ABP Exclusive: অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তার মন-বদলের নেপথ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
পার্টির রাজ্য সম্পাদকের মেয়ে। তবুও প্রেসিডেন্সির ছাত্রভোটে জয়ের আবির মেখেছেন সাধারণ এসএফআই কর্মীদের সঙ্গে।
কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: সিপিএম তখন ক্ষমতায়। অনিল বিশ্বাস সেই ক্ষমতার প্রাণকেন্দ্র। তখনও মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে বোঝা যেত না, তাঁর বাবা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। এতটাই বিনয়ী, মুখচোরা এবং অন্তর্মুখী ছিলেন অজন্তা।
পার্টির রাজ্য সম্পাদকের মেয়ে। তবুও প্রেসিডেন্সির ছাত্রভোটে জয়ের আবির মেখেছেন সাধারণ এসএফআই কর্মীদের সঙ্গে। অধ্যাপনা শুরু করেও নিজের অঞ্চলে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে কখনও দেওয়াল লিখেছেন, কখনও সভায় হাজির থেকেছেন।
এহেন একনিষ্ঠ আচমকা কলম ধরলেন তৃণমূলের মুখপত্রে। বঙ্গ রাজনীতিতে নারীর ভূমিকায়, অজন্তার কলম লিখছে বাসন্তীদেবী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। চারিদিকে হৈ চৈ। সিপিএমের অন্দরে পোস্টমর্টেম। চোরা হাসি তৃণমূলের গলায়। কিন্তু কী এমন হল? আদ্যন্ত 'বামপন্থী' অজন্তা কলম ধরলেন তৃণমূলের মুখপত্রের জন্য?
অজন্তার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, বিষয়টি মোটেই আচমকা নয়। ধীরে ধীরে মন বদল হয়েছে অনিল বিশ্বাসের আদরের 'মউ'-এর। যে পরিবর্তনের নেপথ্যচারিণী স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! ঘনিষ্ঠ মহলে অজন্তা বলছেন, কিছুদিন আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ফোন তাঁর জীবনের ভাবনা বদলে দিয়েছে। তখন কোভিড আক্রান্ত ছিলেন অজন্তা। পরিবারের আরও একজন আক্রান্ত। তাঁর মা অসুস্থ। তখন ফোন করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের খবর নিয়েছেন। চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। যে কোনও অসুবিধায় নির্দ্বিধায় যোগাযোগ করতে বলেছেন। সঙ্কটকালে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের এই ভূমিকায় তখন আপ্লুত রবীন্দ্রভারতীর ইতিহাসের অধ্যাপক অজন্তা। কদিন আগে ঘনিষ্ঠ মহলে অজন্তা সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, "মুখ্যমন্ত্রীর দরদের কণ্ঠস্বর ঠিক যেন মায়ের মতো।"
একটা সময় প্রয়াত সিপিএম রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাস, রাজ্যের যে বিরোধী নেত্রীকে তুলোধোনা করতেন, তিনিই আজ অজন্তার 'নয়নের মণি'! তারপর থেকেই ঘটল একের পর এক ঘটনা। তৃণমূল সূত্রের দাবি, একদিন জাগো বাংলার দফতরেও হাজির হয়েছিলেন অজন্তা। বাংলার কংগ্রেস নিয়ে যাঁর গবেষণা, তাঁর কাছে প্রস্তাব গিয়েছিল প্রবন্ধ লেখার। রাত জেগে দরদী অজন্তা লিখেছেন নারীশক্তিদের কথা। অনিবার্যভাবে অনিল কন্যার কলম লিখেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আখ্যান।
যে মেয়ের 'বকুনির ভয়ে' একসময় লুকিয়ে নস্যি নিতেন অনিল বিশ্বাস, আশ্চর্যের বিষয়, তাঁর গোপনীয়তা টেরই পেল না আলিমুদ্দিন!