Ganguly Birthday Exclusive: করোনা আবহে সাদামাটা জন্মদিন, সেরা স্মৃতি কী, মেন্যুতে কী থাকছে, জানালেন সৌরভ
বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই ৪৯ বছর সম্পূর্ণ করলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়। জন্মদিনে কী পরিকল্পনা, মেন্যু ঠিক করছেন কে, এই দিনে সেরা স্মৃতি কী, এবিপি লাইভ-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সব প্রশ্নেই অকপট 'মহারাজ'।
কলকাতা: বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই ৪৯ বছর সম্পূর্ণ করলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়। প্রিয় দাদা-কে শুভেচ্ছাবার্তা জানাতে তৎপর ভক্তরা। সকাল থেকেই বেহালার বীরেন রায় রোডে তাঁর বাড়ির সামনে অনুরাগীদের ভিড় লেগে থাকে। যদিও করোনা পরিস্থিতিতে সেই ছবি কিছুটা বদলেছে। নিজের জন্মদিন সেভাবে উদযাপনও করছেন না জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট। জন্মদিনে কী পরিকল্পনা, মেন্যু ঠিক করছেন কে, এই দিনে সেরা স্মৃতি কী, এবিপি লাইভ-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সব প্রশ্নেই অকপট 'মহারাজ'।
প্রশ্ন: ক্রিকেট খেলার সময় আপনি বারবার বলতেন বয়সটা নেহাতই একটা সংখ্যা। বৃহস্পতিবার ৪৯ বছর পূর্ণ করলেন। কী মনে হচ্ছে, বয়স কি স্রেফ সংখ্যাই?
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়: হ্যাঁ, বয়স আর এক বছর বাড়ল শুধু, আর কী!
প্রশ্ন: প্রত্যেক বছর ৮ জুলাই দিনটি বিশেষভাবে পালন করা হয়। কলকাতায় থাকলে বাড়িতে খাওয়াদাওয়া হয়। ভক্তরা সারাদিন ধরে কেক, ফুল নিয়ে আসেন। এবার কীভাবে পালন করছেন দিনটি?
সৌরভ: এবার কোভিডের জন্য কোনও সেলিব্রেশন হচ্ছে না। বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কোনও উৎসব হচ্ছে না জন্মদিনে। বাড়িতেই থাকব। বুধবার অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পর থেকে পরিবারের সকলের সঙ্গেই দিনটি কাটাব।
প্রশ্ন: সম্প্রতি অসুস্থতা কাটিয়ে উঠলেন?
সৌরভ: (হাসি) অসুস্থতা এখন ঠিক হয়ে গিয়েছে। সারা জীবন তো আর কেউ অসুস্থ হয়ে থাকে না। কয়েকদিন অসুস্থ থাকে, তারপর সেরে ওঠে। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ এখন।
প্রশ্ন: খাওয়াদাওয়ার অনেকরকম নিয়ন্ত্রণ মেনে চলছেন এখন। জন্মদিনের খাওয়াদাওয়াও কি সেই নিয়ম মেনেই হবে?
সৌরভ: (হাসি) না, জন্মদিনে সব কিছুতে ছাড়। তবে জানি না বাড়িতে খাওয়াদাওয়ার কী আয়োজন হচ্ছে। বাড়ির সকলে মিলেই সেসব ঠিক করছে।
প্রশ্ন: সানা বড় হওয়ার পর এখন তো আপনার জন্মদিনের পরিকল্পনা সারতে মুখ্য ভূমিকা নেন। কতটা স্পেশ্যাল মেয়ের এই উদ্যোগ?
সৌরভ: হ্যাঁ, ও বরাবরই করে। আগেও করেছে। প্রত্যেক বছরই আমার জন্মদিন পালন করায় বড় ভূমিকা নেয় সানা। এবারও ও-ই সব করছে। তবে এটাই তো স্বাভাবিক। বাবা-মায়েদের জন্মদিন তো ছেলে-মেয়েরাই পালন করে। সব কিছুর আয়োজন করে। সানাও সেটাই করছে।
প্রশ্ন: জন্মদিনের রেজ়োলিউশনে বিশ্বাস করেন? কখনও এই দিনে কোনও সংকল্প করেছেন?
