ABP Exclusive: মাঠে আগ্রাসী, বাইরে মাটির মানুষ, বাঙালি ভক্তকে কাঁদতে দেখে কাছে টেনে নিলেন মার্তিনেজ়
Emiliano Martinez: তুমুল ব্যস্ততার মধ্যেও দুই বাঙালি ফুটবলপ্রেমীর সঙ্গে দেখা করলেন মেসির সতীর্থ।মার্তিনেজ়কে কাছ থেকে দেখে, কথা বলে অভিভূত রাইমা মুখোপাধ্যায় ও শুভায়ন চৌধুরী।
সন্দীপ সরকার, কলকাতা: কাতার বিশ্বকাপের (Qatar World Cup) ফাইনাল মনে আছে? ফরাসি ফুটবলারদের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে দুরমুশ করে দিয়েছিলেন তিনি। মনঃসংযোগ হারিয়ে টাইব্রেকারে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন কিংসলে কোম্যান ও চুয়ামেনি। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় লিওনেল মেসির (Lionel Messi) আর্জেন্তিনা (Argentina)।
বা তারও আগে কোপা আমেরিকা (Copa America)? ব্রাজিলের বিরুদ্ধে ফাইনালে দুর্ভেদ্য ছিলেন তিনি। তাঁর দাপটেই আর্জেন্তিনার জার্সিতে মেসির হাতে ওঠে প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফি।
আর্জেন্তিনাকে জোড়া ট্রফি দেওয়া গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ (Emiliano Martinez) এখন কলকাতায়। দুদিন ধরে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। মঙ্গলবার প্রথমে মিলনমেলা প্রাঙ্গনে, পরে মোহনবাগান মাঠে দুটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন দিবু মার্তিনেজ।
তবে তুমুল ব্যস্ততার মধ্যেও দুই বাঙালি ফুটবলপ্রেমীর সঙ্গে দেখা করলেন মেসির সতীর্থ। মার্তিনেজ়কে কাছ থেকে দেখে, কথা বলে অভিভূত রাইমা মুখোপাধ্যায় ও শুভায়ন চৌধুরী।
আইনজীবী রাইমার সঙ্গে ফুটবল মাঠের যোগ দীর্ঘদিনের। বাবা গৌতম মুখোপাধ্যায়ও ক্রীড়া প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত। রাইমা নিজে বঙ্গ ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা আইএফএ (IFA)-র গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। মার্তিনেজ়কে দেখার ঘোর কাটছে না। এবিপি লাইভকে বলছিলেন, 'মাঠে ভীষণ আগ্রাসী হিসাবেই দেখেছি ওঁকে। বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ম্যাচ হোক বা ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ফাইনাল, যুদ্ধংদেহী শরীরী ভাষা। বিনা যুদ্ধে যেন প্রতিপক্ষকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়বেন না। অথচ মাঠের বাইরে ব্যক্তি মার্তিনেজ়কে দেখে, কথা বলে চমকে উঠেছি।'
কেন? রাইমা বলছেন, 'একেবারে মাটির মানুষ। কলকাতায় বাইপাসের ধারে যে হোটেলে উনি উঠেছেন, সেখানে গিয়ে মার্তিনেজের সঙ্গে দেখা করে উপলব্ধি হয়েছে, এত বড় তারকা, কিন্তু কোনও অহং নেই। ভীষণ হাসিখুশি। আমি আর্জেন্তিনা ফুটবল দলের ভক্ত। ওঁকে বলি, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করার জন্য ধন্যবাদ। মার্তিনেজ় বলেন, ধন্যবাদ আপনাদেরও প্রাপ্য। নিঃশর্ত সমর্থনের জন্য। আমি আর্জেন্তিনার জার্সি নিয়ে গিয়েছিলাম। উনি অটোগ্রাফ করে দিলেন। ছবি তুললেন। এত মানুষের ভিড়। সকলেই দেখা করতে, ছবি তুলতে চান। সারাদিন ঠাসা কর্মসূচি। তার মাঝেও এতটুকু বিরক্তি নেই। হাসিমুখে সকলের আব্দার মেটাচ্ছেন।'
২০১১ সালে মেসি যখন কলকাতায় এসেছিলেন, রাইমা ক্লাস সিক্সের ছাত্রী। বলছিলেন, 'মেসির সঙ্গেও দেখা করেছিলাম। তবে অনেকটা ছোট ছিলাম। মার্তিনেজ়ের সঙ্গে সাক্ষাতের স্মৃতি আজীবন মনে থাকবে।'
হবু চিকিৎসক শুভায়ন চৌধুরীও উচ্ছ্বসিত প্রিয় নায়কের দেখা পেয়ে। আর্জেন্তিনা ফুটবল দল অন্ত প্রাণ। শুভায়নও বাইপাসের ধারে হোটেলে গিয়ে মার্তিনেজের সঙ্গে দেখা করেন। বলছিলেন, 'আমি ওঁকে সামনে থেকে দেখে ভীষণ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। কেঁদে ফেলি। মার্তিনেজ় এত ভাল মানুষ যে, দেখে কাছে ডেকে নিলেন। পাশে বসিয়ে গল্প করলেন। অটোগ্রাফ দিলেন জার্সিতে। বললেন, বিশ্বকাপটা সমর্থকদের জন্যই। স্প্যানিশ ভাষায় আমি জয়ধ্বনি দিই। বলি, ভামোস লা আলবিসেলেস্তে। মার্তিনেজ়ও বলেন, ভামোস আলবিসেলেস্তে...'
শুধু কোপা আমেরিকা বা বিশ্বকাপ নয়, কলকাতায় ভক্তদের মনও জিতে নিয়েছেন মেসির স্বপ্নপূরণের অন্যতম কারিগর।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন