RCB vs KKR Preview: ৭ ম্যাচে ৫ ওপেনিং জুটি! বিরাট যুদ্ধের আগে বোলিং নিয়েও উদ্বেগে কেকেআর
IPL 2023: আরসিবি-র ত্রয়ী আতঙ্কে রাখতে পারে কেকেআরকে। ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কেকেআর?
বেঙ্গালুরু: ৬ এপ্রিল থেকে ২৬ এপ্রিল। হিসেব কষে দেখলে মাত্র ২০ দিনের ফারাক। কিন্তু কলকাতা নাইট রাইডার্সের (RCB vs KKR) অন্দরমহলের খোঁজখবর যাঁরা রাখেন, তাঁরা জানেন এই বিশ দিনে নাইট সংসারে কীরকম ওলট পালট হয়ে গিয়েছে।
৬ এপ্রিল ইডেন গার্ডেন্সে প্রায় চার বছর পর নাইটদের ম্যাচ ছিল। বলা হচ্ছিল হোম কামিং অফ নাইটস। সেই ম্যাচে কেকেআরের প্রতিপক্ষ ছিল বিরাট কোহলি-ফাফ ডুপ্লেসির (Virat Kohli) রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। ঘরের মাঠে আরসিবিকে ৮১ রানে দুরমুশ করে ম্যাচ জিতেছিল কেকেআর।
২৬ এপ্রিল। ফের নাইটদের (KKR) সামনে আরসিবি। লড়াই এবার বিরাটদের ডেরায়। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে। যে স্টেডিয়ামে আইপিএলের জন্ম হয়েছিল ১৫ বছর আগে। আর জন্মলগ্নেই রেকর্ড সেঞ্চুরিতে আরসিবি বোলিংকে খুন করেছিলেন ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। কিন্তু এবার পরিস্থিতি আলাদা। টানা চার ম্যাচ হেরে আইপিএলে কোণঠাসা কেকেআর। পয়েন্ট টেবিলে আট নম্বরে পড়ে রয়েছে কেকেআর। আরসিবি-র বিরুদ্ধে পরাজয় মানে প্লে অফের স্বপ্ন কার্যত ভেন্টিলেটরে ঢুকে যাওয়া।
আর বিরাট যুদ্ধের আগে কেকেআরকে ভাবাচ্ছে বোলিং ও ওপেনিং জুটি। ইডেনে নাইটদের আগের ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংস ২৩৫ রান তুলেছিল। ইডেনে আইপিএলের সর্বোচ্চ রান ছিল সেটাই। চলতি আইপিএলে ৭ ম্যাচের তিনটিতে দুশোর বেশি রান খরচ করেছেন কেকেআর বোলাররা। শার্দুল ঠাকুরের চোট কেকেআরের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। আরসিবির বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষাতে ব্যাটে নাইটদের জয়ের নায়ক ছিলেন শার্দুলই।
ওপেনিং নিয়েও একইরকম সমস্যায় কেকেআর। গত মরসুমে বারবার ওপেনিং জুটি পাল্টেও সাফল্যের মুখ দেখেনি কেকেআর। এবারও ৭ ম্যাচের মধ্যে ৫টি আলাদা ওপেনিং জুটি ব্যবহার করে ফেলেছে কেকেআর। টপ অর্ডার স্বস্তি দিচ্ছে না কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতকে। পাওয়ার প্লে-তে এখনও পর্যন্ত ৭ ম্যাচে ১৭ উইকেট হারিয়েছে কেকেআর। পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে মাত্র ৭.৮ রান রেটে স্কোরবোর্ড সচল রাখছে কেকেআর। যা টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় মন্থরতম। টুর্নামেন্টের মাঝপথে দলে থাকা আটজন বিদেশিকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলিয়ে দিয়েছে কেকেআর। তাও প্রথম একাদশ গুছিয়ে উঠতে পারেনি।
অন্যদিকে, বরাবরের মতো আরসিবি-র সেরা শক্তিই হল ব্যাটিং টপ অর্ডার। শুরুতেই ফাফ ডুপ্লেসি ও বিরাট কোহলি। প্রথমজনের দখলে রয়েছে অরেঞ্জ ক্যাপ। কোহলিও রয়েছেন সর্বোচ্চ স্কোরার হওয়ার দৌড়ে। চেন্নাই সুপার কিংসে থাকাকালীন পেসারদের বিরুদ্ধে সাবলীল ছন্দে দেখা যেত ডুপ্লেসিকে। এখন স্পিন খেলাও রপ্ত করে ফেলেছেন। কোহলির সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে প্রায় পাঁচশো রান যোগ করে ফেলেছেন এবারের আইপিএলে। যার মধ্যে রয়েছে দুটি সেঞ্চুরি পার্টনারশিপও। দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও। চলতি আইপিএলে প্রায় ১৯০ স্ট্রাইক রেট রেখে রান করে চলেছেন ম্যাড-ম্যাক্স। চিন্নাস্বামীতে বরাবরই ভয়ঙ্কর অস্ট্রেলীয় তারকা। এই মাঠে শেষ ৪ ইনিংসে তিনটি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে ম্যাক্সওয়েলের। আরসিবি ত্রয়ী কেকেআর বোলারদের আতঙ্কে রাখবেন। তবে আরসিবি-র মিডল অর্ডার ধারাবাহিক নয়। দীনেশ কার্তিক ছাড়া আর কেউই সেভাবে দাগ কাটতে পারছেন না। ডিকেও ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগছেন। শুরুর দিকে উইকেট হারালে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে আরসিবির মাঝের সারির ব্যাটারদের।
এই মুহূর্তে বোলিংয়ে এগিয়ে আরসিবি। পাওয়ার প্লে হোক বা ডেথ ওভার, মহম্মদ সিরাজ উইকেট তুলছেন নিয়মিতভাবে। হর্ষল পটেলের স্লোয়ার বলও ফের ব্যাটারদের ধোঁকা দিচ্ছে। বুধবারের ম্যাচের পর অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে বেরিয়ে পড়বে আরসিবি। প্রতিপক্ষের ডেরায় গিয়ে পরপর ৫টি ম্যাচ খেলতে হবে বিরাটদের। তার আগে ঘরের মাঠে জিততে মরিয়া থাকবে আরসিবি।
পয়েন্ট টেবিলে ৭ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে রয়েছে আরসিবি। কেকেআর রয়েছে আট নম্বরে। ৭ ম্যাচে নাইটদের পয়েন্ট মাত্র ৪। প্লে অফের দৌড়ে টিকে থাকতে গেলে চিন্নাস্বামীতে শাহরুখ খান-জুহি চাওলার দলকে মহার্ঘ ২ পয়েন্ট অর্জন করতেই হবে। পারবেন নাইটরা?