Sunil Chhetri Retirement: প্রিয় মুহূর্ত কোনটি? কোনটাই বা টার্নিং পয়েন্ট? সুনীল ছেত্রীর অবসর ঘোষণার দিনে বেছে নিলেন বাবা খড়গ
Sunil Chhetri: ৬ জুন কুয়েতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ খেলেই আন্তজার্তিক জার্সি লকারে তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুনীল ছেত্রী।
সৌমিত্র রায়, কলকাতা: প্রায় দুই দশকের লম্বা সফর। ১৫০ ম্যাচ, অগণিত স্মৃতি। অন্তত পরিসংখ্যানের বিচারে ভারতীয় ফুটবল ইতিহাসের (Indian Football Team) সফলতম খেলোয়াড়ের নাম সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri)। সেই সুনীলই বৃহস্পতিবার, ১৬ মে এক ভিডিও নিজের আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের কথা ঘোষণা করে দেন। কুয়েতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনপর্বের ম্যাচ দিয়েই সুনীল নিজের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের ইতি টানতে চলেছেন।
ছেলে নিজের অবসর ঘোষণার বার্তায় জানিয়েছেন বাবা খড়গ ছেত্রী (Kharga Chhetri) তাঁর অবসরের সিদ্ধান্তে খুব বেশি আবেগ দেখাননি। তবে এবিপি আনন্দের তরফে খড়গর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তাঁর গলায় গর্বের পাশাপাশি আবেগের সুরও ধরা পড়ল। ছেলের অবসরের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বাবা বলেন, 'ও অনেক ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্তটা নিয়েছে। বহুদিন ধরে তো খেলেছে। এই নিয়ে আলাদাভাবে তেমন কিছু বলতে পারি না। তবে মনের মধ্যে কোথাও একটু দুঃখ তো হচ্ছেই। তবে অনেকদিন হল। এই অগস্টেই তো ৪০ হয়ে যাবে ওর।'
প্রায় দু'দশকের লম্বা কেরিয়ারে ফুটবলার সুনীল ছেত্রীর কোন ম্যাচটা বা কোন গোলটা তাঁর সবথেকে প্রিয়? এই বিষয়ে কিন্তু ২০০৫ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় অধিনায়কের অভিষেক ম্যাচের গোলটাকেই খানিক এগিয়ে রাখলেন, সুনীল-অনুরাগী খড়গ। 'দেশের জার্সিতে ৯৪টি গোল করেছে ও। সত্যি বলতে আমি এইভাবে সেরা বাছতে পারবে না। আমি ওর বাবা পাশাপাশি কিন্তু ফুটবলার সুনীল ছেত্রীর অনুরাগীরও বটে। ওর সবকয়টি ম্যাচই আমাদের কাছে স্পেশাল, আমরা ওর সব ম্যাচই উপভোগ করি। তবে হ্যাঁ, ও নিজে বারবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে (অভিষেক ম্যাচে) গোলের কথা বলে থাকে। আমার মতে এটা ওর কাছে হয়তো সবথেকে স্মরণীয়। ' বলেন তিনি।
দুই দশকের লম্বা কেরিয়ার। স্বাভাবিকভাবেই প্রচুর চড়াই-উতরাইয়ের সাক্ষী থেকেছেন সুনীল। কিন্তু কোন এমন ঘটনা তাঁকে সেরা থেকে কিংবদন্তির পর্যায়ে উন্নীত করেছিল? কোন ঘটনা তাঁর কেরিয়ার বদলে দেয়? এক্ষেত্রে খড়গ এক দশক আগে সুনীলের ফিটনেসের ওপর বাড়তি প্রাধান্য দেওয়াকেই বেছে নিলেন। তিনি বলেন, '২০১৪ সালের পর থেকে ওর খেলার মধ্যে বেশ কিছু বদল ঘটে। ফুটবলার হিসাবে ওর দক্ষতা নিয়ে কোনদিনই কোনও প্রশ্ন ছিল না। কিন্তু ২০১৪ সালের পর থেকে ও নিজের ফিটনেসকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। ফুটবলে এই ফিটনেসটাই কিন্তু সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। ও নিজেও মনের মধ্যে এটা গেঁথে নেয় যে ফিটনেস না থাকলে ফুটবল খেলাটা সম্ভব নয়। নিজেকে ফিট রাখতে প্রচুর খাটা খাটনি করেছে। আমার মনে হয় নিজের এই প্রচেষ্টায় ও সফল হয়েছে। এখনও কিন্তু ফিট ও। '
ভারতীয় ফুটবলের মক্কা হিসাবে পরিচিত কলকাতা। কলকাতার ময়দানই সর্বপ্রথম এক ছোটখাট, টিনএজ তারকার প্রতিভার সাক্ষী থেকেছিল। তাঁর উত্থানের শুরুটা যে শহরে, সেই কলকাতাতেই আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শেষটাও করবেন সুনীল। ৬ জুন কিন্তু সপরিবারে সেই ম্যাচ দেখতে হাজির থাকবে ছেত্রী-পরিবার। 'ছয় তারিখেই ও জাতীয় দলের জার্সি তুলে রাখবে বলে শেষ ম্যাচ খেলবে জানিয়ে দিয়েছে। শেষ ম্যাচ আবার কলকাতাতে। যেখান থেকে ও নিজের ফুটবল সফর (ক্লাব) শুরু করেছিল। এই শহরের মেয়েকেই বিয়েও করেছে। কলকাতার সঙ্গে ওর যোগটা ভিন্নরকমের। ওই দিনটা আমাদের গোটা পরিবারের জন্য একটা বিশেষদিন হতে চলেছে। আমি ওর মা, স্ত্রী, বন্দনা (বোন), সাহেব (শ্যালক), বাবলু দা (সুব্রত ভট্টাচার্য, শ্বশুর), সকলে সপরিবারে ওইদিন মাঠে থাকব।' জানান খড়গ।
শেষ একবার ব্লু টাইগার্সের জার্সিতে তাঁদের প্রিয় অধিনায়ক ছেত্রীর খেলার দেখতে যে সমর্থকরা মাঠে ভিড় জমাবেন, তা বলাই বাহুল্য।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।