Marine Heat Wave: লাক্ষাদ্বীপে সমুদ্রে আশঙ্কার মেঘ! কোন বিপদের পদধ্বনি?
Lakshadweep Coral Bleaching:লাক্ষাদ্বীপ দ্বীপপুঞ্জের একাধিক দ্বীপ নিয়ে সমীক্ষা করা হয়েছে। সেখানকার সমুদ্রের একটি তথ্যে ঘুম উড়েছে বিজ্ঞানীদের।
কলকাতা: জৈববৈচিত্র্যের দিক থেকে বিচার করলে ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এটি। এতদিন পর্যটনের দিক থেকে পছন্দের তালিকায় সেভাবে না থাকলেও ইদানিং বহু আলোচনা হয়েছে এর পর্যটন-সম্ভাবনা নিয়ে। মলদ্বীপের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপড়েনের কারণেই এমনটা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎই সেই লাক্ষ্মদ্বীপ নিয়ে উদ্বেগের কথা জানাচ্ছেন পরিবেশবিদেরা।
IANS-এর রিপোর্ট অনুযায়ী ICAR- সেন্ট্রাল মেরিন ফিশারিজ রিসার্চ ইন্সটিটিউট (ICAR-Central Marine Fisheries Research Institute) -এর গবেষকরা একটি উদ্বেগজনক বিষয় সামনে এনেছেন। লাক্ষ্মাদ্বীপের সমুদ্রে সামুদ্রিক হিটওয়েভের কারণে সেখানকার কোরাল রিফ বা প্রবাল প্রাচীরের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। যাকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় বলা হয় Coral Reef Bleaching
লাক্ষাদ্বীপে দ্বীপপুঞ্জের একাধিক দ্বীপ নিয়ে সমীক্ষা করা হয়েছে। সেখানেই দেখা গিয়েছে। হার্ড কোরাল প্রজাতির একটি বড় অংশ ভয়াবহ ব্লিচিং-এর শিকার। এর কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়েছে সামুদ্রিক তাপপ্রবাহ বা Marine Heatwave-কে। ২০২৩ এর অক্টোবরের শেষ থেকে ওখানকার সমুদ্রে এই সমস্যা দেখা গিয়েছে, তার জেরেই প্রবলহারে নষ্ট হচ্ছে সেখানকার প্রবাল প্রাচীর।
Marine Heatwave- এমন একটি আবহাওয়াজনিত পরিস্থিতি যার জন্য সেখানকার সমুদ্রের জলের উষ্ণতা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। পুরনো তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকায় সাধারণভাবে সমুদ্রের উষ্ণতা সম্পর্কে যা তথ্য মেলে তার 90th percentile -এরও বেশি বেড়েছে ওই উষ্ণতা।
তাপজনিত স্ট্রেস বা Heat Stress মাপা হয় ডিগ্রি হিটিং উইক ইন্ডিকেটর ( Degree Heating Week indicator) দিয়ে। লাক্ষ্মাদ্বীপের ক্ষেত্রে সেটি ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস-উইক-এরও বেশি বেড়েছে।
IANS-রিপোর্ট অনুযায়ী, ন্যাশনাল ওশিয়ানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA)-এর মতে এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণেই প্রবাল প্রাচীর নষ্ট (Coral Bleaching) হয়ে যাচ্ছে, যা ওই এলাকায় বৈচিত্রপূর্ণ সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
CMFRI-এর বরিষ্ঠ বৈজ্ঞানিক ড. কেআর শ্রীনাথ জানিয়েছেন, এমন হিট স্ট্রেস প্রবালের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এর ফলে প্রবাল বিশেষ অ্যালগি (symbiotic algae) হারিয়ে ফেলবে যার ফলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি না পেয়ে মারা যাবে ওই প্রবাল। তাঁর আশঙ্কা, যদি DHW ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস উইক পেরিয়ে যায় তাহলে তা ওই এলাকার বাস্তুতন্ত্রের জন্য বড়সড় বিপদ হতে পারে। সেক্ষেত্রে শুধু প্রবাল নয়। আরও একাধিক প্রজাতি বিপন্ন হতে পারে।
CMFRI-এর বৈজ্ঞানিক Dr. Shelton Pandua-জানিয়েছেন অতিরিক্ত Heat Atmospheric Transfer-এর পাশাপাশি সমুদ্রস্রোতের বদলের কারণেই এমন অস্বাভাবিক ভাবে সমুদ্রের তাপমাত্রা বেড়েছে।
গত বছরের অক্টোবরের শেষ থেকেই লাক্ষ্মাদ্বীপ সমুদ্রে এমন পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নাগাড়ে স্বাভাবিকের থেকে অন্তত ১ ডিগ্রি বেশি থাকছে তাপমাত্রা।
সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আরও অনেককিছু। লাক্ষ্মাদ্বীপের সমুদ্রের উপর নির্ভর করা বাসিন্দাদের জীবনযাত্রায় সমস্যা হতে পারে। এছাড়া, পর্যটন ও মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের উপরেও মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। যার ফলে এখানকার অর্থনীতির উপর আঘাত আসবে বলে মনে করছেন ড. কেআর শ্রীনাথ।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: জঙ্গিপুরের BJP প্রার্থীকে দেখে মারমুখী TMC নেতা! হিমসিম খেল পুলিশ