়ে দিতে।
এ প্রসঙ্গে ব্রিগেডিয়ার দেবাশিস দাস (অবসরপ্রাপ্ত) বলেন, "সেনাবাহিনীর খুব সোজা কাজ হচ্ছে যে, নিজেরাই রাজনীতিতে ঢুকে যাও এবং নিজেরাই রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী হয়ে যাও, যেটা পাকিস্তানে হয় বারবার। যেটা বাংলাদেশে হয় বারবার, যেটা মায়ানমারে হয় বহুবার। কিন্তু সেখানে আমরা দেখছি, নেপালে সেটা চাইছে না। নেপালের সেনবাহিনী রাজনৈতিক সমাধান চাইছে এবং ততক্ষণ অবধি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।"
দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে, প্রথমে ২৬টা সোশাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করেছিল নেপালের ওলি-সরকার। তা নিয়ে ছাত্র-যুবর বিদ্রোহে সোমবার কাঠমাণ্ডু যখন কুরুক্ষেত্র, তখনও আন্দোলন দমন করতে সরকার ব্যাপক দমনপীড়ন চালায়। পুলিশ গুলি চালায়। তাতে মৃত্যু হয় একাধিক তরুণ আন্দোলনকারীর। কিন্তু, তাতে আন্দোলনের আঁচ এতটুকু কমেনি। বরং তা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। প্রবল চাপের মুখে রাতেই ওলি সরকার সোশাল মিডিয়া থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য় হয়। কিন্তু, ততক্ষণে ক্ষোভের আগুন দাউদাউ করে জ্বলতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলির পদত্য়াগের দাবিতে গর্জে উঠেছে কাঠমাণ্ড। এমনকী, বিদ্রোহের ঝাঁঝ দেখে ঘুরে যায় পুলিশ এবং সেনাও।
সূত্রের খবর, ইস্তফা দেওয়ার আগে শেষ চেষ্টা হিসেবে সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগডেলের কাছে সাহায্য় চান প্রধানমন্ত্রী ওলি। পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও সেনা নামাতে বলেন তিনি। এমনকী দেশত্যাগের জন্যও সেনাপ্রধানের কাছে তিনি কাতর অনুরোধ জানান বলে সূত্রের খবর। সূত্রের খবর, তখনই সেনাপ্রধান তাঁকে ইস্তফা দেওয়ার পরামর্শ দেন। সেনাপ্রধান স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, ওলি ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ালে তবেই বাহিনী রাস্তায় নামবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ইমনকল্য়াণ লাহিড়ি বলেন, "সেনাবাহিনী পর্যন্ত বুঝতে পেরেছে যে পরিস্থিতি নেপালে হচ্ছে সেটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আর যাতে রক্তক্ষয় না হয় নেপালের মাটিতে, সেজন্য তারা বাধ্য করেছে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে।"
বিপাকে পড়ে প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে নিজের সরকারি বাসভবন থেকে হেলিকপ্টারে অজ্ঞাত স্থানের উদ্দেশে উড়ে যান কে পি ওলি। কিন্তু তিনি কোথায় গেছেন, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। কোনও সূত্র মারফত দাবি করা হচ্ছে, বেসরকারি হিমালয় এয়ারলাইন্সের বিমানে ওলি দুবাই পালিয়ে যেতে পারেন। যদিও, এ বিষয়ে সরকারের তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি।























