Sports HIghlights: হার না মানা পিয়ালির গল্প, শ্যুটিং বিশ্বকাপে মেহুলির সোনা, সঙ্গে খেলার মাঠের সব খবর
Top Sports News: খেলার মাঠের সারাদিনের সব খবরের ঝলক এবিপি লাইভে।
কলকাতা: অভাব হোক বা প্রকৃতির রোষ, সব প্রতিকূলতা ছাপিয়ে জোড়া শৃঙ্গ জয় চন্দনগররের কন্যার। কোন মন্ত্রে এগিয়ে চলেন, কেমন ছিল এভারেস্ট ও লোৎসে অভিযান, অজানা কাহিনি শোনালেন পিয়ালি বসাক। শ্যুটিং বিশ্বকাপে সোনা মেহুলি ঘোষের। খেলার মাঠের সারাদিনের সব খবরের ঝলক এবিপি লাইভে।
পিয়ালির হার না মানা কাহিনি
অভাব তাঁর নিত্যসঙ্গী। বাবা অসুস্থ। শয্যাশায়ী। সংসারের সব দায়ভারই কার্যত তাঁর একার কাঁধে। সারাদিন মুখ গুঁজে জীবন সংগ্রাম করে চলেছেন। নীরবে। বিনা অভিযোগে।
কিন্তু পাহাড়ের কথা শুনলেই তাঁর দুই চোখে যেন স্ফুলিঙ্গ। সাদামাটা চেহারায় জ্বলে ওঠে অসাধ্য সাধন করার সংকল্প। আত্মবিশ্বাস ঠিকরে বেরোয় চেহারায়।
তিনি পিয়ালি বসাক (Piyali Basak)। এক যাত্রায় এভারেস্ট (Mt Everest) ও লোৎসে (Mt Lhotse) জয় করে কার্যত অসাধ্য সাধনই করে ফেলেছেন চন্দননগরের (Chandannagore) কন্যা। কোনও প্রতিকূলতাই তাঁর পাহাড় জয়ের নেশা নষ্ট করতে পারেনি।
২০১০ সাল থেকে হিমালয়ের বিভিন্ন শৃঙ্গে অভিযান শুরু। প্রথমে মুলকিনাথ, পরের বছর কামেদ শৃঙ্গে অভিযান, পরের বছর ভাগীরথী ২ অভিযান করেন পিয়ালি। ২০১৩ সালে উত্তরাখণ্ডের ভয়াবহ ক্লাউড বার্স্টে আটকে পড়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। পিয়ালি বলছেন, ‘২০১৩ সালে ভাগীরথী টু শৃঙ্গের কাছাকাছি গিয়ে ভয়ঙ্কর তুষারঝড়ে পড়েছিলাম। কোনও রকমে মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে আসি। তুষারঝড়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে বেঁচে ফেরার সেই অভিজ্ঞতা এবার এভারেস্ট আরোহণের সময় সাহায্য করেছে। সেই শিক্ষাই কাজে লাগিয়েছি পৃথিবীর উচ্চতম এভারেস্ট ও চতুর্থ উচ্চতম লোৎসে শৃঙ্গ জয়ের ক্ষেত্রে।‘
বিনা অক্সিজেনে এভারেস্ট জয়ের সংকল্প নিয়েছিলেন। যে নজির বিশ্বে আর কারও নেই। কিন্তু তার জন্য হাওয়ার গতিবেগ থাকতে হতো ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার। যখন অভিযান শুরু করেছিলেন পিয়ালি, আবহাওয়া মনোরম ছিল। কিন্তু অর্থাভাবে অনুমতিপত্র জোগাড় করতে পারেননি সেই সময়। সেই খবর জানাজানি হতে মানুষ সাহায্য পাঠাতে শুরু করেন। তাতেই সুরাহা হয়। মেলে ছাড়পত্র।
কিন্তু আবহাওয়া ততদিনে বিরূপ হতে শুরু করেছিল। ভয়ঙ্কর সেই অভিজ্ঞতার কথা শোনাচ্ছিলেন পিয়ালি। ‘তুষারঝড় শুরু হয়েছিল। যত ওপরে উঠছিলাম, তুষারঝড়ের তীব্রতা বাড়ছিল। অন্যান্য পর্বতারোহীরা অক্সিজেন নিয়ে ওপরে উঠছিলেন। তাঁরাও পরে হাল ছেড়ে দেন। আমি অক্সিজেন ছাড়া সারারাত আরোহণ করি,’ বলছিলেন পিয়ালি। যোগ করলেন, ‘তাপমাত্রা এতই কম ছিল যে, পিঠের ব্যাগে থাকা পানীয় জলও জমে বরফ হয়ে গিয়েছিল। তাই তেষ্টা পেলেও জল খেতে পারিনি।’
তারপর? ‘আমরা যখন হিলারি স্টেপে পৌঁছই, ঝড় ধাক্কা মেরে ফেলে দিচ্ছিল। ভীষণ বিপজ্জনক জায়গা। সেখানে পাথরে বরফ জমে কংক্রিটের মতো হয়ে রয়েছে। আইস ওয়ালে পায়ের ক্র্যাম্পন গাঁথতে পারছিলাম না। ৪-৫টি রক ওয়াল পেরিয়ে যেতে হয়। আমরা শৃঙ্গের কাছে প্রায় পৌঁছেই গিয়েছিলাম। আর একশো মিটার বাকি। চারপাশে মৃতদেহ ঝুলছে। ওখান থেকে কারও মৃতদেহ নামিয়ে আনাও সম্ভব নয়। যে নামাতে যাবে, তারই প্রাণসঙ্কট হবে। সেই দৃশ্য দেখে ভয় লেগে গিয়েছিল,' বলছিলেন পিয়ালি। যোগ করলেন, 'সকাল ন’টার সময় আরোহণ শেষ হয়। কিন্তু তুষারঝড়ের এত দাপট যে, দিনের বেলাও রাতের মতো অন্ধকার।'
মেহুলির হাত ধরে জোড়া সোনা?
তিন বছর পর জাতীয় দলে ফিরেছেন। আর ফিরেই সোনার স্পর্শ পেয়েছেন মেহুলি ঘোষ (Mehuli Ghosh)। দক্ষিণ কোরিয়ার (South Korea) চাংওয়ানে বিশ্ব শ্যুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে বুধবার ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের মিক্সড টিম ইভেন্টে সোনা জিতেছেন শাহু তুষার মানের সঙ্গে জুটি বেঁধে। তবে এখানেই থেমে থাকতে নারাজ হুগলির বৈদ্যবাটির শ্যুটার। মেহুলির লক্ষ্য আরও বড়। দেশের হয়ে শ্যুটিং বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ (ISSF Shooting World Cup) থেকে দ্বিতীয় সোনা জিতে ফিরতে বদ্ধপরিকর বাংলার কৃতী কন্যা।
বুধবার এবিপি লাইভকে মেহুলির মা মিতালি বললেন, '১০ মিটার এয়ার রাইফেলের দলগত বিভাগের ফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করেছে ও। ভারতীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোরবেলা ফাইনাল হবে। জোড়া সোনা জয়ের সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না মেহুলি।'
ন্যাটওয়েস্ট জয়ের ২০ বছর
১৩ জুলাই। ভারতের প্রত্যেক ক্রিকেটপ্রেমীর কাছে স্মরণীয় দিন। ২০ বছর আগে লর্ডসে (Lords) এক বাঙালির নেতৃত্বে এই দিনই যেন ভারতীয় ক্রিকেটে (Indian Cricket) নবজাগরণ ঘটেছিল।
ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির (Natwest Trophy) ফাইনালে ইংল্যান্ডের ৩২৫/৫ স্কোর করে ভারত তখন পাল্টা লড়াই করছে। কিন্তু ম্যাচ রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতিতে। ম্যাচের শেষ ওভারে অ্যান্ড্রু ফ্লিন্টফের (Andrew Flintoff) তৃতীয় বলে জাহির খান (Zahir Khan) ২ রান নিতেই ব্যালকনিতে বেরিয়ে এলেন তিনি। উত্তেজনায় যেন থরথর করে কাঁপছেন। ডানহাতের হ্যাঁচকা টানে খুলে নিলেন আকাশি জার্সি। তারপর মাথার ওপর বনবন করে ঘোরাতে শুরু করলেন। সেই মুহূর্তে যেন ব্রিটিশ দর্পচূর্ণ হওয়ার সেরা বিজ্ঞাপন পেয়ে গেল বিশ্বক্রিকেট। যে দৃশ্য শুধু ভারতীয় ক্রিকেটে নয়, গোটা বিশ্বে অমর হয়ে রয়েছে।
ধোনি-পন্থ আড্ডা
ইংল্যান্ড সফরে ঋষভ পন্থকে (Rishabh Pant) আচমকা দেখা গেল লন্ডনের রাস্তায়। সঙ্গী? এক কিংবদন্তি।
পন্থকে দেখা গেল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির (MS Dhoni) সঙ্গে। ছিলেন পার্থিব পটেলও। তিন উইকেটকিপার হাসিমুখে পোজ দিলেন। তিনজনের সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হল।
সঞ্জনার ইয়র্কার
ইংল্যান্ডের মাটিতে দাঁড়িয়ে ইংরেজ শিবিরের যন্ত্রণা বাড়ালেন ভারতের তারকা পেসারের স্ত্রী!
