Mamata on Corona Vaccine: ‘ভোটে আমাদের বিরুদ্ধে যা খরচ করেছে, তা দিয়ে সকলের ভ্যাকিসন হয়ে যেত‘, কেন্দ্রকে তোপ মমতার
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্ট্যাচু, সংসদ, প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি-বিমানে ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে...‘
কলকাতা: ৩০ হাজার কোটি খরচ করলেই, দেশের মানুষকে নিখরচায় কোভিড ভ্যাকিসন দিতে পারত মোদি সরকার। তা না করে, স্ট্যাচু, সংসদ, প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি-বিমান ইত্যাদিতে ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে কেন্দ্র। অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর প্রথমবার বিধানসভায় বক্তব্য রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি ভ্যাকসিন নিয়ে কেন্দ্রকে উদ্দেশে তোপ দাগেন। বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে পাইপ দিয়ে যেন টাকার স্রোত বওয়ানো হয়েছে। এই টাকায় ভারতের সবাইকে নিখরচায় ভ্যাকসিন দেওয়া যেত।’
তিনি যোগ করেন, ‘সকলকে ভ্যাকসিন দিলে খরচ হবে ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো। কেন্দ্রের কাছে এই টাকা কিছুই নয়। স্ট্যাচু, সংসদ, প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি-বিমান ইত্যাদিতে ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে কেন্দ্র। অথচ, প্রাধান্য হওয়া উচিত ছিল সকলের জন্য টিকা। যেটা করা হয়নি।‘
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা ফেব্রুয়ারি মাসে লিখেছিলাম, টাকার দরকার হলে আমরা দেব। পশ্চিমবঙ্গ সরকার গরিব হতে পারে। কিন্তু জনগণের স্বার্থে কাজ করতে সবকিছু দিয়ে দিতে পারে। এটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চেতনা এবং কর্তব্য। এটা মাথায় রাখতে হবে, অক্সিজেন-ভ্যাকসিন আমাদের হাতে নেই। কেন্দ্রর হাতে রয়েছে। আমি ভ্যাকসিন চেয়ে চিঠি লিখেছিলাম। আজ পর্যন্ত উত্তর পাইনি।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, কী অপরাধ করেছে বাংলা? কেন বাংলার সঙ্গে এই বিমাতৃসূলভ আচরণ? সরকার শপথ নেওয়ার ২৪-ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় টিম পাঠিয়ে দিয়েছে। হুঙ্কার দিয়ে চিঠি দিয়েছে। কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না মানুষের এই জয়টা। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য়ের জবাব দিয়েছে বিজেপি। রাষ্ট্রপতি ভবন, সংসদ ভবন এসব গণতন্ত্রের প্রতীক। তিনি বলেন, সংসদটা কোনও পরিবারের জন্য তৈরি হয়নি। পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের একটা প্রতীক প্রয়োজন হয়। এই কারণে রাষ্ট্রপতি ভবন, রাজভবন রেখে দেওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিন নিয়ে রাজ্যের ভূমিকা কী? কেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভ্যাকসনি বৈঠক দু’বার এড়িয়ে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী? প্রশ্ন তোলেন শমীক ভট্টচার্য।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার, মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ নিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ভ্যাকসিন নিয়ে চিঠি লেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সংক্রমণ রুখতে গেলে বিনামূল্যে ভ্যাকসিনেশনে জোর দিতে হবে। সেজন্য ভ্যাকসিনের জোগান বাড়াতে হবে।
এর আগে সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে চেয়ে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেকথা মনে করিয়ে ৫ মে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সবাইকে যাতে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া যায়, সে জন্য ডোজ কিনতে চেয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আপনাকে চিঠি দিয়েছিলাম। এখনও তার জবাব আসেনি। এই মুহূর্তে হাসপাতালে শয্যা, অক্সিজেন, ওষুধ এবং ভ্যাকসিনের ঘাটতি ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে। সেজন্য ফের চিঠি লিখছি।