২ করোনা-জয়ীর কিডনিতে বাঁচল একজোড়া প্রাণ, বিরল দৃষ্টান্ত রাজস্থানে
চিকিৎসকদের মতে, কোভিড কখনই অঙ্গদানের ক্ষেত্রে বাধা নয়। একবার রোগী এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হলেই, তিনি অঙ্গদান করতে পারেন
জয়পুর: করোনা মহামারীর এই বিষাদ ও অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়ের মধ্যে আশা ও জীবনের নতুন দিশা দেখাতে সাহায্য করলেন রাজস্থানের দুই করোনা-জয়ী। তাঁরা নিজেরা এই রোগ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাই নয়, পরে উভয় জনই নিজেদের একটি করে কিডনি দান করে আরও একজোড়া প্রাণ বাঁচানোর বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
৩০ বছরের দুর্গা দেবী বাইরওয়া ও ৪৪ বছরের মহম্মদ আরিফ-- দুজনই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। অনেক কষ্টে দুই কিডনি দাতা জোগাড়ও হয়েছিল। কিন্তু, বাধ সাধে করোনা। অস্ত্রোপচারের ঠিক আগের দিন পরীক্ষা করে দেখা যায় যে দাতা ও দাত্রী করোনায় আক্রান্ত।
দুজনের কাছে আশার আলো ক্রমশ ফিকে হতে থাকে। উভয়জনই সাহস হারিয়ে ফেলছিলেন। প্রায় চরম হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন। যেমন কোটার বাসিন্দা দুর্গাদেবী। সাধারণত, রক্তে ক্রিয়েটিনিনের স্বাভাবিক মাত্রা যেখানে থাকার কথা ডেসিলিটার প্রতি ০.৮৪-১.২১ মিলিগ্রাম, সেখানে তাঁর ছিল ১৭।
দুর্গাদেবীকে কিডনি দিতে রাজি হন দেওর ধান্নালাল বাইরওয়া। কিন্তু, অস্ত্রোপচারের আগের দিন তিনি কোভিড পজিটিভ হওয়ায় দুর্গাদেবী বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। তাঁর স্বামী রতনলাল জানান, ১৭ জুন জয়পুরে অস্ত্রোপচারের জন্য পৌঁছাই। কিন্তু, ভাইয়ের টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ফলে, আরও ১৪ দিন অপেক্ষা করতে হয়। অবশেষে ১৪ অগাস্ট অস্ত্রোপচার হয়।
পেশায় গাড়ি ব্যবসায়ী রতন জানান, তাঁর স্ত্রী এখন সুস্থ। ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা স্বাভাবিক। ভাইও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গিয়েছেন।
অন্যদিকে, সিকারে কিডনি দান করে স্বামী আরিফকে বাঁচালেন ৩৫ বছরের ফিরদৌস। কিন্তু, এক্ষেত্রেও, অস্ত্রোপচারের আগে, কোভিড পজিটিভ হন ফিরদৌস। ফলে, অস্ত্রোপচার আরও ২ মাস পিছিয়ে যায়। আরিফের ভাই জানান, দাদা-বৌদি দুজনই সুস্থ আছেন।
চিকিৎসকদের মতে, কোভিড কখনই অঙ্গদানের ক্ষেত্রে বাধা নয়। একবার রোগী এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হলেই, তিনি অঙ্গদান করতে পারেন।