Gita Quotes: আসক্তি ত্যাগ করে কর্ম করা কি সত্যিই সম্ভব? তাহলে কীভাবে?
Bhagavad Gita Quotes : প্রতিটি অধ্যায় জীবনের এক-একটি পরিস্থিতিতে সঠিক মার্গ দর্শন করায়। কারণ গীতা শ্রীকৃষ্ণের মুখ থেকেই বের হয়েছে।
গীতার (Bhagvad Gita) রহস্য ভেদ করা বড়ই কঠিন। বলা হয় গীতার মহিমা শাস্ত্রের অধিক। বেদ ব্যাসের কথায়, গীতা শ্রবণ, কীর্তন, পাঠ করতে হবে। গীতাকে ধারণ করতে হবে। তাহলে অন্য শাস্ত্রপাঠের (religion) কী প্রয়োজন ? কারণ গীতা স্বয়ং পদ্মনাভ নারায়ণের মুখনিসৃত। গীতাকে হিন্দু ধর্মে (Hindu) এতটাই পরিত্র মানা হয় যে, এই গ্রন্থকে বলা হয় ভগবানের শ্বাস। গীতাতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণই (Lord Krishna) বলেছেন, যিনি গীতা আত্মস্থ করতে পারেন, যিনি ভগবানের গীতারূপ আদেশ পালন করেন, তাঁর মুক্তি অনিবার্য। গীতার প্রতিটি অধ্যায় জীবনের এক-একটি পরিস্থিতিতে সঠিক মার্গ দর্শন করায়। কারণ গীতা শ্রীকৃষ্ণের মুখ থেকেই বের হয়েছে।
শ্রীমদ্ভগবদগীতার দ্বিতীয় অধ্যায় সাংখ্য যোগে অর্জুন তাঁর শোক নিবৃত্তির উপায় জানতে চান শ্রীকৃষ্ণের কাছে। এখানে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছেন, কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন । অর্থাৎ, যার অর্থ, তোমার কর্মেই অধিকার, তার ফলে নয়। তাই তুমি কর্মফলের হেতু হয়ো না আবার কর্মত্যাগেও যেন তোমার প্রবৃত্তি না হয়। সঙ্গে ভগবান বোঝাতে চেয়েছেন, কর্ম না করাতেও যেন আসক্তি না হয়। বিহিত কর্মত্যাগ করাকে ন্যায়সঙ্গত বলা হয় না। অর্থাৎ কর্মের ত্যাগ করা ঠিক নয়। তাহলে কর্ম কোন পথে করা দরকার, তা বলা আছে পরবর্তী শ্লোকে (৪৮)।
যোগস্থঃ কুরু কর্মাণি সঙ্গং ত্যক্ত্বা ধনঞ্জয়।
সিদ্ধ্যসিদ্ধ্যোঃ সমো ভূত্বা সমত্বং যোগ উচ্যতে ৷৷
যার অর্থ : হে ধনঞ্জয় ! তুমি আসক্তি ত্যাগ করে এবং সিদ্ধি-অসিদ্ধিতে সমবুদ্ধিসম্পন্ন থেকে যোগস্থ হয়ে কর্তব্য-কর্ম করো। এই সমত্বকেই যোগ বলা হয় ৷৷
কর্মযোগের আচরণের প্রক্রিয়া জানিয়েছেন ভগবান। কর্মযোগের সাধক যখন কর্ম ও তার ফলে আসক্তি ত্যাগ করেন, তখন তাঁর মধ্যে থেকে রাগ বিদ্বেষ দূর হয়। তিনি সিদ্ধি - অসিদ্ধিতে সম থাকেন। অর্থাৎ ভগবান এখানে আসক্তি ত্যাগ করতে বলেছেন। সিদ্ধি - অসিদ্ধিতে সম হয়ে তবেই কর্ম করার পরামর্শ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের পরামর্শ, কোনও কাজ করার সময় কোনও পদার্থ বা কর্ম বা প্রাণীতে বিষম ভাব রাখা যাবে না। যোগ এখানে সমত্বেরই নাম।
আগের শ্লোকেই শ্রীকৃষ্ণ বলেন, কর্মফল কী হবে, কীভাবে তিনি তা লাভ করবেন সেই ভাবনা পরিত্যাগ করতে হবে। কর্মফল কার কপালে কেমন করে জুটবে, তার বিধান করেন ঈশ্বর। মানুষ তা কোনওভাবেই ঠিক করতে পারে না। তাই সেই চিন্তা দূরে রেখে কর্মে মনোনিবেশ করাই শ্রেয়।
( তথ্যসূত্র : শ্রীমদভগবদ্ গীতা, (তত্ত্ববিবেচনী), গীতা প্রেস, গোরক্ষপুর )
আরও পড়ুন :