Chandrayaan-3: বেতন পাননি দীর্ঘ ১৮ মাস, চন্দ্রযান ৩-র লঞ্চপ্যাড তৈরি করেও রাস্তায় ইডলি বেচছেন ইনি
ISRO: ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-র চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের লঞ্চপ্যাড তৈরিতে যুক্ত ছিলেন দীপককুমার উপরারিয়া।
রাঁচি: চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের (Chandrayaan-3) লঞ্চপ্যাড তৈরি করা ইঞ্জিনিয়াররা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বেতন পাননি বলে সামনে আসতেই শুরু হয়েছিল বিতর্ক। কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিরোধী দলগুলির মধ্যে শুরু হয়েছিল দড়ি টানাটানি। চন্দ্রযান- চাঁদের মাটি ছোঁয়ার পর সেই বিতর্ক থিতিয়ে গিয়েছিল। এবার ফের বিষয়টি নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হল। কারণ চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের লঞ্চপ্যাড তৈরি করা টেকনিশিয়ানকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ইডলি বিক্রি করতে দেখা গেল।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-র (ISRO) চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের লঞ্চপ্যাড তৈরিতে যুক্ত ছিলেন দীপককুমার উপরারিয়া (Deepak Kumar Uprariya)। হেভি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন লিমিটেড (HEC)-তে কর্মরত তিনি। সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের রাঁচির রাস্তায় তাঁকে ঠেলাগাড়িতে ইডলি বিক্রি করতে দেখা গিয়েছে। ধুরওয়া এলাকায় পুরনো বিধানসভা ভবনের ঠিক উল্টোদিকের রাস্তায় ইডলি বিক্রি করেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমে দীপক জানিয়েছেন, ভারত সরকারের ছত্রছায়ায় থাকা HEC দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে তাঁর বেতন বাকি রেখেছে। সংসার চালাতে না পেরে ইডলি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। দীর্ঘ দিন বেতন না পেয়ে ইডলির দোকান খুললেও, এখনও চাকরি ছাড়েননি দীপক। ISRO-র জন্য আরও একটি লঞ্চপ্যাড তৈরি করছে HEC. তাতেও দীপক যুক্ত রয়েছেন। দু'দিকই সামাল দিচ্ছেন তিনি। সকালে ইডলি বিক্রি করে, দুপুরে অফিস যান। সন্ধেয় আবার ঠেলা নিয়ে হাজির হন রাস্তায়।
Meet Deepak Kumar Uprariya who sells Tea & Idli in Ranchi. He is a Technician, who worked for building ISRO's Chandrayaan-3 launchpad. For the last 18 months, he has not received any salary.
— Cow Momma (@Cow__Momma) September 17, 2023
"When I thought I would die of hunger, I opened an Idli shop" (BBC Reports) pic.twitter.com/cHqytJvtfj
সংবাদমাধ্যমে দীপক বলেন, “প্রথম প্রথম ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে সংসার চালানোর চেষ্টা করেছিলাম। ঋণও নিয়েছিলেন ২ লক্ষ টাকার। টাকা ধার নিতে হয় আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকেও। সব মিলিয়ে চার লক্ষ টাকার দেনা হয়ে গিয়েছে মাথার উপর। কাউকে টাকা ফেরত দিতে পারিনি। তাই টাকা ধার দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকে। স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখেও সংসার চালাই কিছুদিন।”
দীপক আরও বলেন, "আমার দুই কন্যা রয়েছে। দু’জনই স্কুলে যায়। এবছর ওদের স্কুলের ফি-ও জমা দিতে পারিনি। রোজ স্কুল থেকে নোটিস পাঠাচ্ছে।" ঠেলাগাড়িতে দীপকের ইডলি বিক্রির ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের যন্ত্রাংশ তৈরিতে যুক্ত থাকার পরও দীপকের এই পরিস্থিতি কেন, উঠছে প্রশ্ন। এর আগে, ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন না পাওয়ার অভিযোগ খারিজ করেছিল বিজেপি। অনেকে কাঠগড়ায় তুলছেন তাদেরও।
আসলে মধ্যপ্রদেশের হারদা জেলার বাসিন্দা দীপক। ২০১২ সালে বেসরকারি সংস্থার কাজ ছেড়ে HEC-তে যোগদান করেন। ৮ হাজার টাকা বেতন পেতেন শুরুতে। পরে তা বেড়ে হয় ২৫ হাজার টাকা। HEC-তে কাজের সুযোগ পেয়ে জীবনে বড় কিছু করে দেখানোর স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছিলেন দীপক। কিন্তু বর্তমানে রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের দৌলতেই চাঁদের মাটি ছুঁতে পেরেছে ভারত। তার পর ISRO-র বিজ্ঞানী থেকে লঞ্চপ্যাড তৈরিতে যুক্ত থাকা ইঞ্জিনিয়ারদের অভিনন্দন জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু সেই সময়ও রাঁচিতে একটানা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছিলেন HEC-র কর্মীরা। দীর্ঘ ১৮ মাস বেতন পাননি হলে অভিযোগ সংস্থার ২৮০০ কর্মীর।