Senegal News: কেউ কম, কেউ বেশি নয়, সংসারে নারী-পুরুষ সমান, এই দেশে চালু হল ‘স্বামীদের স্কুল’…
School For Husbands: সেনেগলের রাজধানী ডাকার ইমাম, ইব্রাহিম ডায়ান জানিয়েছেন, বাড়ির কাজে পুরুষদের যুক্ত করতেই এমন উদ্যোগ।

নয়াদিল্লি: পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় সাম্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা। অভিনব উদ্যোগ পশ্চিম আফ্রিকার সেনেগলে। সমাজে লিঙ্গসাম্য প্রতিষ্ঠায় স্বামীদের জন্য বিশেষ স্কুল চালু হল সেখানে। সাংসারিক কাজকর্ম শুধু যে মেয়েদের দায়িত্ব নয়, সংসারের কাজ করলে যে পৌরুষ নষ্ট হয় না, সেই শিক্ষা দিতেই ওই স্কুল, যাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের সহযোগিতাও রয়েছে। (Senegal News)
সেনেগলের রাজধানী ডাকার ইমাম, ইব্রাহিম ডায়ান জানিয়েছেন, বাড়ির কাজে পুরুষদের যুক্ত করতেই এমন উদ্যোগ। তাঁর কথায়, “পয়গম্বর নিজে বলে দিয়েছেন, স্ত্রী এবং সন্তানকে সাহায্য করেন না যে পুরুষ, তিনি কখনও ভাল মুসলিম হতে পারেন না।” ইব্রাহিম জানিয়েছেন, স্ত্রীকে সংসারের কাজে সাহায্য করার পাশাপাশি, সন্তানকে স্নান করানোর দায়িত্বও তাঁর। (School For Husbands)
হাতে গোনা কিছু পুরুষকেই এখনও পর্যন্ত রাজি করানো গিয়েছে ওই স্কুলে যেতে। ইব্রাহিম ওই স্কুলই শিক্ষা নিতে যান। রাষ্ট্রপুঞ্জের এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ‘স্বাস্থ্যকর পৌরুষ’ আসলে কী, সেব্যাপারে সকলকে অবহিত করাই লক্ষ্য তাঁদের। স্বাস্থ্য থেকে সমাজ ব্যবস্থা সবক্ষেত্রেই নারী-পুরুষের সমানাধিকার, সমান যোগদানের কথা বোঝানো হচ্ছে। সংখ্যায় কম হলেও, যাঁরা স্কুলে আসছেন, তাঁরা বাকিদের এব্যাপারে সচেতন করতে পারবেন, সমাজে পরিবর্তন আনতে পারবেন বলে আশাবাদী দেশের সমাজ ও মানবাধিকার কর্মীরা।
সংবাদ সংস্থা AP-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইব্রাহিম বলেন, “মহিলারা আমার বক্তৃতা পছন্দ করেন। অনেকে জানিয়েছেন, স্কুলে আসার পর তাঁদের স্বামীর আচরমে পরিবর্তন এসেছে।” স্কুলে কী কী শেখানো হয়, তাও জানিয়েছেন ইব্রাহিম। তিনি জানিয়েছেন, লিঙ্গসাম্যের পাশাপাশি, গার্হস্থ্য হিংসা, HIV নিয়ে ছুঁৎমার্গ, বাড়ির পরিবর্তে হাসপাতালে সন্তান প্রসবের গুরুত্ব বোঝানো হয়। সংসারের কাজে আরও বেশি যুক্ত হতে উৎসাহিত করা হয় পুরুষদের।
এই উদ্যোগের প্রশংসা করছেন পুরুষরাও। হাবিব ডিয়ালো বলেন, “আমার পুত্রবধূ অন্তঃসত্ত্বা ছিল। আমিই হাসপাতালে পাঠালাম। চেলে প্রথমে ইতস্তত করছিল। খরচের কথা ভাবছিল। হাসপাতালের উপর ভরসাও করতে পারছিল না। আমি বোঝালাম, মা ও সন্তানের জন্য হাসপাতাল কতটা নিরাপদ। শেষে রাজি হল।”
আফ্রিকার অন্য দেশের মতো সেনেগলও মূলত গ্রাম নির্ভর দেশ। সেখানকার সমাজ বেশ রক্ষণশীল, পুরুষই পরিবারের হর্তাকর্তা। অন্য সবকিছুর মতো নিজের শরীর নিয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষমতাও নেই নারীদের। মাতৃত্বকালীন ছুটি বা বিশ্রাম সম্পর্কে তেমন সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। ফলে প্রসূতি এবং শিশুমৃত্যু ঘটে চলেছে। ২০২৩ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি ১ লক্ষের মধ্যে ২৩৭ জন প্রসূতির মৃত্যু হয় সেখানে। প্রতি ১০০০ শিশুর মধ্যে জন্মের পর প্রথম মাসেই ২১ সদ্যোজাত মারা যায়। এতেই রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে ‘স্বামীদের স্কুল’ খোলার পদক্ষেপ গৃহীত হয়। প্রতি ১ লক্ষে আপাতত প্রসূতি মৃত্যু ৭০ এবং প্রতি হাজারে শিশুমৃত্যু ১২-তে নামিয়ে আনাি লক্ষ্য। পুরুষদের ‘সুশিক্ষিত’ করতে পারলেই লক্ষ্যে পৌঁছনো সম্ভব বলে মত সেনেগলে ওই প্রকল্পের আহ্বায়ক এল হদজ মালিকের।






















