(Source: Poll of Polls)
Rahul Gandhi: কেন আদানিকে আড়াল করছেন মোদি, CBI-ED তদন্ত হবে না কেন, সুর চড়ালেন রাহুল
Adani Group: মুম্বইয়ে বিরোধী জোট I.N.D.I.A-র বৈঠকের আগে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করেন রাহুল।
নয়াদিল্লি: শেয়ারে কারচুপি থেকে হাওয়া মারফত টাকা পাচার, আদানি গোষ্ঠীর (Adani Group) বিরুদ্ধে আবারও মারাত্মক অভিযোগ। সেই নিয়ে ফের একবার সরব হলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী (Rahul Gandhi)। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করলেন তিনি। এত গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন ইডি-সিবিআই আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তদন্ত করছে না, কেন প্রধানমন্ত্রী গৌতম আদানিকে আড়াল করছেন, আবারও প্রশ্ন তুললেন রাহুল।
মুম্বইয়ে বিরোধী জোট I.N.D.I.A-র বৈঠকের আগে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করেন রাহুল। সেখানে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জয়েন্ট পার্লামেন্ট্রি কমিটির তদন্তের দাবি জানান রাহুল। তিনি বলেন, "আদানির সংস্থার মাধ্যমে ভারত থেকে বিদেশে ১০০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। শেয়ার বাজারে নিজের সংস্থার মূল্য বেশি দেখিয়ে কারচুপি করেছেন আদানি। সেই টাকায় দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দর-সহ অন্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী এত কিছুর পরও কেন ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন?"
আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়ে রাহুল প্রশ্ন তোলেন,"নিজের সংস্থার শেয়ারে নিজেF কেন বিনিয়োগ করেছেন? চিনা নাগরিক এবং দুই বিদেশি দেশের শেয়ার বাজারকে কোন উপায়ে প্রভাবিত করছেন? SEBI-র যে আধিকারিক আদানিকে ক্লিনচিট দিয়েছেন, তিনিই এখন আদানির সংস্থার ডিরেক্টর! নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কী সম্পর্ক গৌতম আদানির? কেন সিবিআই-ইডি আদানির বিরুদ্ধে তদন্ত করছে না? দেশের জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িয়ে যেখানে, কেন আদানিদের বিরুদ্ধে জেপিসি তদন্ত হবে না?"
মোদি-আদানি সমীকরণ নিয়ে এর আগে দেশের সংসদেও সরব হয়েছিলেন রাহুল। প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরে আদানির শামিল হওয়া থেকে দেশের একের পর এক বন্দর, বিমানবন্দর আদানির হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দীর্ঘ যাত্রাপথে মোদি বরাবর আদানিকে সুবিধা পাইয়ে দিয়ে এসেছিলেন বলে আগেও অভিযোগ করেছিলেন রাহুল। এদিন প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রাহুল।
#WATCH | Congress MP Rahul Gandhi on Adani group row, in Mumbai
— ANI (@ANI) August 31, 2023
"The current flavour is G20 and it is about India's position in the world. What is very important for a country like India is that there is a level playing field and transparency in our economic environment and… pic.twitter.com/CsCplhni8t
আরও পড়ুন: Adani Group: ভুঁইফোঁড় সংস্থা থেকে বিনিয়োগ, শেয়ারের দামে কারচুপি, আবারও অভিযোগে বিদ্ধ আদানিরা
এদিন রাহুল জানান, বিদেশের সংবাদমাধ্যমে পর্যন্ত গৌতম আদানিকে মোদির ঘনিষ্ঠ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। এভাবে নিজের নাম কালিমালিপ্ত হতে দিচ্ছেন কেন মোদি, প্রশ্ন তোলেন রাহুল। তাঁর কথায়, "শেয়ার বাজার ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখিয়ে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করা হচ্ছে। দেশে জি-২০ সম্মেলনের আয়োজন হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। একজন ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী কেন সুরক্ষা দিচ্ছেন? দেশ থেকে ১০০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে, এই টাকা কার? নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে গৌতম আদানির কী সম্পর্ক? সিবিআই-ইডি আদানির বিরুদ্ধে কেন তদন্ত করছে না? যৌথ সংসদীয় কমিটি কেন এই বিষয়ের তদন্ত করবে না?"
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের পর, আন্তর্জাতিক তদন্তমূলক সংগঠন OCCRP আদানি গোষ্ঠীর লেনদেন নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, মরিশাসের একটি ভুঁইফোঁড় সংস্থা থেকে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে বিপুল টাকা বিনিয়োগ করা হয়। এমন একাধিক ভুয়ো সংস্থার শরণাপন্ন হয় আদানি গোষ্ঠী। ওই সমস্ত সংস্থার মাধ্যমে রহস্যজনক ব্য়ক্তিরা আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে বিনিয়োগ করতেন, আবার সময় মতো তা বিক্রিও করে দিতেন। এভাবেই আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দাম বাড়িয়ে দেখানো হতো।
এ ব্যাপারে নাসের আলি শাবান আহিল এবং চাং চুং-লিং নামের দুই ব্যক্তির নাম সামনে আনা হয়েছে। OCCRP-র দাবি, ওই দুই ব্যক্তির সঙ্গে আদানিদের দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক। গৌতম আদানির দাদা, বিনোদ আদানির দীর্ঘ দিনের সহযোগী তাঁরা। আদানি গোষ্ঠীর শাখা সংস্থার ডিরেক্টর এবং শেয়ার হোল্ডারও ছিলেন তাঁরা। ২০১৩ সাল থেকে আদানি গোষ্ঠীতে এঁদের বিনিয়োগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।
OCCRP জানিয়েছে, আহিল এবং লিং যদি আদানিদের প্রোমোটার হন, সেক্ষেত্রে আদানি গোষ্ঠীর মোট শেয়ারের ৭৫ শতাংশের বেশি তাদের নিজেদের লোকেদের হাতেই রয়েছে, যা বাজার সংক্রান্ত আইনের পরিপন্থী। আদানি পরিবারের টাকাই ঘুরপথে আহিল এবং লিংয়ের হাত ধরে শেয়ার কেনাবেচায় ঢুকছিল কিনা, তার সপক্ষে কোনও প্রমাণ না থাকলেও, আদানি পরিবারের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করেই আহিল এবং লিং শেয়ারে টাকা ঢালছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে এবং তার সপক্ষে প্রমাণও রয়েছে বলে দাবি করা হয় রিপোর্টে। সেই নিয়েই এদিন সরব হন রাহুল।