Donald Trump Victory: দীপাবলিতেই ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট, ট্রাম্পের জয়ে কি অস্বস্তি বাড়ল বাংলাদেশের ইউনূস সরকারের?
US-Bangladesh Relations: সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশে ক্ষমতার রদবদল ঘটেছে। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনূসের হাতে।
ওয়াশিংটন: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রত্যাবর্তন ঘটতে চলেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। চার বছরের ব্যবধানে ট্রাম্পের এই জয়কে এক সন্ধিক্ষণ বলে গন্য করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। শুধুমাত্র আমেরিকার দেশীয় রাজনীতির জন্যই নয়, আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতিতেও ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের প্রভাব পড়তে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। একদিকে, রাশিয়া বনাম ইউক্রেন যুদ্ধ, উত্তপ্ত পশ্চিম এশিয়া যেমন রয়েছে, তেমনই ভারতীয় উপমহাদেশের জন্যও আমেরিকার এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ট্রাম্পের। নির্বাচনী প্রচারেও প্রবাসী ভারতীয়দের মনজয়ে বিশেষ সচেষ্ট ছিলেন তিনি। কিন্তু হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের জন্য অস্বস্তির কারণ হতে পারে। (Donald Trump Victory)
সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশে ক্ষমতার রদবদল ঘটেছে। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনূসের হাতে। কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলের পর বাংলাদেশে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপর হামলার যে খবর উঠে আসছে, তা নিয়ে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খোলেন ট্রাম্প। দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। ট্রাম্প লেখেন, 'বাংলাদেশে যে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যেভাবে হিন্দু, খ্রিস্টান এবং অন্য সংখ্যালঘুরা হিংসার শিকার হচ্ছেন, তাঁদের উপর হামলা হচ্ছে, লুঠপাট চলছে, তার তীব্র নিন্দা করছি আমি। আমি থাকলে এমনটা হতে দিতাম না। কমলা (হ্যারিস) এবং জো (বাইডেন) আমেরিকা এবং পৃথিবীর অন্যত্র বসবাসকারী হিন্দুদের অবজ্ঞা করেছেন। আমরা আমেরিকায় বসবাসকারী হিন্দুদের কট্টরবাদী, ধর্মবিরোধী বামপন্থার হাত থেকে রক্ষা করব। আমার সরকার ভারত এবং বন্ধু নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও মজবুত জায়গায় নিয়ে যাবে'। (US-Bangladesh Relations)
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা নিয়ে দিল্লির তরফেও উদ্বেগ জানানো হয়েছে। তাই ট্রাম্পের জমানায় আমেরিকার সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আরও উন্নতি ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে যেমন, তেমনই বাংলাদেশের প্রতি ট্রাম্প সরকারের আচরণ কড়া হতে পারে বলে মন কূটনীতিকদের একাংশের। তাঁদের মতে, শুধুমাত্র প্রবাসী হিন্দুদের মনজয় করতে ওই মন্তব্য করেননি ট্রাম্প। সম্প্রতি ইউনূস আমেরিকা সফরে গেলে, বাইডেন সরকার তাঁকে অভ্যর্থনা জানায়। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন তাঁকে সম্মান জানান, হাসিনাকে উৎখাত করা আন্দোলনে অনুমোদন জানান।। আমেরিকা সফরে জর্জ সোরোস এবং আলেকজান্ডার সোরোসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন ইউনূস। কিন্তু রিপাবলিকান শিবিরের কারও সঙ্গে দেখা করেননি তিনি। তাই বাংলাদেশে ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ট্রাম্পের আচরণ সহজ হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
I strongly condemn the barbaric violence against Hindus, Christians, and other minorities who are getting attacked and looted by mobs in Bangladesh, which remains in a total state of chaos.
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) October 31, 2024
It would have never happened on my watch. Kamala and Joe have ignored Hindus across the…
ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলি রিয়াজও সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে এমনই সম্ভাবনার কথা জানান। তাঁর মতে, ট্রাম্পের জয় মনোবল বাড়বে হাসিনার দল আওয়ামি লিগের। বাংলাদেশে রাজনৈতিক জমি ধরে রাখতে সচেষ্ট হবে তারা। আর হাসিনা যেহেতু ভারতের আশ্রয়েই রয়েছেন, তাই ট্রাম্পের সমর্থন তাঁর দিকে থাকবে বলে মত কূটনীতিকদের। হাসিনা যেখানে বরাবর ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলেছেন, ইউনূস সরকার সেই পথে হাঁটেনি। বরং হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া থেকে আরও একাধিক বিষয়ে দিল্লির প্রতি বৈরিতা প্রকাশ করেছে তাঁর সরকার। তাই ভারতকে চটিয়ে ট্রাম্প বাংলাদেশের সঙ্গে সখ্য গড়তে যাবেন না বলে মনে করা হচ্ছে। ক্লিন্টনদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্কও ইউনূসের মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। ক্লিন্টন ফাউন্ডেশনে অতীতে মোটা টাকা অনুদান দিয়েছেন ইউনূস।
President of Bangladesh Awami League Sheikh Hasina congratulates Donald J. Trump on his election as the 47th President of the United States of America.
— Awami League (@albd1971) November 6, 2024
-------
The President of the Bangladesh Awami League, (Prime Minister) #SheikhHasina, has congratulated Donald J. Trump on his… pic.twitter.com/5F1PeD9oFB
তবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেই আন্দোলন থেকে উদ্ভুত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবেন, এমনটা ভাবা ভুল বলে মত কূটনীতিকদের অনেকের। তাঁদের মতে, আদর্শগত অবস্থান যাই হোক না কেন, আমেরিকার গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির সদস্য এবং পৃথিবীর সর্বশক্তিধর রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাবধানী অবস্থানই নেবেন ট্রাম্প। রিপাবলিকানদের অনেকের সঙ্গেই সুসম্পর্ক রয়েছে ইউনূসের। তাই ভারসাম্য বজায় রেখেই ট্রাম্প চলবেন বলে মনে করছেন কূটনীতিকদের অনেকে। এদিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল সামনে আসার পর ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ইউনূস। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ বজায় থাকে যাতে, তা নিয়ে আশাও প্রকাশ করেছেন। আবার দলের লেটারহেটে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানান হাসিনাও।