৯ লক্ষ টাকার বিল মেটাতে পারেনি পরিবার, করোনা আক্রান্তের মৃত দেহ আটকে রাখার অভিযোগ হাসপাতালের বিরুদ্ধে
মঙ্গলবার সন্ধেয় এই খবর সম্প্রচারিত হয় এবিপি আনন্দে। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর রোগীর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় ডেথ সার্টিফিকেট। মকুব করা হয় বকেয়া বিলের সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা।
দুর্গাপুর: প্রিয়জনকে হারিয়ে শোকে পাথর। মৃত্যুর পরও চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার রোগীর পরিবার। করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে হারতে হয়েছে রোগীর। এদিকে হাসপাতালেও জমেছে বিলের পাহাড়। এই অবস্থায়, চিকিৎসার বিল মেটাতে না পারায়, করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ আটকে রাখার অভিযোগ উঠল, পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
মৃতের পরিবারের বক্তব্য, গত ১২ মে দুর্গাপুরের দ্য নেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বাঁকুড়ার সোনামুখীর বাসিন্দা বছর ৭০-এর করোনা আক্রান্ত উমারানী বারুইকে। সোমবার ভোরে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। তিন সপ্তাহে হাসপাতালে প্রায় ৯ লক্ষ টাকা বিল হয়।
পরিবারের অভিযোগ, সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা দেওয়ার পরও, ডেথ সার্টিফিকেট দিতে চায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃতার ছেলে তন্ময় বারুই জানিয়েছেন, '৯ লাখ বিল, আমাদের বলেছিল টাকা দিলে বডি রিলিজ করবে, পুলিশ, মহকুমা শাসককে জানিয়েছি। কালকে সকালে মারা গেছে, এখনও বডি হস্তান্তর করেনি।' যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের পাল্টা দাবি, ডেথ সার্টিফিকেট নিতে হাসপাতালেই আসেননি মৃতের পরিজনেরা।
দুর্গাপুর দ্য নেশন হাসপাতাল সুপার অভিষেক চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'সঙ্কটজনক ছিল, ৯ লক্ষ বিল, ২ লাখ টাকা মকুব করা হয়েছে, বাকি টাকা দেননি, বডি মর্গে রাখা, পরিবারের কেউ আসেনি, ডেথ সার্টিফকেট রেডি। দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক অর্ঘপ্রসূন কাজি জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়েছি, গুরুত্ব দিয়ে দেখার অনুরোধ করেছি, বডি আটকে রাখা যাবে না।'
মঙ্গলবার সন্ধেয় এই খবর সম্প্রচারিত হয় এবিপি আনন্দে। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর রোগীর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় ডেথ সার্টিফিকেট। মকুব করা হয় বকেয়া বিলের সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা। মৃতার ছেলে তন্ময় বারুই বলেছেন, সংবাদমাধ্যম যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে, সেজন্য কৃতজ্ঞ, হাসপাতাল টাকা মকুব করেছে।
করোনাকালে একাধিক অমানবিক ছবি প্রকাশ্যে এসেছে এর আগেও। মঙ্গলবার অতিরিক্ত বিল এবং রোগীর পরিবারের সঙ্গে দুব্যবহার করার অভিযোগে শিলিগুড়ির ৭টি হাসপাতালকে শোকজও করা হয়েছে।