মালদায় জোট জটিলতা, কংগ্রেসের জেতা দুটি আসন এবার ছাড়তে নারাজ দুই বাম শরিক
মালদার ২টি বিধানসভা আসন নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। ২০১৬-য় দুই আসনে কংগ্রেস জিতলেও, তাদের তা ছাড়তে নারাজ দুই বাম শরিক আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক।
করুণাময় সিংহ, মালদা: ২০১৬ সালের জোটের কাঁটা যে ২০২১-এও ভোগাবে, তা সম্ভবত ভাবতে পারেননি কংগ্রেস ও বামেদের রাজ্য নেতৃত্ব। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে জোট বেঁধে লড়ার জন্য গত রবিবারই আসন রফা নিয়ে আলোচনায় বসেন কংগ্রেস ও বাম নেতারা। কিন্তু মালদার ২টি বিধানসভা আসন নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। ২০১৬-য় দুই আসনে কংগ্রেস জিতলেও, তাদের তা ছাড়তে নারাজ দুই বাম শরিক আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক। জট তৈরি হয়েছে মালদার মালতিপুর ও হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা আসন ঘিরে। মালতিপুর-এ ২০১১-য় জয়ী হয় আরএসপি। ২০১৬-য় ওই কেন্দ্রে আরএসপি প্রার্থী দিলেও জয়ী হয় কংগ্রেস। হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ২০১১-য় জয়ী হয় ফরওয়ার্ড ব্লক।
২০১৬-য় ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী দিলেও জয়ী হয় কংগ্রেস। গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও বামেদের গোটা রাজ্যে জোট হলেও এই দুটি আসনে সমঝোতা হয়নি। এবারও আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লক জেলার এই ২ আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে অনড়। আবার কংগ্রেসও জানিয়ে দিয়েছে, জেতা আসন তারা ছাড়বে না। মালদার আরএসপির জেলা সম্পাদক সর্বানন্দ পাণ্ডে বলেন, ‘‘ গতবার আমরা মালতিপুরে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসের কাছে ২৬০০ ভোটে হেরেছিলাম। গোটা রাজ্যে জোট হলেও মালদায় দুই আসনে জোট হয়নি। মালতিপুরে এবার আমরা লড়াই করতে চাই, রাজ্য নেতৃত্বকে তা জানিয়ে দিয়েছি। আমরা একটা আসনে লড়াই করি। সেটাও আমাদের ছাড়তে বললে তাহলে আমরা কি জেলায় শূন্য? কংগ্রেসকে বলব, হৃদয়কে বড় করুন। না করলে জোট হবে না ঘোঁট হবে।’’
অন্যদিকে ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য গোপাল শিকদার বলেন, ‘‘ হরিশ্চন্দ্রপুর আসনে আমরা দীর্ঘদিন ড়াই করছি। ওই কেন্দ্র থেকে জিতে বিশু মৈত্র মন্ত্রী হয়েছিলেন। গত নির্বাচনে হেরেছি। এবারও লড়াই করব। এবার যদি ওই আসন না পাই তাহলে জেলার আরও চার থেকে পাঁচটি আসনে প্রার্থী দেব।’’
কড়া অবস্থান নিয়েছে কংগ্রেসও। মালদা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় জানান, ‘‘ ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে মালদার ১২টির মধ্যে ৯টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ৮টিতে জয়লাভ করে কংগ্রেস। এবার মালদায় ১০টি আসনের দাবি করা হয়েছে। হবিবপুর ও ইংরেজবাজার বামেদের ছাড়তে রাজি আমরা। আমরা আমাদের জেতা আসন ছেড়ে দেব, এটা কেউ প্রত্যাশা করে কী করে? জোট করব আবার কংগ্রেসকে জেতা আসন ছেড়ে দিতে বলব, এটা রাজনৈতিক কৌশল নয় ৷’’জেলার সিপিআইএম নেতৃত্ব এ নিয়ে বল ঠেলেছে রাজ্য নেতৃত্বের কোর্টে। সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘ গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ২ কেন্দ্রে প্রার্থী দেয়। বাম প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছিলেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে জেলার ১২টি আসনেই আমাদের শক্তি বেড়েছে। কিন্তু বামেদের শক্তি বেশি বলে কারও অস্বস্তি বাড়াতে চাইছি না। রাজ্য নেতৃত্ব জোট নিয়ে আলোচনা করছেন। তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন, মেনে নেব।’’ সবমিলিয়ে এখন মালদার ২ আসনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে কংগ্রেস ও বামেদের মধ্যে জটিলতা তুঙ্গে ৷