Mahakaleshwar Jyotirlinga: পৃথিবী ছিন্ন করে মহাকাল রূপে আবির্ভূত হন ভোলেনাথ ! গায়ে কাঁটা দেবে মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের কিংবদন্তি
Mythology : কিংবদন্তি অনুসারে, অবন্তী নামে একটি হাসিখুশি শহর ছিল। যা ছিল ভগবান শিবের খুব প্রিয়
কলকাতা : হিন্দু ধর্মে ১২ টি জ্যোতির্লিঙ্গের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। প্রতিটি জ্যোতির্লিঙ্গের পেছনে নানা রকমের পৌরাণিক কাহিনি রয়েছে। যার বিশেষ স্থান রয়েছে শাস্ত্রে। ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে মহাকালেশ্বর মন্দিরের বিশেষ স্থান আছে। এই জ্যোতির্লিঙ্গ মধ্যপ্রদেশের উজ্জৈনে অবস্থিত। উজ্জৈনের ভগবান মহাকালেশ্বরের ভুবনজোড়া নাম। কথিত আছে, এখানে যাঁরা আসেন তাঁদের ঝুলি কখনো খালি থাকে না। আসুন জেনে নিই, এই শিবধামে মহাকাল কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন ?
কিংবদন্তি অনুসারে, অবন্তী নামে একটি হাসিখুশি শহর ছিল। যা ছিল ভগবান শিবের খুব প্রিয়। এই শহরে বেদ প্রিয় নামে এক পণ্ডিত ব্রাহ্মণ ছিলেন। যিনি অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং শিবের পরম ভক্ত ছিলেন। প্রতিদিন পার্থিব শিবলিঙ্গ বানিয়ে শিবের পূজা করতেন। একই সময়ে রত্নমাল পর্বতে বসবাসকারী দূষণ নামক এক অসুরও ব্রহ্মার কাছ থেকে বর পেয়েছিলেন।
এই আশীর্বাদের বলে তিনি ধর্মপ্রাণ লোকদের উপর আক্রমণ শুরু করেন। এই সময় উজ্জৈনের ব্রাহ্মণদের আক্রমণের পরিকল্পনা করেন তিনি। সেই লক্ষ্যে প্রথমে অবন্তী নগরের ব্রাহ্মণদের নিজের কর্মকাণ্ড দিয়ে বিরক্ত করতে থাকেন। ব্রাহ্মণদের আচার-অনুষ্ঠান করতে নিষেধ করেন। কিন্তু, ব্রাহ্মণরা কেউ তাঁর কথায় কান দেননি। তাই রাক্ষস প্রতিদিন তাঁদের কষ্ট দিতে শুরু করেন। এতে বিরক্ত হয়ে ব্রাহ্মণরা শিব শঙ্করের কাছে তাঁদের রক্ষার জন্য প্রার্থনা করা শুরু করেন।
ভোলেনাথ প্রথমে অত্যাচার থেকে নগরবাসীকে বাঁচাতে অসুরকে সতর্ক করেন। কিন্তু, তাতে অসুরের উপর কোনও প্রভাব পড়েনি। তিনি শহর আক্রমণ করেন। তাতে ভোলেনাথ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন। তিনি পৃথিবী ছিন্ন করে মহাকাল রূপে আবির্ভূত হন। শিব তাঁর গর্জন দিয়ে অসুরের বিনাশ করেন। এরপর ব্রাহ্মণরা এখানে বিরাজ করার জন্য মহাদেবের কাছে প্রার্থনা করেন। মনে করা হয় যে, ব্রাহ্মণদের অনুরোধে ভগবান শিব এখানে মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ রূপে বসবাস শুরু করেন।
প্রসঙ্গত, শ্রাবণ মাসে ভগবান শিবের বিশেষ পুজো করা হয়। এই মাসে ভগবান শিবের উপাসনার পাশাপাশি দানধ্যানকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। শাস্ত্রে বলা হয়েছে, শ্রাবণ মাসে পূজা-অর্চনা করার পাশাপাশি দান করলে সকল প্রকার দুঃখ-কষ্ট দূর হয়ে যায় এবং শীঘ্রই মনোবাসনা পূরণ হয়। জেনে নেওয়া যাক, শ্রাবণের সোমবারে কোন কোন জিনিস দান করা উচিত।
শ্রাবণের সোমবারে কোন কোন জিনিস দান করা উচিত-
- কালো তিল- শ্রাবণ মাসে ভগবান শিবের জলাভিষেকে কালো তিল ব্যবহার করা হয়। কালো তিল ভগবান শিব এবং ভগবান শনি উভয়ের কাছেই খুব প্রিয়। যাঁদের গ্রহ সংক্রান্ত কোনও দোষ আছে, তাঁদের শ্রাবণের সোম বা শনিবার কালো তিল দান করা উচিত। এই প্রতিকারে গ্রহের দোষ দূর হয়।
- নুন- বাস্তুশাস্ত্রে নুনের ব্যবস্থায় ঘরে ছড়িয়ে থাকা নেতিবাচক শক্তি দূর হয়। শিবপুরাণে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি শ্রাবণ মাসে লবণ দান করেন, তাঁর সমস্ত কষ্ট দূর হয়। এই প্রতিকার সুখ-সমৃদ্ধি বাড়ায়।
- চাল- শ্রাবণ মাসের সোমবার, গরিব-দুঃখিকে চাল দান করুন। চালের তৈরি ক্ষীরও দান করতে পারেন। এমনটা করলে জীবনে সাফল্য পাওয়া যায়।
- রুদ্রাক্ষ - এটি ভগবান শিবের একটি বিশেষ অলঙ্কার হিসেবে বিবেচিত হয়। শাস্ত্রে রুদ্রাক্ষকে ভগবান শিবের অঙ্গ হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। মনে করা হয় যে, রুদ্রাক্ষের উৎপত্তি শিবের অশ্রু থেকে। তাই যে ভক্ত শ্রাবণ মাসে রুদ্রাক্ষ দান করেন, তাঁর আয়ু বাড়ে এবং অকালমৃত্যুর ভয় দূর হয়।
- রুপো- যাঁদের ভাগ্যচক্রে কালসর্প দোষ রয়েছে, তাঁদের তা থেকে মুক্তি পেতে শ্রাবণ মাসে রুপো বা তা দিয়ে তৈরি জিনিস দান করা খুবই শুভ। এছাড়া সন্তান লাভের জন্যও শ্রাবণ মাসে রুপো দান করতে হবে।