Existence of God: ‘তিনি আছেন, সবকিছু পরিচালনা করছেন’, ঈশ্বরের অস্তিত্ব মেনে নিলেন হার্ভার্ডের বিজ্ঞানী
Science News: ডঃ উইলি সুন একজন জ্যোতির্পদার্থবিদ তথা এ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার।

নয়াদিল্লি: সৃ্ষ্টির সূচনা নিয়ে যেমন ভিন্নমত রয়েছে, তেমনই সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব নিয়েও নানা জনের নানা মত। বিজ্ঞানসম্মত কার্যকারণই ক্ষেত্রে স্বীকৃত হলেও, হার্ভার্ডের বিজ্ঞানী এবার ঈশ্বরের অস্তিত্বের পক্ষে সওয়াল করলেন। জানালেন, ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ আছে তাঁর কাছে। ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ হিসেবে গাণিতিক সূত্রও তুলে ধরলেন। (Existence of God)
ডঃ উইলি সুন একজন জ্যোতির্পদার্থবিদ তথা এ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার। হার্ভার্ড অ্যান্ড স্মিখসন সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সকে দীর্ঘ সময় কর্মরত ছিলেন তিনি। Tuckert Carlson Network-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঈশ্বরের অস্তিত্বের সপক্ষে নিজের মতামত তুলে ধরেন তিনি। বলেন, "আমাদের জীবনকে সর্বদা আলোকিত করে চলেছে কিছু শক্তি। ঈশ্বর আমাদের এই আলো দিয়েছেন, যথাসাধ্য সেই আলোকে অনুসরণ করতে পারি আমরা। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি একটু দুর্বল হলেই গ্রহের সৃষ্টি হতো না। আবার একটু বেশি হলে গ্রহ কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত হতো।" ব্রহ্মাণ্ডের সবকিছুতেই ঈশ্বরের হাত রয়েছে বলে মত তাঁর। (Science News)
উইলি জানান, ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে তাঁর যে তত্ত্ব, তার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে Fine Tuning Arguement. অর্থাৎ তিনি বিশ্বাস করেন, ব্রহ্মাণ্ডে ভৌত সমীকরণ প্রাণসৃষ্টির জন্য এতটাই নিখুঁত যে তা কোনও অপ্রত্যাশিত ভাবে ঘটে যাওয়া ঘটনা হতে পারে না। কেমব্রিজের গণিতবিদ পল ডিরাক প্রথম এই তত্ত্ব তুলে ধরেন। তাঁর মত ছিল, কিছু মহাসাজগিক ধ্রুবক এতটাই নিখুঁত, তা নেহাত কোনও আকস্মিক ঘটনা হতে পারে না।
১৯৬৩ সালে ডিরাক লেখেন, ‘প্রকৃতির মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে অন্যতম হল, মৌলিক ভৌত সমীকরণগুলিকে গাণিতিক সূত্রের নিরিখে অত্যন্ত সুন্দর ও বলিষ্ঠ ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা বোঝার জন্য গণিতের যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।। প্রকৃতির গঠন অত্যন্ত সুন্দর। এটা মানতেই হবে। কেউ বলতেই পারেন যে ঈশ্বর আসলে গণিতবিদ, অত্যধিক উন্নত গণিত প্রয়োগ করে ব্রহ্মাণ্ড তৈরি করেছেন তিনি’।
সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে বিজ্ঞানীদের কৌতূহল আজকের নয়। বিজ্ঞান ও ধর্মবিশ্বাসের মধ্যে কোনও যোগ না থাকলেও, ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিরহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে বার বার সৃষ্টিকর্তার ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এমনকি স্টিফেন হকিং পর্যন্ত সেই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। নিজের অসুস্থতা নিয়ে শেষ বই Brief Answwers to the Big Questions-তে হকিং লেখেন, 'আমার মতো প্রতিবন্ধীরা ঈশ্বরের অভিশাপের ফলে দুর্দশা ভোগ করছেন বলে বহু শতাব্দী পর্যন্ত বিশ্বাস করতেন মানুষজন। হতে পারে উপরের কাউকে আমি কষ্ট দিয়েছি। কিন্তু আমার মনে হয়, প্রকৃতির নিয়ম মেনেই প্রত্যেকটি বিষয়কে অন্য ভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। আমার মতো আপনি যদি বিজ্ঞানে বিশ্বাস করেন, কিছু নীতিনিয়ম সর্বদা মেনে চলি আমরা। এই নীতি-নিয়ম ঈশ্বরের বলা যেতে পারে, কিন্তু তা ঈশ্বরের সংজ্ঞা, তাঁর অস্তিত্বের প্রমাণ নয়'।
পরজন্ম নিয়ে হকিং লেখেন, 'আমাদের প্রত্যেকের নিজস্ব ভাবনা রয়েছে। আমার ভাবনা হল, ঈশ্বর বলে কিছু নেই। ব্রহ্মাণ্ড কেউ সৃষ্টি করেননি, কেউ আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেননি। আর তাই আমার গভীর বিশ্বাস, না স্বর্গ আছে, না আছে পরকাল'। অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের বক্তব্য ছিল, "ঈশ্বর শব্দটি আমার কাছে অর্থহীন, মানুষের দুর্বলতা প্রকাশের এক মাধ্যম মাত্র।" বাইবেল সম্পর্কে তাঁর মত ছিল, সেটি প্রাচীন কিংবদন্তিদের নিয়ে রচনা করা কাহিনি।






















