২০১৭ সালে বাড়িতে খাইয়েছিলেন অমিত শাহকে, আজ আদিবাসী গীতা মাহালি পেলেন রাজ্য সরকারি চাকরি, কটাক্ষ বিজেপির
"ভালো তো, তাহলে অমিত শাহ যাদের যাদের বাড়িতে যাচ্ছেন, তাঁদের চাকরি দিক তৃণমূল...", কটাক্ষ বিজেপির
দার্জিলিং: ২০১৭ সালে বাড়িতে খাইয়েছিলেন তৎকালীন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে। আর আজ প্রায় সাড়ে তিন বছর পর চাকরি পেলেন রাজ্য সরকারের স্পেশাল হোমগার্ড পদে।
কাকতালীয়ভাবে, বর্তমান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বঙ্গ সফরের দিনেই। কাজে যোগ দিয়েই বিজেপিকে আক্রমণ করলেন নকশালবাড়ির আদিবাসী গীতা মাহালি।
বিধানসভা ভোটের আগে দলকে চাঙ্গা করতে বঙ্গ সফরে অমিত শাহ। রথ দেখার সঙ্গে কলা বেচতে জোর দিলেন জন সংযোগেও। যা করতে গিয়ে বাঁকুড়ার চতুর্ডিহি গ্রামে এক আদিবাসী পরিবারের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
যে ছবি মনে করিয়ে দিল সাড়ে তিন বছর আগের কথা। ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল। যে দিন উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে আরেক আদিবাসী পরিবার, রাজু ও গীতা মাহালির বাড়িতে গিয়েও মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন তৎকালীন বিজেপি সভাপতি।
ঘটনাচক্রে যেদিন বাঁকুড়ায় আদিবাসী পরিবারের বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করলেন অমিত শাহ, ওই দিনই রাজ্য সরকারের স্পেশাল হোমগার্ড পদের চাকরিতে যোগ দিলেন নকশালবাড়ির সেই গীতা মাহালি। যিনি একদিন ঠিক একইভাবে অমিত শাহকে রান্না করে খাইয়েছিলেন।
এদিন চাকরিতে যোগ দিয়েই বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন আদিবাসী মহিলা। বললেন, বিজেপি কিছু করেনি, তৃণমূল আমাদের দেখেছে, বাড়ি করে দিয়েছে, আলোর ব্যবস্থা, চাকরি দিয়েছে।
আদিবাসী গৃহবধূর চাকরি পাওয়া নিয়েও শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোড়। দার্জিলিং জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, বিজেপি এভাবেই মানুষকে ব্যবহার করে, তারপর পিছিয়ে ফেলে দেয়, কিন্তু মমতা দেখে, তিনি আবেদন করেছিলেন, সেই ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি গেরুয়া শিবিরও। দার্জিলিং জেলার বিজেপি সাধারণ সম্পাদক আনন্দ বর্মন বলেন, অমিত শাহ পরিবারে এসেছিলেন মধ্যাহ্নভোজন করতে, তাঁদের অভাব অভিযোগ শুনতে বাড়িতে যান, তাঁকে তো বিজেপি ঝাণ্ডা তুলে আসেননি। কিন্তু তৃণমূল রাজনীতি করছে, চাকরি দিয়েছে ভাল। তাহলে অমিত শাহ যাদের বাড়িতে যাচ্ছেন, তাঁদের চাকরি দিক, ভালো তো, যা করছে রাজনীতির উদ্দেশ্যে করছে।
তবে মাহালি পরিবারকে নিয়ে রাজনীতি এই প্রথম নয়। ২০১৭-র ২৫ এপ্রিল, রাজু ও গীতা মাহালির বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করেছিলেন অমিত শাহ। এক সপ্তাহ পরই আচমকা তৃণমূলে যোগ দেন ওই দম্পতি। এরপর আবার বিজেপির রামনবমীর মিছিলেও দেখা গিয়েছিল স্বামী-স্ত্রীকে।
সেই সময় আবার কোনও সাহায্য না পেয়ে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা। এরপরই রাজ্য সরকারের প্রকল্পে মাটির বাড়ি পাকা হয় মাহালি পরিবারের। এবার হোমগার্ডের চাকরিও পেলেন আদিবাসী গৃহবধূ।