সৌরভ: না, আমার জীবনে প্রত্যেক দিনই অনেক রেজ়োলিউশন থাকে। সেরকম কিছু নয়।
প্রশ্ন: ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট। দিনভর ব্যস্ততা। নানারকম কর্মকাণ্ডে জড়িত। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আইপিএলের বাকি অংশ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের ব্যস্ততা। তার মধ্যে জন্মদিন। এই একটা দিনে কি বিরতি পড়বে কাজকর্মে?
সৌরভ: হ্যাঁ, জন্মদিনে ছুটি। এদিন আর কোনও কাজ করব না। ছুটি নিচ্ছি। শুক্রবার থেকে আবার কর্মব্যস্ততা।
প্রশ্ন: জন্মদিন মানেই আমরা উপহারের অপেক্ষা করে থাকি। প্রিয়জনেরা এই বিশেষ দিনে আমাদের নানা উপহার দিয়ে থাকেন। জন্মদিনে পাওয়া সেরা উপহার কোনটা?
সৌরভ: প্রচুর উপহার পেয়েছি জন্মদিনে। অত মনে নেই। তবে এবার এখনও কিছু পাইনি। সবে তো জন্মদিন পড়ল। দেখি কী পাই (হাসি)।
প্রশ্ন: এই বছরটা আপনার কাছে খুব তাৎপর্যপূর্ণ। লর্ডসে অভিষেক আর ঐতিহাসিক সেই সেঞ্চুরির ২৫ বছর সম্পূর্ণ হল। এবারের জন্মদিনটাও কি আপনার কাছে স্পেশ্যাল?
সৌরভ: বছরটা সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ। তবে জন্মদিনের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই। জন্মদিন হল জন্মদিন। খেলা হল খেলা। ২৫ বছর হয়ে গেল ভারতীয় দলের হয়ে আমার অভিষেকের। লর্ডস সেই সফরের একটা অংশ। তারপরেও এরকম আরও অংশ এসেছে। অনেক সুযোগ এসেছে। প্রত্যেক ঘটনার আলাদা আলাদা প্রাসঙ্গিকতা থাকে। এগুলি তো আর একটা ঘটনা নয়। আমার গোটা কেরিয়ারেরই একটা আলাদা প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে।
প্রশ্ন: জন্মদিনের সেরা স্মৃতি কী?
সৌরভ: সেরকম ব্যাপার নয়। প্রচুর স্মৃতি রয়েছে। আসলে বিভিন্ন বয়সে জন্মদিনের আলাদা আলাদা এক এক রকমের স্মৃতি থাকে। তবে সেরকম বিশেষ কিছু স্মৃতি নেই। আমি খুব সাধারণ মানুষ। সহজ, সরল জীবনযাত্রা। সেরকম বহির্মুখী নয় আমার জীবন। অনেক ভাল স্মৃতি রয়েছে। ইংল্যান্ডে অনেক জন্মদিন কেটেছে। যখন খেলতাম, বছরের এই সময়ে, অর্থাৎ জুলাই মাসে ভারতীয় দলের সঙ্গে ইংল্যান্ডে থেকেছি অনেকবার। সবকটাই স্পেশ্যাল। প্রত্যেক জন্মদিনেরই আলাদা আলাদা প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে।
প্রশ্ন: খেলা ছাড়ার পর নতুন এক ভূমিকায় আপনাকে দেখা যাচ্ছে। সেটা হল বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্তদের জন্য ত্রাণ পাঠাচ্ছেন। করোনা টিকাকরণের ব্যবস্থা করছেন। অনেক মানুষ সাহায্যপ্রার্থী হচ্ছেন। এটা নিয়ে কী ভাবেন?
সৌরভ: এরকম পরিস্থিতি তো কখনও আসেনি। আমি জীবনে কোনওদিন এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। মানুষের এত দুঃখ দুর্দশা কোনওদিন দেখিইনি। অতিমারি পরিস্থিতিতে নিজের সাধ্য মতো মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছি।