Priyanka Gandhi Vadra: প্রথমবার প্রার্থী হয়েই ওয়েনাডে বাজিমাত প্রিয়ঙ্কার, লোকসভায় এবার পাশাপাশি ভাই-বোন
Priyanka Gandhi Wayanad Victory: কেরলের ওয়েনাড থেকে লোকসভা উপনির্বাচনে প্রিয়ঙ্কাকে এবার প্রার্থী করে কংগ্রেস।
নয়াদিল্লি: কিশোরী বয়সে যখন বাবার সঙ্গে প্রচারে যেতেন, ঠাকুমা ইন্দিরা গাঁধীর সঙ্গে মুখের মিল নিয়ে চর্চা হতো। নেহরু-গাঁধী পরিবারের সদস্যা প্রিয়ঙ্কা গাঁধী কবে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেবেন, গত দু'-তিন দশকে অগণিত বার সেই নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ হয়েছে। অবশেষে, ৫২ বছর বয়সে নির্বাচনী রাজনীতির মঞ্চে অবতীর্ণ হলেন প্রিয়ঙ্কা, আর গোড়াতেই কার্যত ছক্কা হাঁকালেন তিনি। দাদা রাহুল গাঁধীর ছেড়ে যাওয়া কেরলের ওয়েনাড আসনে প্রিয়ঙ্কাকে প্রার্থী করেছিল কংগ্রেস। শনিবার সেখান থেকে ৪ লক্ষ ১০ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন প্রিয়ঙ্কা। সব ঠিক থাকলে এবারের শীতকালীন অধিবেশনেই সংসদে দাদার পাশে দেখা যেতে পারে প্রিয়ঙ্কাকে। (Priyanka Gandhi Vadra)
কেরলের ওয়েনাড থেকে লোকসভা উপনির্বাচনে প্রিয়ঙ্কাকে এবার প্রার্থী করে কংগ্রেস। খোদ রাহুল ওয়েনাডের প্রার্থী হিসেবে প্রিয়ঙ্কাকে এগিয়ে দেন। প্রিয়ঙ্কার হয়ে প্রচারেও গিয়েছিলেন রাহুল। যেদিন ওয়েনাডে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান প্রিয়ঙ্কা, সেদিন তাঁর পাশে দেখা যায় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, মা সনিয়া গাঁধীকেও। ওয়েনাডে বিধ্বংসী ধসের সময়ই দাদার পাশে দেখা গিয়েছিল প্রিয়ঙ্কা। তখনও উপনির্বাচনের ঘোষণা না হলেও, সেই থেকে ওয়েনাডে প্রিয়ঙ্কার প্রার্থী হওয়া নিয়ে চর্চা শুরু। এবার সেখান থেকেই সংসদে প্রবেশ করতে চলেছেন প্রিয়ঙ্কা। (Priyanka Gandhi Wayanad Victory)
#WATCH | #WayanadByElection | Congress' Priyanka Gandhi Vadra is leading here by a margin of 3,19,199 votes. BJP candidate Navya Haridas is trailing in third position.
— ANI (@ANI) November 23, 2024
Navya Haridas says, "While this counting started, we were having expectations because we approached the people… pic.twitter.com/dOWchQfe0O
ওয়েনাডের সঙ্গে গাঁধী পরিবারের যোগসূত্র যদিও অতি সাম্প্রতিক। ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশের অমেঠী আসনে জয় নিয়ে যখন অনিশ্চয়তা দেখা দেয়, সেই সময় ওয়েনাড থেকেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নেন রাহুল। পারিবারিক আসন অমেঠী মুখ ফেরালেও, সেবার ওয়েনাড রাহুলের পাশে দাঁড়ায়। বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ওয়েনাড থেকে সংসদে যান তিনি। কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ওয়েনাড থেকে রাহুলের প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। কারণ এবছর লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে নির্বাচনী রাজনীতি থেকে অবসরগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন সনিয়া। উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলীর লোকসভা সাংসদ ছিলেন তিনি। এখন রাজ্যসভার সাংসদ।
রায়বরেলীও গাঁধী পরিবারের আসন হিসেবে পরিচিত। ১৯৫২-১৯৫৭ পর্যন্ত ফিরোজ গাঁধী সেখানকার সাংসদ ছিলেন। এর পর কংগ্রেসের আর পি সিংহ, বৈজনাথ কুরীল আসন ধরে রাখেন। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত এবং পরে ১৯৮০ সালে ইন্দিরা রায়বরেলীর সাংসদ ছিলেন। মাঝে ১৯৯৬ এবং ১৯৯৮ বাদ দিলে, বরাবর ওই আসন কংগ্রেসের দখলে ছিল। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত সেখানকার সাংসদ ছিলেন অরুণ নেহরুও। ২০০৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত একটানা রায়বরেলীর সাংসদ নির্বাচিত হন সনিয়া। তাই সনিয়া সরে যাওয়ায় রায়বরেলীর মাথার উপর থেকে গাঁধী পরিবারের হাত সরে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে অবতীর্ণ হন রাহুল।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে রায়বরেলী এবং ওয়েনাড, দুই কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী হন রাহুল। দুই কেন্দ্রেই বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন তিনি। কিন্তু সাংসদ হিসেবে লোকসভায় প্রবেশের আগে, যে কোনও একটি আসন বেছে নিতে হতো তাঁকে। সেই মতো রাহুল বেছে নেন রায়বরেলীকে।ওয়েনাডকে কথা দেন, যোগ্য উত্তরসূরি পাঠানোর। শেষ পর্যন্ত সকলকে চমকে দিয়ে প্রিয়ঙ্কাকে সেখানকার প্রার্থী ঘোষণা করেন রাহুল। রাহুল জানান, কঠিন সময়ে যখন গোটা পৃথিবী তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, ওয়েনাডবাসীকে পাশে পেয়েছিলেন। মায়ের আসনকে বেছে নিতে হলেও, ওয়েনাড চিরকাল তাঁর হৃদয়ে বেঁচে থাকবে। তাই নিজের পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য কারও হাতে ওয়েনাডকে ছাড়তে ভরসা পাচ্ছেন না তিনি। শুধু প্রিয়ঙ্কা নন, তিনিও ওয়েনাডের জন্য সমান নিবেদিত থাকবেন বলে জানান রাহুল।
আগামী দিনে লোকসভায় কী ভূমিকা পালন করেন প্রিয়ঙ্কা, সেদিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। কারণ রাজনীতিতে দেরিতে প্রবেশ নিয়ে এতদিন পারিবারিক দায়-দায়িত্বের কথা শোনা যেত তাঁর মুখে। কিন্তু এখন শুধুমাত্র দলীয় কার্যক্রমের সঙ্গেই যুক্ত নন তিনি, সাংসদ হিসেবেও হাজারো দায়িত্ব চাপবে ঘাড়ে। সেই পরীক্ষায় প্রিয়ঙ্কা ফুলমার্কস পেয়ে উতরোতে পারেন কি না, তা-ই দেখার।