Sourav Ganguly Special: গ্রেগের সাহায্য নিয়ে তাঁরই পাড়ায় গিলেসপিদের পিটিয়ে সৌরভের স্পর্ধার ১৪৪
Sourav Ganguly Special: ঘরের মাঠে তাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই করা তখন জলে নেমে কুমিড়ের সঙ্গে লড়াই করার সমান। গাব্বার মাঠ মানেই বাউন্স, শর্টপিচ বলের ছড়াছড়ি দেখতে পাওয়া যাবে।
কলকাতা: ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে যতগুলো স্মরণীয় ইনিংস রয়েছে। তার আর্কাইভে গাব্বায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (sourav ganguly) করা ১৪৪ রানের ইনিংসটি আজও উজ্জ্বল। শর্টপিচ ডেলিভারি খেলার ক্ষেত্রে তাঁর দুর্বলতা নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সমালোচকদের তুড়ি মেরে উড়িয়ে ১৭ বছর আগে এই ইনিংস খেলেছিলেন। আমাদের ওস্তাদের মার.. সিরিজে এই ইনিংসটি এবারের প্রতিবেদন--
সেই সময় বিশ্বের ১ নম্বর টেস্ট দল স্টিভের অস্ট্রেলিয়া। ঘরের মাঠে তাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই করা তখন জলে নেমে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করার সমান। কিন্তু সেই সাহসটাই দেখিয়েছিলেন এক বঙ্গসন্তান। গাব্বার মাঠ মানেই বাউন্স, শর্টপিচ বলের ছড়াছড়ি দেখতে পাওয়া যাবে। আর তা দিয়েই ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপকে আঘাত হানবেন অজি পেসাররা। এটাই তো ছিল পরিকল্পনা। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৪ ম্যাচের সিরিজ খেলতে গিয়েছিল সেবার সৌরভের টিম ইন্ডিয়া। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটার সচিন গাব্বায় খেলেছেন দুটি ম্যাচ। ১৯৯১ এবং ২০০৩ সালে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ২৩ রান। বার বার পেসারদের বলেই ফিরতে হয়েছে তাঁকে। গাব্বা বারবার খালি হাতে ফিরিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের মহানায়ককে। তবে এই গাব্বায় স্মরণীয় করে রেখেছে সৌরভের টেস্ট কেরিয়ারকে।
সিরিজের প্রথম ম্যাচই ছিল গাব্বায়। অধিনায়ক হওয়ার পর প্রথমবার অস্ট্রেলিয়া সফর। সময় নষ্ট করতে চাননি সৌরভ। তাই আগেভাগেই উড়ে গিয়েছিলেন সে দেশে। পিচ ও পরিবেশ সম্পর্কে আভাস পেতে। শুধুই কি তাই। সৌরভের ক্রিকেট কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় ভুল যে গ্রেগ চ্যাপেলকে কোচ করে নিয়ে এসেছিলেন তিনি, সেই চ্যাপেলের কাছেই তখন শর্ট বল খেলার পদ্ধতি শিখেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে সৌরভ-চ্যাপেল দ্বন্দ্ব ভারতীয় ক্রিকেটের কালো অধ্যায় হয়ে থাকলেও, সেবার গ্রেগের সাহায্য নিয়েই তাঁর পাড়ায় দাদাগিরি দেখিয়েছিলেন সৌরভ।
গাব্বায় প্রথম টেস্টে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সৌরভ। জাস্টিন ল্যাঙ্গারের ১২১ রানের ইনিংস অস্ট্রেলিয়াকে তিনশোর গণ্ডি পার হতে সাহায্য করে। ৩২৩ রানে থেমেছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভারতের প্রথম উইকেটে পড়ে দলীয় ৬১ রানের মাথায়। রাহুল, সচিন ২ মহারথীর কেউই রান পাননি। ৬২ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন প্রবল চাপে ভারত। ঠিক সেই সময়ই জ্বলে উঠল সৌরভের ব্যাট। জেসন গিলেসপি, নাথান ব্র্যাকেনদের আগুনে গতি সামলে তাঁর ঝকঝকে ইনিংস, আজও ভারতীয়দের বিদেশের মাঠে সেরা ইনিংসের মধ্যে একটি। অজি পেসারদের শর্ট বলের চ্যালেঞ্জ হেলায় উড়িয়ে ১৮ টি চোখধাঁধানো বাউন্ডারি এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে। ১৯৬ বলে ১৪৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সৌরভ। যার দৌলতে প্রথম ইনিংসে ৪০৯ রান বোর্ডে তুলে নেয় ভারত। ৮৬ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ২৮৪ রান করে ডিক্লেয়ার দিয়ে দেয় অজিরা। ভারতের সামনে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯৯ রান। ২ উইকেট হারিয়ে বোর্ডে ৭৩ রান তুলতেই ম্যাচের যবনিকা টেনে দেওয়া হয়।
ব্রিসবেন ম্যাচ ড্র হলেও গাব্বায় অজি দম্ভ চূর্ণ করে যে আত্মবিশ্বাস পেয়েছিল ভারতীয় দল, তার প্রতিফলন হয়েছিল পরের ম্যাচে অ্যাডিলেডে। সেখানে জিতে সিরিজেও এগিয়ে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। যদিও মেলবোর্ন টেস্টে হারের সম্মুখিন হতে হয়েছিল। কিন্তু সিডনি টেস্ট ফের ড্র করে সেবার সিরিজ ড্র করে দেশে ফিরেছিল সৌরভ ব্রিগেড।