'স্ক্রুটিনির সময় মুকুল রায়ের নাম বাদ দেওয়া হোক' বিজেপির দাবি খারিজ বিধানসভার
স্ক্রুটিনির পর পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির প্রার্থী তালিকায় নাম ছিল মুকুল রায়ের।
কলকাতা: বিজেপির দাবি খারিজ বিধানসভার। স্ক্রুটিনির পর পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির প্রার্থী তালিকায় নাম ছিল মুকুল রায়ের। ২০ সদস্যের কমিটির প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। স্ক্রুটিনির সময় মুকুল রায়ের নাম বাদ দেওয়া হোক। আজ বিজেপির তরফ থেকে এই অভিযোগ করা হয়। বিজেপির দাবি খারিজ করে দেয় বিধানসভা।
১১ জুন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মুকুল আমাদের পুরনো পরিবারের ছেলে। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরল। মুকুল রায় বিজেপির পার্টি মেম্বার। পিএসি-বিতর্কে মুকুল রায়ের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে এই মন্তব্যই করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উপস্থিতিতে ১১ জুন তৃণমূলে যোগ দেন মুকুল রায়।
সংসদীয় ও পরিষদীয় রাজনীতির রেওয়াজ হল, সবসময় বিরোধী দলের বিধায়ককেই পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। এবার মুকুল রায়কে PAC-র চেয়ারম্যান করা হতে পারে বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
PAC-র মোট সদস্য সংখ্যা ২০। এর মধ্যে ১৩ জন তৃণমূল বিধায়কের নাম জমা পড়েছে। বিজেপির তরফে জমা দেওয়া হয়েছে ৬ জনের নাম। মনোনয়ন জমা দিয়েছেন মুকুল রায়ও। এখানেই বিতর্কের সূত্রপাত। খাতায় কলমে বিজেপির বিধায়ক হলেও মুকুল রায় এখন তৃণমূলে। এই প্রেক্ষাপটে মুকুল রায়ের মনোনয়ন যাতে গ্রহণ না করা হয়, সেই দাবি জানায় বিজেপি।
বৃহস্পতিবার বিধানসভার সচিবকে চিঠি দিয়ে তারা দাবি করে, মুকুল রায় তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি না বিজেপির, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির সদস্য হতে গেলে তৃণমূল বা বিজেপি কাউকে মুকুল রায়ের নাম প্রস্তাব করতে হবে। কিন্তু, বিজেপি মুকুল রায়ের রায় প্রস্তাব করেনি।
যদিও, বিজেপির এই দাবি খারিজ হয়ে গেছে। স্ক্রুটিনির পর বিধানসভা থেকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির ২০ জনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে মুকুল রায়ের নামও রয়েছে। এদিন এনিয়ে মুখ খোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, মুকুল রায় বিজেপির পার্টি মেম্বার। বিধানসভায় যে কেউ পিএসি-র চেয়ারম্যান পদে সমর্থন করতে পারে। মুকুল রায় বিজেপির পার্টি মেম্বার, পাহাড়ে বিনয় তামাঙ্গরা সমর্থন করেছেন। আমরাও মুকুলকে সমর্থন করব।
রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের দাবি, নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে পিএসি-র রদের জন্য ছলনা করছেন। কিন্তু, যে বিজেপি তৃণমূলের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, তাদের উদ্দেশে নানা মহলে প্রশ্ন, প্রকাশ্যে অমিত শাহের সভামঞ্চে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শিশির অধিকারীর...
সাংসদ পদ খারিজের দাবি যখন তৃণমূল তুলছে, তখন বিজেপি কেন শিশিরের থেকে নিজেদের দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করছে? এটা কেমন নীতি? এর আগে এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, তাঁরা কোথাও দলে যোগ দিয়েছেন বলে আমার তো জানা নেই। কেউ কাউকে কোনও বিষয়ে সমর্থন করতেই পারেন। কিন্তু তাঁরা আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন, আমাদের মঞ্চে ভাষণ দিয়েছেন, এমন আমার জানা নেই। যদি করে থাকেন, তা হলে যাঁদের কাছে তার তথ্যপ্রমাণ আছে, তাঁরা উপযুক্ত জায়গায় জানান।
সব মিলিয়ে পিএসির চেয়ারম্যান ইস্যুতে মুখোমুখি সেই দু’জন, একসময় যাঁদের পাশে বসিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, চাণক্য বলে অভিহিত করেছিলেন! কিন্তু, ভোট যেতেই বদলে গেছে সমীকরণ। পিএসি নিয়ে এখন মুখোমুখি সংঘাতে সেই দুই চাণক্য।