Ranji Trophy: জ্বর থাকলেও খেলবেন শাহবাজ, ওপেনিং জট কাটাতে নতুন মুখে ভরসা বাংলার
ABP Exclusive: গোটা মরসুমে ওপেনিং জুটি নিয়ে সমস্যায় পড়েছে বাংলা। ফাইনালে ফের হতে পারে বদল।

সন্দীপ সরকার, কলকাতা: তেত্রিশ বছর আগে সরাসরি রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) ফাইনালে অভিষেক ঘটিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)। সব কিছু ঠিকঠাক চললে এবারও ইডেনে (Eden Gardens) রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে অভিষেক ঘটতে চলেছে এক বাঙালি ক্রিকেটারের। বাংলা শিবিরের খবর, ওপেনিং সমস্যা কাটাতে ফাইনালে সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে খেলানো হতে পারে সুমন্ত গুপ্তকে। আর তা হলে, স্থানীয় ক্রিকেটে বড়িশার হয়ে খেলা ক্রিকেটারের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হবে।
গোটা মরসুমে ওপেনিং জুটি নিয়ে সমস্যায় পড়েছে বাংলা। অভিমন্যু ঈশ্বরনের (Abhimanyu Easwaran) সঙ্গে অনেককে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেউই ভরসা দিতে পারেননি। সেমিফাইনালে কর্ণ লালকে খেলানো হয়েছিল। কিন্তু বড় রান পাননি। ইডেনে সবুজ উইকেটে কাজি জুনেইদ সইফিকে খেলানো হবে কি না, তা নিয়েও আলোচনা চলছিল। কিন্তু বুধবার নেটে যেভাবে প্রায় প্রত্যেক ৫-৬ বল অন্তর স্লিপে খোঁচা দিলেন বা বোল্ড হলেন কাজি যে, ফাইনালে সুযোগ পাওয়ার দৌড়ে নেই বললেই চলে।
সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো রঞ্জি জয়ী অধিনায়কের মতে, ফাইনালে গেমচেঞ্জার হতে পারেন শাহবাজ আমেদ। যদিও ফাইনালের আগে আচমকাই উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল শাহবাজকে নিয়ে। তাঁকে সকালে নেটে দেখা যায়নি। বেশ কিছুটা পরে তিনি নেটে ঢোকেন। বেশিক্ষণ প্র্যাক্টিসও করেননি।
পরে বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি বললেন, 'শাহবাজের জ্বর এসেছিল। চিকিৎসক পরীক্ষা করেছেন। ওকে বিশ্রামে থাকতে বলা হয়েছিল। সেই কারণে প্র্যাক্টিসে খুব বেশি গা ঘামায়নি। তবে ও ফিট। ফাইনালে খেলবে।' বঙ্গ অধিনায়কের যে কথা স্বস্তি দিচ্ছে বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের।
২০১৯-২০ মরসুমে সৌরাষ্ট্রের কাছেই রঞ্জি ফাইনালে হারতে হয়েছিল বাংলাকে। এবার কি তাহলে বদলার ম্যাচ? মনোজ অবশ্য ব্যাপারটাকে সেভাবে দেখছেন না। বলছেন, 'আমরা এখন ভাল খেলছি। আর এসব ভেবে কেউ মাঠে নামে না। যারা সেই ফাইনালে খেলেছিল, তাদের মনে হয়তো প্রতিশোধ ব্যাপারটা থাকতে পারে। তবে নতুন ছেলেরা সেসব ভাবছে না।' আত্মবিশ্বাসী গলায় যোগ করলেন, 'আমাদের টপ অর্ডার ব্যাটিং ভাল হচ্ছে। অভিষেক পোড়েল নীচের দিকে ভাল ব্যাটিং করছে। পেসার অলরাউন্ডার আকাশ ঘটক সুযোগ পেলেই কাজে লাগিয়েছে। তবে ওপেনিং জুটিতে আরও বড় রান চাই। ৫০ নয়, আরও বড় পার্টনারশিপ গড়তে হবে।'
মনোজ এর আগে তিনটি রঞ্জি ফাইনালে খেলেছেন। প্রত্যেকবারই ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে। বলছেন, 'ঘরের মাঠে এই প্রথম রঞ্জি ফাইনাল খেলব। তাও অধিনায়ক হিসাবে। আমি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার দিনই দিদিকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বলে দিয়েছিলাম, খেলা চালিয়ে যাব। দিদি সম্মতি দিয়েছিলেন। তবে ভাবিনি অধিনায়ক হিসাবে ফাইনালে টস করতে নামব। অভিমন্যু না থাকায় নেতৃত্বের দায়িত্ব পেয়েছিলাম। আগেও ওকে সব সময় সমর্থন করতাম। এখন ও পাশে থাকছে।'
ফাইনালে নিজের কাছে কী প্রত্যাশা? মনোজ বলছেন, 'রঞ্জি ট্রফিটা জিততে চাই। আর সেই জয়ে অবদান রাখতে চাই। তাতে যদি ১৫০ বলে ৪০ রান হয়, তাও ঠিক আছে।' যোগ করলেন, 'বাংলাকে সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি জিতিয়েছি। এবার রঞ্জিটাও জিততে হবে। এত মানুষ সমর্থন করছেন। তাঁদের ট্রফিটা উপহার দিতে চাই। আগে বিপক্ষের টেলএন্ডারদের পার্টনারশিপ ভাঙতে আমাদের সমস্যা হতো। এবার সেই সমস্যাও কাটিয়ে উঠেছি।'
তবে ২ বছর আগের ফাইনালের পরাজয় যে এখনও যন্ত্রণা দেয় তাঁকেও, মনোজের কথায় ফুটে উঠল। বললেন, 'জয়দেব উনাদকট টেল এন্ডারকে নিয়ে শেষ উইকেটে প্রায় ৫০ রান যোগ করে দিয়েছিল। সেখানেই ম্যাচটা হাত থেকে বেরিয়ে যায়। অত অল্প রানে হারলে খারাপ তো লাগেই। তবে সেই আক্ষেপ মিটিয়ে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে এবার।'
আরও পড়ুন: ছদ্মবেশী পিচ! রঞ্জি ট্রফির ফাইনালের আগে ইডেনের বাইশ গজ নিয়ে রহস্য


