প্রথম ওয়ান ডে ম্যাচে ভারতীয় বোলার যশপ্রীত বুমরা (Jasprit Bumrah) ব্রিটিশ ব্যাটারদের নাকানিচোবানি খাওয়ালেন। বল হাতে তছনছ করে দিলেন ইংল্যান্ডের ইনিংস। বুমরার স্ত্রী সঞ্জনা গণেশন তারপর জেসন রয়দের নিয়ে মজা করলেন।
ওভালে ভারত বনাম ইংল্যান্ড ওয়ান ডে সিরিজের প্রথম একদিনের ম্যাচে দুরন্ত বোলিং করলেন যশপ্রীত বুমরা। বাইশ গজে যখন বল হাতে ইতিহাস গড়েছেন বুমরা, তখনই ওভালের গ্যালারিতে মাইক হাতে ব্রিটিশ ক্রিকেটারদের কটাক্ষ করছেন তাঁর স্ত্রী, বিখ্যাত ক্রিকেট সঞ্চালিকা সঞ্জনা গণেশন।
একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে স্টেডিয়ামের বাইরে একটি ফুডকোর্টে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সঞ্জনা। বলছেন, “ফুডকোর্টে আজ প্রচুর মানুষ। কারণ ইংরেজরা আজ ক্রিকেট দেখতে চায় না। এখানে অনেক ফুড স্টল রয়েছে। তার মধ্যে একটি স্টলে ইংলিশ ব্যাটাররা মোটেও আসতে চাইবেন না। কারণ স্টলটির নাম ক্রিস্পি ডাক। আমি একটি ‘ডাক ব়্যাপ’ নিয়েছি। মাঠের বাইরের এই ডাক ব়্যাপ কতটা ভালো তা দেখতে হবে। কারণ অন ফিল্ড ডাক অসাধারণ।”
মাস্টারের শ্রদ্ধার্ঘ্য
তিনি রয়েছেন ছুটির মেজাজে। কখনও থাকছেন ইংল্যান্ডে । কখনও আবার স্কটল্যান্ডে । লন্ডনে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পঞ্চাশতম জন্মদিন উদযাপনের পার্টিতেও ছিলেন । গুরু পূর্ণিমায় তিনজনকে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করলেন কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar)। জানালেন, এই তিনজনের জন্যই শুধু ক্রিকেটার হিসাবেই নয়, মানুষ হিসাবেও তিনি সমৃদ্ধ হয়েছেন ।
প্রত্যেক বছরই গুরু পূর্ণিমার দিন শৈশবের কোচ, অধুনা প্রয়াত রমাকান্ত আচরেকরের সঙ্গে ছবি পোস্ট করেন সচিন তেন্ডুলকর । আচরেকর বেঁচে থাকাকালীন সচিন তাঁর বাড়িতে হাজির হয়ে যেতেন। এবারের গুরুপূর্ণিমাটা অবশ্য একটু অন্যরকমভাবে কাটাচ্ছেন সচিন ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, 'আমার একজন নয়, তিনজন গুরু। আমার বাবা, আচরেকর স্যার ও আমার দাদা অজিত। ওঁরা আমাকে শুধু ক্রিকেটই শেখাননি, সবচেয়ে আগে শিখিয়েছেন ভাল মানুষ কীভাবে হতে হয়। আমার সব গুরুকে গুরুপূর্ণিমার শুভেচ্ছা'।
আরও পড়ুন: কেএল রাহুলের সঙ্গে বিয়ে নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য আথিয়ার, জল্পনা কি বাড়ল আরও?