'অনুপ্রবেশকারীদের জন্য কি রেড কার্পেট বিছিয়ে দেওয়া হবে?' রোহিঙ্গাদের নিয়ে কড়া পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের
রোহিঙ্গাদের শরণার্থী ঘোষণা করেনি। তাদের শরণার্থী হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়নি। তাই তাদের রাখতেই হবে, কী বাধ্যবাধকতা আছে? প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের

নয়াদিল্লি: রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে হওয়া একটি মামলায় কড়া পর্যবেক্ষণ শোনাল শীর্ষ আদালত। কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থীর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলে একটি মামলা হয়। সেখানে আবেদনকারী দাবি করে , দিল্লি পুলিশ এই বছরের মে মাসে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে আটক করে এবং তাদের বর্তমান অবস্থান অজানা। আবেদনে আদালতের কাছে এই ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার নির্দেশ চাওয়া হয় এবং তাদের আটক করে রাখার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এই আবেদন শুনেই অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে ক্ষুরধার ভাষায় পর্যবেক্ষণ জানায় দেশের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।
'ওদের জন্য কি রেড কার্পেট বিছিয়ে দেওয়া হবে ?'
আবেদনকারীর কাছে আদালতের চাঁচাছোলা প্রশ্ন, ওদের জন্য কি রেড কার্পেট বিছিয়ে দেওয়া হবে ? বিচারপতি বলেন, রোহিঙ্গারা এদেশে ঢুকেছে অবৈধপথে। তাদেরকে আদালত রক্ষাকবচ দেবে কি ? চোরাপথে ঢুকে রোহিঙ্গারা যদি এদেশে থেকে খাদ্য ও আশ্রয়ের দাবি করে, তাহলে কি তাদের সেটা দিতে হবে ? আদালত স্পষ্ট করে দেয়, ভারত সরকার রোহিঙ্গাদের শরণার্থী ঘোষণা করেনি। তাদের শরণার্থী হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়নি। তাই তাদের রাখতেই হবে, কী বাধ্যবাধকতা আছে? কেউ অবৈধভাবে ঢুকলে, তাকে এখানে রাখার কোনও বাধ্যবাধকতা আছে কি? আপনি কি চান আমরা তাদের জন্য লাল গালিচা বিছিয়ে দিই? প্রশ্ন রাখেন প্রধান বিচারপতি।
স্বীকৃত শরণার্থী এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর মধ্যে পার্থক্য
আবেদনকারীর আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি সূর্য কান্ত জানতে চান, "ভারত সরকার কি তাদের শরণার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে ? তিনি মনে করিয়ে দেন, শরণার্থী একটি সুনির্দিষ্ট আইনি শব্দ । শীর্ষ আদালত আইনত স্বীকৃত শরণার্থী এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট করে দিয়ে জানায় "যদি কোনও শরণার্থীর কোনও আইনি মর্যাদা না থাকে , যদি কেউ অবৈধভাবে প্রবেশ করে, তাহলে কি আমাদের সেই ব্যক্তিকে এখানে রাখার বাধ্যবাধকতা আছে?" সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে আইনি অবস্থান আরও স্পষ্ট করে দিল। আদালতের স্পষ্ট বক্তব্য, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও ব্যক্তিকে শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলে, এই ধরনের ব্যক্তিরা অনুপ্রবেশকারীই থেকে যায়।


















