দ্বিতীয় হুগলি সেতুর লেনে দাঁড়িয়ে গাড়ি, রহস্যজনকভাবে উধাও ব্যবসায়ী
গাড়ির দরজা খোলা ছিল। গাড়িতে ঝুলছিল ছিল চাবি। সেতুর ওপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে কোথায় গেলেন ৬৬ বছরের ওই ব্যবসায়ী, দানা বেঁধেছে রহস্য।
পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: ভোরবেলা বাড়ি থেকে বেরিয়ে রহস্যজনক ভাবে উধাও কড়েয়ার এক ব্যবসায়ী। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর হাওড়াগামী লেন থেকে উদ্ধার হয়েছে তাঁর গাড়ি। দরজা খোলা! চাবিও ঝুলছিল তাতে! তাহলে কী গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েছেন ব্যবসায়ী? এই সন্দেহে ডুবুরি নামিয়ে চলল তল্লাশি। রাজ্যে কার্যত লকডাউনের প্রথম দিন পুলিশের সামনে বাড়তি চ্যালেঞ্জ খাড়া করল ব্যবসায়ী অন্তর্ধান রহস্য।
করোনার সংক্রমণ শৃঙ্খল ভাঙতে রবিবার থেকে কার্যত-লকডাউন শুরু হয়েছে রাজ্যে। প্রথম দিনই সুনশান দ্বিতীয় হুগলি সেতু। ঘড়িতে তখন ভোর সাড়ে ৫টা।কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের নজরে পড়ে সন্দেহজনক একটি গাড়ি।
খবর যায় লালবাজার ও হেস্টিংস থানায়। গাড়ির নম্বরের সূত্র ধরে শুরু হয় খোঁজ। অনুসন্ধানে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই গাড়ি কড়েয়ার বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী শ্রবণ কুমার বিড়লার। তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, অন্যদিন ভোরে সাইক্লিং করতে বেরোলেও, রবিবার গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান ওই ব্যবসায়ী।
দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে যে অবস্থায় গাড়ি উদ্ধার হয়েছে, তা দেখে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে থাকতে পারেন ওই ব্যবসায়ী। সেই মতো কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ডুবুরি নামিয়ে সকালে বেশ কয়েক ঘণ্টা তল্লাশি চালানো হয়।
ব্যবসায়ীর পরিবার সূত্রে খবর, ৬৬ বছরের শ্রবণ কুমার বিড়লা ও তাঁর স্ত্রী সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। হাসপাতালে থেকে চিকিৎসার পর সুস্থও হয়ে ওঠেন শ্রবণ কুমার।
পুলিশের অনুমান, করোনা-ডিপ্রেশন থেকে আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন ব্যবসায়ী। যদিও তাঁর পরিবারের দাবি, অবসাদের কোনও লক্ষণ তাঁর মধ্যে ছিল না। এক আত্মীয় বলেছেন, কোনও অবসাদ ছিল না। খুব ভালো মানুষ। তিনি শীঘ্রই ফিরে আসবেন বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোন সুইচড অফ রয়েছে বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। সেতু থেকে উদ্ধার হওয়া গাড়ি তদন্তের স্বার্থে হেস্টিংস থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।