Salman Khan: হুঁশিয়ারি, হুমকি-চিঠির পর এবার চলল গুলি, কেন গ্যাংস্টারদের নিশানায় সলমন?
Salman Khan News: রবিবার ভোর ৫টা নাগাদ মুম্বইয়ের বান্দ্রায় সলমনের ‘গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টে’র বাইরে গুলি চলার খবরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
মুম্বই: সাতসকালে মুম্বইয়ে সলমন খানের বাড়ির বাইরে গুলি। একবার নয়, দু’বার নয়, বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ‘গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টে’র বাইরে। আবাসনের দেওয়ালে গুলির দাগ স্পষ্ট হয়ে রয়েছে। মোটর সাইকেলে চেপে এসে গুলি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। তাহলে কি সলমনকে নিশানা করেই গুলি চালানো হয়? প্রশ্ন উঠছে সকাল থেকেই। তবে হঠাৎ সলমনের উপর এই হামলা নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরেই তিনি গ্যাংস্টারদের নজরে রয়েছেন। (Salman Khan)
রবিবার ভোর ৫টা নাগাদ মুম্বইয়ের বান্দ্রায় সলমনের ‘গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টে’র বাইরে গুলি চলার খবরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ফোন করে খবর নিয়েছেন সলমনের। জানা গিয়েছে, দুই অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতী মোটর সাইকেলে চেপে এসে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। হেলমেটে তাদের মুখ ঢাকা ছিল বলে জানা গিয়েছে। বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়েই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় তারা। এই ঘটনায় মুম্বই পুলিশ ইতিমধ্যেই এফআইআর দায়ের করেছে। শুরু হয়েছে তদন্ত। সলমনের আবাসনে ফরেন্সিক টিমকেও দেখা যায়। দেওয়ালে গুলির দাগ পরীক্ষা করে দেখছিলেন তাঁরা। (Salman Khan News
এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। সলমনের নিরাপত্তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে, তেমনই কে বা কারা তাঁকে নিশানা করতে পারে, সেই নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। এর আগে, ২০২৩ সালে সলমনের ম্যানেজার হুমকি-চিঠি পান। সেই চিঠি নিয়ে পুলিশের কাছে গেলে জেলবন্দি গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই এবং কানাডা নিবাসী গ্যাংস্টার গোল্ডি ব্রারের নাম উঠে আসে তদন্তে। মোহিত গর্গ নামেরও আরও একজনের নাম সামনে আসে। এর পর দিল্লির তিহাড় জেল থেকে সরাসরি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন লরেন্স। সলমনকে খুনের পরিকল্পনা রয়েছে এবং বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁরা অভিনেতার উপর নজর রাখছেন বলে জানান।
#UPDATE | After the firing incident, Mumbai Police increased security outside actor Salman Khan's house. Police have so far recorded statements of more than 5 people: Mumbai Police https://t.co/8adLwJ3mXI
— ANI (@ANI) April 14, 2024
মোদিতের আইডি থেকে ইমেলে যে চিঠি এসেছিল সলমনের ম্যানেজারের কাছে, তাতে কানাডা নিবাসী ব্রার অভিনেতার সঙ্গে কথা বলতে চান বলেও জানানো হয়। অভিনেতার তরফে সাডা় না মিললে, আর কথা নয়, সরাসরি পদক্ষেপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিষ্ণোইও। ২০২২ সালের জুন মাসেও সলমনের বাবা সেলিম খানের নামে একটি হুমকি-চিঠি আসে। সকালে যেখানে হাঁটতে যান সেলিম, সেখানে ওই চিঠি কেউ বা কারা রেখে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। পঞ্জাবে গায়ক সিধু মুসেওয়ালাকে যেমন গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছে, সলমনেরও একই পরিণতি হবে বলে হুমকি ছিল ওই চিঠিতে।
আরও পড়ুন: Salman Khan: মুম্বইয়ে সলমনের বাড়ির বাইরে চলল গুলি, তদন্তে পুলিশ
সব তথ্য-প্রমাণ নিয়ে তদন্তে নামলে লরেন্সের গ্যাংয়ের দুই সদস্যের নাগাল পায় পঞ্জাব পুলিশ, তাতে জানা যায়, সলমনের বাড়ি থেকে পানভেলের ফার্মহাউস, সব রেকিও করে ফেলেছিল তারা। সলমনের কাছাকাছি বাড়ি ভাড়া বিয়েও বেশ কয়েক মাস ছিল তারা। মাঝে বিষয়টি প্রায় থিতিয়েই এসেছিল, তার মধ্যেই রবিবার সকালে গুলি চলল।
গ্যাংস্টার লরেন্স কেন সলমনকে নিশানা করছেন?
১৯৯৮ সালের কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলার সঙ্গে এর যোগ রয়েছে। ‘হম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শ্যুটিংয়ে রাজস্থানে ছিলেন সলমন। সেই সময় সলমন, তাঁর সহ শিল্পীদের বিরুদ্ধে একটি কৃষ্ণসার হরিণ শিকার করার অভিযোগ ওঠে। রাজস্থানের বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের কাছে কৃষ্ণসার হরিণ পবিত্র এবং আরাধ্য। নিজের সম্প্রদায়ের মানুষের আবেগে আঘাত হানার জন্যই সলমনের উপর প্রতিশোধ তুলতে চান বলে জানান লরেন্স। যদিও তদন্তকারীদের দাবি, এর সঙ্গে কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলার কোনও সংযোগ নেই। হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিত্বদের ভয় দেখিয়ে, ব্ল্যাকমেল করে টাকা আদায়ই মূল লক্ষ্য লরেন্সের।
লরেন্স বিষ্ণোই কে?
একাধিক বার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন ৩১ বছর বয়সি লরেন্স। মূলত পঞ্জাব থেকে মাফিয়া কাজকর্ম চালাতেন তিনি। খুন, তোলাবাজির অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। মুসেওয়ালাকে হত্যার পর মুখে মুছে ছড়িয়ে পড়ে লরেন্সের নাম। কানাডায় বসে ব্রার এবং তিহাড়ে বসে লরেন্সই মুসেওয়ালাকে খুনের চক্রান্ত করেন বলে জানা যায়।
সলমনের নিরাপত্তায় কী ব্যবস্থা?
লাগাতার হুমকির জেরে ২০২২ সালে সলমনকে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার লাইসেন্স দেয় মুম্বই পুলিশ। ওই বছরই X থেকে বাড়িয়ে সলমনকে Y প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়। X ক্যাটেগরির নিরাপত্তায় সাধারণত একজন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন থাকেন সারাক্ষণ, Y ক্যাটেগরিতে গাড়িতে একজন সশস্ত্র রক্ষী পান সলমন, পাশাপাশি সারাক্ষণ, সর্বত্র আরও একজন সশস্ত্র রক্ষী থাকেন। পালা করে চার জন এই দায়িত্ব সামলান। Y প্লাস ক্যাটেগরিতে দুই পুলিশ কর্মী সর্বদা আগলে রাখেন সলমনকে। পালা করে আরও চার জন থাকেন। বাড়িতেও সারাক্ষণ সশস্ত্র রক্ষী নিরাপত্তা দেন সলমনকে। পালা করে চার জন সেই দায়িত্ব সামলান।