Mohun Bagan SG: আইএসএলে একের পর এক রেকর্ড মোহনবাগানের, আগে কখনও কোনও দল যা পারেনি
ISL News: এ বারের লিগে ৫৬ পয়েন্ট অর্জন করে পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে রয়েছে সবুজ-মেরুন বাহিনী। আর কোনও আইএসএল মরশুমে ৫০ পয়েন্টের বেশি কোনও দল এর আগে অর্জন করতে পারেনি।

কলকাতা: খেলা মানেই পুরনো নজির ভাঙা ও নতুন নজির গড়া। ফুটবলও তার ব্যতিক্রম নয়, আইএসএল (ISL) তো নয়ই। ভারতের এক নম্বর ফুটবল লিগে প্রায় রোজই কিছু না কিছু নজির গড়া হয়েছে এবং অনেক নজির ভাঙাও হয়েছে। ইন্ডিয়ান সুপার লিগের এই মরশুমে এমন একাধিক ঘটনা ঘটেছে যা লিগের ইতিহাসে এই প্রথম বার ঘটেছে। এ রকম অনেকগুলি ঘটনাই ঘটিয়েছে সরাসরি সেমিফাইনালে ওঠা দুই দল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ও এফসি গোয়া। এ ছাড়াও সেরা ছয়ে থেকে প্লে অফে ওঠা দলগুলিও এমন একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছে, যা লিগের ১১ বছরের ইতিহাসে আগে কখনও ঘটেনি।
সবুজ-মেরুন নজির-বাগান!
প্রথমে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কথাতেই আসা যাক। এ বারের লিগে ৫৬ পয়েন্ট অর্জন করে পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে রয়েছে সবুজ-মেরুন বাহিনী। আর কোনও আইএসএল মরশুমে ৫০ পয়েন্টের বেশি কোনও দল এর আগে অর্জন করতে পারেনি। এই ব্যাপারে কলকাতার দলই প্রথম।
মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের ঝুলিতে এমন বেনজির ঘটনা আরও আছে। ২০২৫-এর ২১ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যে ছ’টি ম্যাচ খেলেছে গতবারের লিগ শিল্ড চ্যাম্পিয়নরা, তার একটিতেও কোনও গোল খায়নি। টানা ছ’টি ম্যাচে নিজেদের গোল অক্ষত রাখতে পেরেছে, যা আইএসএলের ইতিহাসে প্রথম।
এ বারের লিগ পর্বে তাদের ডিফেন্ডাররা ১৪টি গোল করেছেন। এর আগে আইএসএলের এক মরশুমে কোনও দলের ডিফেন্ডাররা দশের বেশি গোল করতে পারেননি। যা করে দেখালেন বাগান-বাহিনীর রক্ষণপ্রহরীরা। দলের অধিনায়ক ও ডিফেন্ডার শুভাশিস বোস এ বার একাই ৬টি গোল করেছেন। এর আগে লিগে কোনও ডিফেন্ডার পাঁচের বেশি গোল করতে পারেননি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মহমেডান এসসি-র বিরুদ্ধে কোনও গোল না খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ৫০তম আইএসএল ম্যাচে ক্লিন শিট রাখেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের গোলকিপার বিশাল কয়েথ। এই প্রথম আইএসএলে কোনও গোলকিপার এই মাইলফলক প্রতিষ্ঠা করলেন।
সাগরপাড়ের দুই দলের কীর্তি!
ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পরপর দু’দিনে, ৬ ও ৭ তারিখে, আইএসএলের দু’টি নতুন মাইলফলক প্রতিষ্ঠা করে আরব সাগরপাড়ের দুই দল মুম্বই সিটি এফসি ও এফসি গোয়া। ৬ ফেব্রুয়ারি এফসি গোয়া ২-১-এ ওডিশা এফসি-কে হারিয়ে ঘরের মাঠে ৫০ তম জয় অর্জন করে, যা লিগের ইতিহাসে প্রথম। এখন পর্যন্ত তাদের হোম-উইন-এর সংখ্যা ৫২। গোয়ার দলের এই কীর্তির পরের দিন মুম্বই সিটি এফসি-ও আর একটি নয়া কীর্তি স্থাপন করে নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে ২-০-য় হারিয়ে। সেটি ছিল ইন্ডিয়ান সুপার লিগে তাদের শততম জয়, যা আর কোনও দল এখনও অর্জন করে উঠতে পারেনি।
এ পর্যন্ত মুম্বইয়ের জয়ের সংখ্যা ১০১। তবে এই নজির ভাঙার দৌড়ে রয়েছে এফসি গোয়া। তারা এ পর্যন্ত ৯৮টি ম্যাচে জিতেছে। এই তালিকায় তিন নম্বরে থাকা বেঙ্গালুরু এফসি অবশ্য অনেক দূরে রয়েছে। তারা জিতেছে ৭৭টি ম্যাচ। পরের তিনটি স্থানে রয়েছে চেন্নাইন এফসি (৭১), কেরালা ব্লাস্টার্স (৬৯) ও মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (৬৮)।
আলাদিনের আশ্চর্য গোলমেশিন!
