এক্সপ্লোর
Advertisement
Bhuvneshwar Kumar Birthday: ভুবি হয়তো ক্রিকেটার হতেন না, হাত যদি না ধরতেন তিনি
ভাইয়ের পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার সফরে দিদি এতটাই জড়িয়ে পড়েছিলেন যে, রেখা হাজির হয়ে গিয়েছিলেন ভুবনেশ্বরের স্কুলেও। শিক্ষকদের কাছে আর্জি জানাতে। ভাইকে যাতে পড়াশোনার জন্য খুব বেশি চাপ না দেওয়া হয়। ভাই যেদিন ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে সুযোগ পেয়েছিলেন, রেখা পাড়ার সকলকে মিষ্টি কিনে খাইয়েছিলেন।
লক্ষ্ণৌ: বাবা কিরণ পাল সিংহ উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর। বদলির চাকরি। কখনও এই শহর, তো কখনও অন্যত্র। অথচ ক্রিকেট পাগল ছেলের চোখে স্বপ্ন ভারতীয় দলের হয়ে খেলার। মা ইন্দ্রেশ আবার ক্রিকেট কী, সেটাই ভাল করে বোঝেন না। ঘরকন্না সামলাতেই সারাদিন কেটে যায় তাঁর। সেই জগতে ব্যাট, বল, প্যাড, গ্লাভস, হেলমেট নিয়ে ভাবার সময় কোথায়!
খুদে ভুবনেশ্বর কুমারের কাছে মুশকিল আসান হয়ে হাজির হয়েছিলেন দিদি রেখা। ভাইয়ের ক্রিকেট স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে এগিয়ে এসেছিলেন তিনিই। কীভাবে? রেখাই ভাইকে নিয়ে, ভারি কিট ব্যাগ টানতে টানতে হাজির হয়ে যেতেন ক্রিকেট কোচিং সেন্টারে। বাড়ি থেকে ৭-৮ কিলোমিটার দূরে। সেখানেই শুরু হয় ১৩ বছরের ভুবনেশ্বরের ক্রিকেট সাধনা। কোচ বিপিন বৎস আর সঞ্জয় রস্তোগির তত্ত্বাবধানে। দিদির হাত ধরেই প্রথমবার ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন ভুবনেশ্বর।নতুন ক্রিকেট সরঞ্জাম চাই? সেখানেও ভরসা দিদিই। রেখাই ভাইকে নিয়ে যেতেন স্পোর্টস শপে। পছন্দের কিট কিনে দিতেন। ভাইয়ের স্বপ্ন যে তখন দিদির কাছেও সংকল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাইশ গজে ভুবনেশ্বরকে যে প্রতিষ্ঠিত হতেই হবে।
ভাইয়ের পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার সফরে দিদি রেখা এতটাই জড়িয়ে পড়েছিলেন যে, একবার তো হাজির হয়ে গিয়েছিলেন ভুবনেশ্বরের স্কুলে। যেখানে ভাই পড়াশোনা করতেন। শিক্ষকদের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন, ভাইকে পড়াশোনার জন্য যেন খুব বেশি চাপ না দেওয়া হয়। ভাই যেদিন ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে সুযোগ পেয়েছিলেন, রেখা পাড়ার সকলকে মিষ্টি কিনে খাইয়েছিলেন।
আর সেই দিদির বিয়েতেই কি না থাকতে পারেননি ভুবনেশ্বর! একটি সাক্ষাৎকারে রেখা জানিয়েছিলেন, ২০০৯ সালে যখন তাঁর বিয়ে হয়, ভুবনেশ্বর ম্যাচ খেলতে ব্যস্ত ছিলেন। রেখা বলেছিলেন, তাঁর বিয়ের সময় উত্তরপ্রদেশের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে ব্যস্ত ছিলেন ভুবি। বাগদান, বিয়ে কোনও অনুষ্ঠানেই থাকতে পারেননি। মন খারাপ হয়েছিল ভাই-বোনের। কিন্তু ক্রিকেটার হওয়ার ব্রত থেকে সরে আসেননি কেউই।
ভুবনেশ্বরের দিন কেটে যেত ক্রিকেট নিয়েই। নিজে খেলা শুরুর আগে ভারতের ম্যাচ থাকলেই টিভির সামনে বসে পড়তেন। প্রত্যেক ম্যাচের পরিসংখ্যান থাকত তাঁর ঠোঁটের ডগায়। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের কাছে ভারতের হারের পর আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি ভুবনেশ্বর। কেঁদে ফেলেন।
পাড়ায় ক্রিকেট খেলার সময় ছিলেন অলরাউন্ডার। তবে কোচিং অ্যাকাডেমিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁর দুদিকে বল সুইং করানোর দক্ষতা দেখে তাঁকে জোরে বোলার হওয়ার পরামর্শ দেন দুই কোচ বৎস ও রস্তোগি। প্রথমে জাতীয় স্তরে, পরে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও ভুবনেশ্বরের সুইং সামলাতে নাস্তনাবুদ হয়েছেন ব্যাটসম্যানেরা। ভারতের হয়ে ২১টি টেস্টে নিয়েছেন ৬৩ উইকেট। ১৩৪টি ওয়ান ডে খেলে নিয়েছেন ১৩২ উইকেট। দেশের হয়ে ৪৩টি টি-টোয়েন্টিতে ৪১ উইকেটও রয়েছে তাঁর সাফল্যের ঝুলিতে। আইপিএলে ১২১ ম্যাচে ১৩৬ উইকেটও নিয়েছেন ভুবনেশ্বর।
শুক্রবার ৩১ বছর পূর্ণ করলেন জাতীয় দলের ডানহাতি পেসার। সারাদিন ধরেই শুভেচ্ছাবার্তায় ভাসছেন তিনি। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ত্রয়োদশ আইপিএল খেলার সময় উরুতে চোট পেয়েছিলেন। আপাতত মাঠে ফেরার অপেক্ষায় ভুবনেশ্বর।
খেলার (Sports) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
ক্রিকেট
জেলার
জেলার
জেলার
Advertisement