Dilip-Sukanta Tussle : "রাজনীতির শুরুতে সবাই অনভিজ্ঞ থাকে", বঙ্গ বিজেপিতে এবার ‘অভিজ্ঞতা’ তরজা দিলীপ-সুকান্তর
Dilip-Sukanta Tussle : শনিবার দুই বিজেপি নেতা মেদিনীপুরে একসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করেন। রবিবার সকালে তিন জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করতে দেখা যায় দু’জনকে।
সৌমেন চক্রবর্তী ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা : অভিজ্ঞতা প্রশ্নে বঙ্গে বিজেপিতে আরও তীব্র হল সংঘাত। দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিলেন সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। সাংসদ হিসেবে পূর্বসূরির অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে আনলেন বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি।
সম্প্রতি দিলীপ ঘোষ বলেন, সুকান্ত মজুমদার সবে দায়িত্ব পেয়েছেন, তাঁর অভিজ্ঞতা কম আছে। কিন্তু, পার্টি এই গত কত বছর ধরে লড়াই করেছে। তার মধ্যে বহু যোগ্য ব্যক্তি আছেন। সেই লোকগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, রাজনীতি যখন শুরু করে সবাই অনভিজ্ঞই থাকে।
রাজ্য বিজেপিতে কি এবার ক্রমেই বাড়ছে অভিজ্ঞতা-সংঘাত? বর্তমান ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্য কি তারই ইঙ্গিত? ক্রমেই বাড়ছে জল্পনা। রাজ্য থেকে জেলা, সাংগঠনিক রদবদল ঘিরে বিজেপির অন্দরে ক্রমশ তীব্র হচ্ছে অসন্তোষ। রবিবারও নতুন জেলা সভাপতির ওপর ক্ষোভ উগড়ে পদত্যাগ করেছেন মুর্শিদাবাদের দুই নেতা। একের পর এক পদাধিকারীর ইস্তফাই শুধু নয়, পার্টি অফিসে বিক্ষোভ, ভাঙচুরের ঘটনাও পর্যন্ত ঘটেছে। এই পরিস্থিতি সম্প্রতি দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি।
২০১৫-র সেপ্টেম্বরে রাজ্য বিজেপির সভাপতি হন দিলীপ ঘোষ। তার পরের বছর খড়গপুর সদর থেকে জিতে বিধায়ক হন তিনি। এরপর ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে মেদিনীপুর থেকে জিতে সাংসদ হন দিলীপ ঘোষ। টানা ২ দফায় রাজ্য সভাপতির পদে ছিলেন তিনি। উল্টোদিকে রাজ্য সভাপতি হওয়ার আগেই জনপ্রতিনিধি হন সুকান্ত মজুমদার। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বালুরঘাট থেকে নির্বাচিত হন সুকান্ত। গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি করা হয় তাঁকে।
এই প্রেক্ষাপটে পূর্বসূরির অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত মন্তব্যের উত্তর দিতে গিয়ে তাঁরই অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে আনলেন বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি। সুকান্ত মজুমদার বলেন, রাজনীতি যখন শুরু করে সবাই অনভিজ্ঞই থাকে। আমি যখন রাজ্য সভাপতি হয়েছি, আড়াই বছরের সাংসদ, আড়াই বছর রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা। দিলীপদাও যখন শুরু করেছিলেন, ওনার ৬ মাস, ১ বছরের অভিজ্ঞতা।
এদিকে বিজেপিতে অভিজ্ঞতা-সংঘাত নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন ,দিলীপ-সুকান্তের বক্তব্য থেকে এই উপসংহারে পৌঁছাতে পারি, এক দিলীপ বিজেপি, দুই সুকান্ত বিজেপি। এঁদের মধ্যে কোনও যোগাযোগ নেই, চূড়ান্ত মতপার্থক্য।
সাম্প্রতিককালে রাজ্যে মাওবাদী কার্যকলাপ নিয়েও বিজেপির প্রাক্তন ও বর্তমান রাজ্য সভাপতির ভিন্ন সুর সামনে এসেছে। যদিও সেই মতপার্থক্য উড়িয়ে দেন দিলীপ-সুকান্ত । বর্তমান রাজ্য সভাপতি বলেন, আমাদের কোনও মতপার্থক্য নেই। মতের মিল অমিল থাকতে পারে, মতবিরোধ নেই।
অন্যদিকে দিলীপ ঘোষ বলেন, অনভিজ্ঞতার কথা উনি নিজে বলেছেন আমি বলিনি। উনি সবসময় পাশে আছেন। আমিও আছি।
শনিবার দুই বিজেপি নেতা মেদিনীপুরে একসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করেন। রবিবার সকালে তিন জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করতে দেখা যায় দু’জনকে।