US Strategic Posture Commission: আমেরিকা বনাম চিন ও রাশিয়া, ‘বসে না থেকে শান দিন পরমাণু অস্ত্রে’, এল ‘মহাযুদ্ধে’র সতর্কবার্তা
US vs China and Russia: মার্কিন কংগ্রেসের দুই পক্ষের সদস্যদের নিয়ে গঠিত Strategic Posture Commission. সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে আমেরিকার সরকারকে সতর্ক করল তারা।
নয়াদিল্লি: গত একবছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। তার মধ্যেই আবার যুদ্ধ বেধেছে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের মধ্যে। সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত না হলেও, দুই যুদ্ধেই আমেরিকার ভূমিকা গুরুত্ব পাচ্ছে। তবে আগামী দিনে সরাসরি আমেরিকার সঙ্গে চিন এবং রাশিয়ার যুদ্ধ বাধতে পারে বলে এবার সতর্ক করল মার্কিন কংগ্রেসের Strategic Posture Commission.
মার্কিন কংগ্রেসের দুই পক্ষের সদস্যদের নিয়ে গঠিত Strategic Posture Commission. সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে আমেরিকার সরকারকে সতর্ক করল তারা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাইওয়ানকে নিয়ে চিনের সঙ্গে টানাপোড়েন চলছে এক দিকে। অন্য দিকে আবার, ইউক্রেন নিয়ে সংঘাত চলছে রাশিয়ার সঙ্গে। আগামী দিনে একই সময়ে দুই দেশের সঙ্গে যুদ্ধ বাধতে পারে আমেরিকার। (US vs China and Russia)
পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য এখনব থেকেই দেশের সামরিক বাহিনীকে প্রস্তুতি সেরে রাখতে হবে, উপমহাদেশীয় দেশগুলির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে হবে এবং পারমাণবিক শক্তির আধুনিকীকরণ করতে হবে বলে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন কমিশনের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমান আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতি যে পর্যায়ে রয়েছে, তাকে ঠান্ডাযুদ্ধের সময়কালের চেয়েও বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। (Global Power Struggle)
মার্কিন কংগ্রেসের Strategic Posture Commission-এ ডেমোক্র্যাটসদের তরফে ছয় এবং রিপাবলিকানদের তরফে ছয় সদস্য রয়েছেন। বিপদ এড়াতে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে বলে একযোগে দাবি তুলেছেন তাঁরা। সমসাময়িক ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এমন রিপোর্ট প্রকাশ করে মার্কিন কংগ্রেসের Strategic Posture Commission। এর আগে, ২০০৯ সালে এমন একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল। এবার ১৪ বছর পর ফের রিপোর্ট প্রকাশ করা হল।
মার্কিন কংগ্রেসের Strategic Posture Commission-এর চেয়ারপার্সন ম্যাডেলিন ক্রিডন এবং ভাইস চেয়ারপার্সন জন কাইল লিখেছেন, ‘বর্তমানে একটি নয়, পরমাণু শক্তিধর দুই শত্রুপক্ষ রয়েছে আমেরিকার। আর ওই দুই দেশই আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির মানচিত্র বদলে দেওয়ার স্বপ্ন দেখছে, প্রয়োজনে পেশিশক্তি প্রয়োগ করতেও রাজি তারা, যে পরিস্থিতির জন্য এই মুহূর্তে আমেরিকা প্রস্তুত নয়’। পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের সম্ভাবনা ক্ষীণ হলেও, যুদ্ধের সম্ভাবনা যে বেড়ে দিয়েছে, এবং আমেরিকার যথেষ্ট বিপদ রয়েছে, তা তুলে ধরা হয়েছে রিপোর্টে।
সাংবাদি বৈঠকেও একই উদ্বেগ প্রকাশ করেন কাইল। তিনি জানান, এখনই সক্রিয় হয়ে ওঠা উচিত প্রেসিডেন্ট এবং কংগ্রেসের। বিপদ কত বড়, তা বোঝাতে হবে দেশের সাধারণ মানুষকে। সেই মতো সামরিক খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। যদি তা সম্ভব হয়, তবেই চিন এবং রাশিয়ার মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে আমেরিকা।
সামরিক শক্তির নিরিখে চিন এবং রাশিয়া যে সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছে, তা-ও তুলে ধরা হয়েছে রিপোর্টে। পেন্টাগনের একটি রিপোর্ট তুলে ধরে বলা হয়েছে, চিন এবং রাশিয়া, দুই দেশের সামরিক শক্তি দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০৩৫ নাগাদ শুধু চিনের কাছেই ১৫০০ পরমাণুশক্তি সম্পন্ন ওয়ারহেড থাকবে বলে জানানো হয়েছে। বায়ুসেনার হাতে আধুনিক অস্ত্র তুলে দিতে এবং উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে দুই দেশই কোনও ক্ষেত্রে আপস করছে না বলে উঠে এসেছে রিপোর্টে।
গত বছর এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও। রাশিয়ার থেকেও চিন এই মুহূর্তে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। যুদ্ধ হোক বা ঠান্ডা যুদ্ধ, আমেরিকা কোনওটিই চায় না বলে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ভাষণে মন্তব্য করেন তিনি।