দক্ষিণ চিন সমুদ্রে চিনের দখলদারি মানা হবে না, সুর চড়াল আমেরিকা
দক্ষিণ চিন সমুদ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে চিনের ঠান্ডা লড়াই ক্রমশঃ উত্তপ্ত হচ্ছে...
ওয়াশিংটন: ‘বেজিং যদি ভেবে থাকে যে তারা দক্ষিণ চিন সমুদ্রের একচ্ছত্র সম্রাট, তবে তারা খুব ভুল করছে। আমেরিকা তো এটা মানবেই না, উপরন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অন্যান্য বন্ধু রাষ্ট্রগুলির সার্বভৌমত্ব জলপথে ক্ষুন্ন হলেও আমরা চুপ করে থাকব না।’ চিনকে এ ভাবেই হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইকেল আর পম্পেও। সমর্থন করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। দক্ষিণ চিন সমুদ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে চিনের ঠান্ডা লড়াই ক্রমশঃ উত্তপ্ত হচ্ছে। সমুদ্রপথ এবং হংকংয়ে ব্যবসায়িক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কিছুদিন ধরেই বাকযুদ্ধ চলছে চিন, আমেরিকার। ১৯৪৭ সালে তৈরি চিনা কার্টোগ্রাফিক ইনস্ক্রিপশনের ‘নাইন ড্যাশড লাইন’ অনুসারেই দক্ষিণ চিন সাগরের ৯০ শতাংশ নিজের দখলে রাখতে চায় চিন। কিন্তু পম্পেও জানাচ্ছেন, ১৯৮২ সালের ল অফ সি কনভেনশনের সংশোধনী অনুসারে ২০১৬ সালেই সমুদ্র নিয়ন্ত্রণের আগের অধিকার খুইয়েছে চিন। তাই গায়ের জোরে সমুদ্র দখলে রাখা চলবে না। ১৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ দক্ষিণ চিন সাগর মালবাহী জাহাজ চলাচল এবং পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বছরে এখান দিয়ে তিন ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য যাতায়াত করে। প্রতিবেশী দেশগুলির যথেষ্ট আপত্তি সত্ত্বেও এবং তাদের সামরিক দুর্বলতাকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে চিন এই সাগরের প্রায় ৯০ শতাংশ নিজেদের কব্জায় রেখেছে বলে অভিযোগ। আর তাই নিয়েই দিনকয়েক আগে ইউএসএস নিমিৎস এবং ইউএসএস রোনাল্ড রেগন যুদ্ধবিমান পরিবাহী জাহাজদুটি আমেরিকা জলে ভাসানোর পর পরই সামরিক মহড়া শুরু করে চিন বার্তা দেয় যে, এই জলপথের তারাই মালিক। আবার করোনা মহামারী চিনে শুরু হলেও আমেরিকা তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ট্রাম্প বারবার চিনকেই দায়ী করেছেন। সমুদ্র ঘেঁষা দেশগুলির সঙ্গে চিনের সম্পর্ক ভালো নয়। যেমন চিন সম্প্রতি পারাসিল দ্বীপ সংলগ্ন এলাকায়ও মহড়া দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। অথচ এই দ্বীপ নিজেদের বলে দাবি করে আসছে ভিয়েতনামও। ভিয়েতনাম তো বটেই, বেজিংয়ের ‘আগ্রাসী’ মানসিকতার সমালোচনা করেছে মালয়েশিয়া, ব্রুনেই, ফিলিপিন্সের মতো দেশগুলিও। এই দেশগুলিকে নিজের পক্ষে টানতে চাইছে আমেরিকা।
তাছাড়া গালোয়ানে চিনের কার্যকলাপেরও তীব্র সমালোচনা করেছে আমেরিকা। আবার দিনকয়েক আগে নিউ ইয়র্কে টাইমস স্কোয়্যারে বয়কট-চিন শীর্ষক যে বিক্ষোভ প্রদর্শন হয় তাতে প্রবাসী ভায়তীয়রা তো বটেই তাইওয়ানি, তিব্বতীরাও যোগ দেন। তাঁরাও তিব্বতের সার্বভৌমত্ব দাবি করেন, উইঘুর প্রদেশে মুসলিমদের দাবিয়ে রাখার প্রতিবাদ জানান, হংকংয়ের ব্যাপারে চিনের আগ্রাসী মনোভাবের সমালোচনা করেন।