এ বার আসা যাক অন্যান্য ক্লাবের কথায়। সবার আগে যে ঘটনার কথা বলতেই হবে, তার নায়ক নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র মরক্কান ফরোয়ার্ড আলাদিন আজারেই। যিনি এ মরশুমে ২৩ গোল করে ইতিমধ্যেই এক নয়া নজির গড়ে ফেলেছেন। তিনিই প্রথম এক মরশুমে ২০-র বেশি গোল করেছেন। শুধু এতগুলি গোল করা নয়, গোল করে ও করিয়ে দলের ৩০টি গোলে অবদান রেখেছেন তিনি, যা আইএসএলের ইতিহাসে প্রথম। একই মরশুমে ২৫টির বেশি গোল অবদান এর আগে কেউ রাখতে পারেননি।
হ্যাটট্রিকের নায়ক যখন চল্লিশোর্ধ!
আইএসএলের নতুন নায়কের পাশাপাশি ভারতীয় ফুটবলে সর্বকালের অন্যতম সেরা নায়কের কথায় আসি। তিনি সুনীল ছেত্রী। যিনি এ বার এখন পর্যন্ত ১২টি গোল করে ভারতীয় ফুটবলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ স্কোরারের স্থান অর্জন করেছেন। গত ৭ ডিসেম্বর কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে গোলের হ্যাটট্রিক করে এক নয়া নজির গড়েন সুনীল। আইএসএলে ৪০ বছরের বেশি বয়সী ফুটবলারদের মধ্যে শুধু তিনিই হ্যাটট্রিক করেছেন। সেই ম্যাচের দিন তাঁর বয়স ছিল ৪০ বছর ১২৬ দিন।
বেঙ্গালুরুর বেনজির দূর্গরক্ষা
চলতি মরশুমে বেঙ্গালুরু এফসি প্রথম গোল খায় ৪৯৪ মিনিট খেলার পর, যা লিগের এক সর্বকালীন রেকর্ড। এর আগে কোনও দল মরশুমের শুরু থেকে আইএসএলে ৪০০ মিনিটের বেশি নিজেদের গোল অক্ষত রাখতে পারেনি। এই ব্যাপারে বেঙ্গালুরু এফসি-ই পথিকৃৎ।
আরও পড়ুন: চোটের জন্য কেরিয়ার শেষ হতে বসেছিল, অলৌকিকভাবে কেকেআরে সুযোগ পেয়ে কী বলছেন সাকারিয়া?
দুই তারকার নয়া নজির
সব শেষে দুই ব্যক্তিগত মাইলস্টোনের প্রসঙ্গে আসা যাক। চেন্নাইন এফসি-র স্কটিশ ফরোয়ার্ড কোনর শিল্ডস এ বারের লিগে মোট ৭৬টি গোলের সুযোগ তৈরি করেছেন, যা এই প্রথম। এর আগে একই মরশুমে ৭০-এর বেশি গোলের সুযোগ কেউ তৈরি করতে পারেননি। অপরজন এফসি গোয়ার গোলকিপার আলবিনো গোমস, যিনি এই মরশুমে যে চারবার পেনাল্টি কিকের মুখে দাঁড়িয়েছেন, প্রতিবারই তা সেভ করেছেন। এর আগে কোনও গোলকিপার এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পারেনি। (সৌ: আইএসএল মিডিয়া)
আরও পড়ুন: কেকেআরের শক্তি আরও বাড়ল, সোমবারই শহরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের দুই নায়ক
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
