Painted Stork: ছোটবেলায় বাদামি, বড় হলেই গায়ের রং সাদা! চেনা পাখির অচেনা তথ্য়
Wildlife of India: মূলত মাছ এদের প্রধান খাদ্য। তাছাড়া, ব্যাং, শামুকও এরা খেয়ে থাকে। শিকার ধরার পদ্ধতিও বেশ লক্ষ্য করা মতো।
কলকাতা: জলা-জঙ্গলে, জঙ্গল ঘেরা জলাভূমিতে এদের প্রায়শই দেখা যায়। জলাভূমির ধারে ঝাঁক বেঁধে থাকে, বলা ভাল কলোনি করে বসবাস এদের। নাম পেইন্টেড স্টর্ক (Painted Stork). বাংলায় সাধারণভাবে একে সারস বলেই চিনি। এটি সারস প্রজাতিরই একটি পাখি। গ্রামীণ এলাকার নানা কোণে, ট্রেনে যেতে যেতে রেললাইনের পাশে ধানের ক্ষেত, জলাভূমিতেও এদের ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা মেলে।
পেইন্টেড স্টর্ক (Painted Stork) ভারতীয় উপমহাদেশের (Indian Sub continent) অতি পরিচিত পাখি। ক্রান্তীয় এলাকায় এর দেখা মেলে। ভারত, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার (South East Asia) বেশ কিছু এলাকায় সারস দেখা যায়। মূলত নীচু জলাভূমি এলাকার এই বাসিন্দা প্রাকৃতিক ভারসাম্যের অন্য়তম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। লম্বা এবং ছিপছিপে চেহারা হয় এই পাখির। লম্বায় ৯৫ থেকে ১০০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাধারণত সাদা রঙের হয়ে থাকে। তবে ডানা ও বুকের অংশের পালক কালো-সাদা বা ধূসর দাগ লক্ষ্য করা যায়। মাথায় তুলনায় কম পালক থাকে। এর ঠোঁটের আকৃতি দেখার মতো। বেশ লম্বা, হলদেটে রঙের হয়ে থাকে। শেষে একটু বাঁকানো হয়। পুরুষের তুলনায় স্ত্রী পেইন্টেড স্টর্ক সামান্য ছোট আকৃতির হয়ে থাকে।
বড় হলেই চেহারা বদল:
জন্মানোর সময় কিন্তু এদের গায়ের রং বাদামি হয়। তিন বছর বয়স হওয়ার পরে এদের গায়ে পরিপূর্ণ পালক তৈরি হয়। চার বছরের মাথায় সাবালক হয় একটি পেইন্টেড স্টর্ক (Painted Stork)
মাছ-বিলাসী:
মূলত মাছ এদের প্রধান খাদ্য। তাছাড়া, ব্যাং, শামুকও এরা খেয়ে থাকে। শিকার ধরার পদ্ধতিও বেশ লক্ষ্য করা মতো। জলের মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে দেয় এরা। ঠোঁট অল্প ফাঁক করা থাকে। সেই অবস্থায় মাথা নাড়িয়ে নাড়িয়ে শিকার ধরে এরা। মিষ্টি জলের জলাভূমি, পুকুর-বিল, জলে ঢাকা ধানক্ষেত- মূলত এসব জায়গাতেই মেলে এই পাখি। জলাভূমির পাশেই এরা বাসা তৈরি করে। সেখানেই বিশাল কলোনি তৈরি করে থাকে। অনেকসময় অন্য জাতের সারসের পাশেই এদের বাসস্থান দেখা যায়। ভাল শিকারি হওয়ার পাশাপাশি, অনেকসময় শিকারও হয়ে যায় এরা। মেছো বিড়াল, বন বিড়াল, চিতাবাঘ, শেয়াল-এমন প্রাণীদের শিকারের তালিকায় থাকে এই পাখি।
বর্ষার মরসুমের শেষে এদের মেটিং সিজন বা বংশবিস্তারের প্রক্রিয়া বা প্রজনন শুরু হয়। মেটিংয়ের পরে বাসা তৈরি হয়। সেখানে স্ত্রী পাখি একসঙ্গে ৩-৫টি ডিম পাড়ে। ২৭-৩২ দিনের মাথায় সেই ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। এই গোটা সময় এবং তারপর বাচ্চাদের দেখভালের পুরোটাই বাবা-মা মিলেই সারে। 'প্রোটেক্টেড' (Protected) তালিকায় রয়েছে এই প্রাণী।
আপাতভাবে বিপদ নেই। কিন্তু ক্রমশ বেড়ে চলা দূষণ পিছু ছাড়ছে না এদেরও। ক্রমশ কমে আসছে জলাভূমি, জলে দূষণ বাড়ছে, কৃষিকাজে রাসায়নিক সারের ব্যবহার সবই ধাক্কা দিচ্ছে এদেরও।
আরও পড়ুন: মাটি ছাড়তেই তীব্র বিস্ফোরণ, পুড়ে ছাই ২৫ হাজার কোটির স্বপ্ন, মাঝ আকাশে বিলীন SpaceX রকেট