একের পর এক দুর্যোগ, সাগরে যেতে না পারায় বাজারে দেখা নেই ইলিশের
বর্ষার মরসুমে সবজির বাজারেও আগুন দাম। মাথায় হাত মধ্যবিত্তের।
কলকাতা: শহরের বাজারে এখনও সেভাবে ইলিশের দেখা নেই। মত্স্যজীবীরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য এখনও দলে দলে সাগরে যেতে পারেননি। তাই জোগান কম। যেটুকু ইলিশ বাজারে আছে, তার দামও চড়া। বর্ষার মরসুমে সবজির বাজারেও আগুন দাম। মাথায় হাত মধ্যবিত্তের।
গৌর ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, মানুষ ছাড়া সব কিছুরই দাম বেড়েছে। সবজি থেকে মাছ - সবকিছুইর বাজার আগুন। রসনা তৃপ্তি দূরের কথা পেট ভরাতে গিয়ে পকেট ফাঁকা।
বর্ষা এসে গেল অথচ রূপোলি শস্যের দেখা নেই! খিচুড়ির সঙ্গে ইলিশ মাছ ভাজা দিয়ে রসনাতৃপ্তির সুযোগ এখনও সেভাবে হল কই?
পাইকারি হোক বা খুচরো, কোনও বাজারেই এবছর সেভাবে ইলিশের জোগান নেই। ফলে অল্প যা কিছু আসছে, তার দাম বেশ চড়া। কোলে মার্কেটের ইলিশ বিক্রেতা ব্রজগোপাল ভৌমিক জানিয়েছেন, ইলিশ আসছে কই? দিঘা, ডায়মন্ড হারবারের কিছু পুরনো ইলিশ ৩-৪ দিন আগে এসেছিল, সেগুলো জামাইষষ্ঠীতে বিক্রি হয়েছে।
কেন জোগান কম? মাছ ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রতি বছরই মাছের প্রজননের জন্য ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ইলিশ ধরা বন্ধ থাকে। এবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য অনেক ট্রলারই বেরোয়নি। তাই সেভাবে ইলিশ ওঠেনি।
মানিকতলা বাজারে রবিবার ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭০০ টাকা কেজি দরে। ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬০০ টাকায়। বারোশো টাকায় বিক্রি হয়েছে ১ কেজি ওজনের ইলিশ।
ইলিশের দাম চড়া, তাই ফাঁকা ব্যাগ নিয়ে অনেকসময় ফিরছেন ক্রেতারা। এখন পদ্মার ইলিশ আসা বন্ধ। দিঘা ও ডায়মন্ড হারবার থেকে যে সব ট্রলার সাগরে যায়, তাদের অধিকাংশই এখনও বেরোইনি। ফলে ভরসা মায়ানমারের ইলিশ।
ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে খবর, আগে বছরে ৩৪ হাজার টন ইলিশ উঠত। গত বছর ১৩ হাজার টন ইলিশ এসেছিল। এ বছর এখনও পর্যন্ত অনেক কম ট্রলার বেরিয়েছে।
ইলিশের মতো সবজির বাজারও আগুন। রবিবার মানিকতলা খুচরো বাজারে। ঢেঁড়শ বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা কেজি দরে। বেগুন ৬০ টাকা কেজি। ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে পটল। টম্যাটো ৪০ টাকা কেজি। গড়ে প্রায় সব সবজিরই দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা করে বেড়েছে। ইলিশ থেকে বেগুন, সবেরই আগুন দাম। কবে দাম কমবে? ফাঁকা নয়, ভর্তি থলি নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন, সেই আশায় দিন গুনছেন ক্রেতারা।