শুক্রবার নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে ৫৮ ও ৬৬ মিনিটের মাথায় যথাক্রমে স্লোভেনিয়ান তারকা ফরোয়ার্ড লুকা মাজেন ও ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার ফিলিপ ম্রজলিয়াকের গোলে চলতি লিগের ষষ্ঠ জয় অর্জন করে দ্বিতীয় পাঞ্জাব এফসি। মহমেডানকে এ দিন দশ নম্বর ম্যাচে সপ্তম হারের মুখোমুখি হতে হয়। এই নিয়ে টানা ছ’টি ম্যাচে জয়হীন থাকল তারা, যার মধ্যে পাঁচটিতেই হার। এ দিন ১১টি গোলের সুযোগ তৈরি করেও তা থেকে কোনও গোল করতে পারেনি সাদা-কালো বাহিনী। এই ম্যাচেও তারা গোলের সুযোগ হাতছাড়া করা এবং বিরতির পর তাদের ক্লান্ত হয়ে পড়ার ‘রোগ’-এ আক্রান্ত হয়।

তবে দলের ফুটবলারদের পারফরম্যান্সে হতাশ নন রাশিয়ান কোচ চেরনিশভ। ম্যাচের পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'দলের ছেলেদের ধন্যবাদ দেব ভাল খেলার জন্য। লিগের অন্যতম সেরা দলের বিরুদ্ধে আজ খেলেছি আমরা। তাও আমরা আজ অনেক সুযোগ তৈরি করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, গোল করতে পারিনি। এটাই আমাদের সমস্যা'।

পাঞ্জাব এফসি এই নিয়ে দ্বিতীয় আইএসএল খেলছে। গত মরশুমের শুরুর তিন মাস তারা ধারাবাহিক ব্যর্থতার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার পর সাফল্যের মুখ দেখে। সেই উদাহরণ দিয়ে চেরনিশভ বলেন, 'গতবার পাঞ্জাব যেমন শুরুতে ভাল খেলতে পারেনি, জানুয়ারি থেকে ভাল খেলতে শুরু করে, আশা করি, আমাদের ক্ষেত্রেও তেমনই হবে। আমাদের প্রতিপক্ষ কিন্তু আমাদের থেকে কম গোলের সুযোগ তৈরি করতে পেরেছে। কিন্তু তা কাজে লাগিয়ে ওরা গোল করতে পেরেছে, যা আমরা পারিনি। আমরা পরিশ্রম করে গেলে একদিন ভাল ফল পাবই। ছেলেরা যথেষ্ট পরিশ্রমও করছে'।

গত মরশুমে প্রায় এই দল নিয়েই আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা, অথচ এ মরশুমে সেই দল নিয়েই কেন পারছেন না, এই প্রশ্ন উঠলে, চেরনিশভ বলেন, 'আই লিগ আর আইএসএলের মানের মধ্যে অনেক তফাৎ। তাই এটা বলা উচিত নয় যে আই লিগে যা হয়েছে, তা আইএসএলে হবে না কেন। এখানে পরিবেশ, মনস্তাত্বিক কারণ, সব মিলিয়ে একটা সমস্যা হচ্ছে। আমরা হারছি বলে হয়তো লোকে সমালোচনা করছে। কিন্তু তাদের বুঝতে হবে, এই মরশুমের প্রস্তুতির জন্য আমরা মাত্র ২৫ দিন সময় পেয়েছি। এইটুকু সময়ে কিছুই হয় না। এই নিয়ে কিন্তু কেউ কোনও কথা বলছে না'।

এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, 'এতগুলো সুযোগ তৈরি করা সত্ত্বেও যে আমরা গোল পাচ্ছি না, এটা এই যথেষ্ট প্রস্তুতির অভাবের জন্যই হচ্ছে। এই জায়গায় দলের খেলোয়াড়দের আনতে অনেক পরিশ্রম ও সময় প্রয়োজন। এর জন্য খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত দক্ষতাও প্রয়োজন। একমাত্র পরিশ্রম ও অনুশীলন করে যাওয়াই এই সমস্যার একমাত্র সমাধানের রাস্তা। এ ছাড়া কোনও উপায় নেই'।

কার কোথায় ভুল হচ্ছে, তা দলের ফুটবলাররা প্রত্যেকেই ভাল করে জানে বলে দাবি করেন মহমেডান কোচ। বলেন, 'কেউ বলতে পারবে না আমরা খারাপ খেলেছি। আমরা ভাল খেলেছি এবং খেলোয়াড়রা সবাই পেশাদার, তাদের কোথায় ভুল ভ্রান্তি হচ্ছে, তা তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয় নিয়মিত। দলের অনেকের চোট আছে। অনেকের কার্ড সমস্যা রয়েছে। এ সবও খেলার অঙ্গ।

আজ যেমন তিনজন নতুন ডিফেন্ডার নিয়ে খেলেছি আমরা। মহম্মদ ইরশাদ গত ম্যাচে সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হিসেবে খেলেনি। জো (জোহেরলিয়ানা) এই প্রথম আইএসএলের ম্যাচ খেলল। সামাদও (আলি মল্লিক) এই প্রথম শুরু থেকে খেলল। খেলোয়াড়দের হতাশ হলে চলবে না। ওরা পেশাদার। ওদের চেষ্টা করে যেতেই হবে'।