Biplab Deb: ‘বহিরাগতরা ছড়ি ঘোরাচ্ছে, ক্ষতি হচ্ছে দলের’, প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানালেন বিপ্লব, ত্রিপুরা বিজেপি-তে বিভাজনের ছায়া!
Tripura BJP: রবিবার আগরতলার বাসভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিপ্লব। সেখানেই রাজ্য বিজেপি-র কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
আগরতলা: দু'মাসের কিছু সময় বেশি হল নির্বাচন মিটেছে। ত্রিপুরায় ফের সরকার গড়েছে বিজেপি। তার মধ্যেই অসন্তোষ নিয়ে এগিয়ে এলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি-র (Tripiura BJP) রাজ্যসভা সাংসদ বিপ্লব দেব (Biplab Deb)। 'বহিরাগত' তত্ত্বে সরব হলেন বিপ্লব। তাঁর দাবি, 'বহিরাগত'রা ঢুকে পড়ে ত্রিপুরা বিজেপি-তে প্রভাব খাটাচ্ছে এবং রাজ্য বিজেপি-র সংগঠনকে দুর্বল করে দিচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে শীর্ষ নেতৃত্বকে অবহিত করেছেন বলেও দাবি তাঁর (Tripura News)।
রবিবার আগরতলার বাসভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিপ্লব। সেখানেই রাজ্য বিজেপি-র কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁর অভিযোগ, বাইরে থেকে কিছু অনুপ্রবেশকারী দলে ঢুকে পড়েছেন। দলের উপর প্রভাব খাটাচ্ছেন তাঁরা। যার ফলে রাজ্যে বিজেপি-র ভবিষ্যতের যাবতীয় সম্ভাবনা মাঠে মারা যাচ্ছে।
রাজ্য বিজেপি-র কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি-র জন্য যে কোনও দায়িত্ব পালন করতে তিনি প্রস্তুত বলে জানান বিপ্লব। তাঁর কথায়, "দ্বিতীয় বার ত্রিপুরায় বিজেপি-র সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে. রাজ্যকে কমিউনিস্টদের হাত থেকে মুক্ত করার পর থেকে নিজের তরফে চেষ্টায় কোনও খামতি রাখিনি আমি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আস্থা রয়েছে আমার। আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা নিষ্ঠাভরেই পালন করব।"
ত্রিপুরা বিজেপি-র কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ জানাতে গিয়ে বিপ্লব বলেন, "আমাদের দল অত্যন্ত সুশৃঙ্খল। কিন্তু মাঝে মধ্যেই বহিরাগতদের নাক গলাতে দেখছি। মোদি এবং শাহের নেতৃত্বে আমরা নিজেরা দল চালাব। তাতে দল এবং সরকার সঠিক পথে চলবে। কিন্তু বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ঘটছে। তী শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছি আমি। প্রধানমন্ত্রীর মোদির উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে আমার। ওঁর আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আমাকে উনি যে দায়িত্ব পালন করতে বলবেন, করব। "
কিন্তু 'বহিরাগত' বলে কাদের উল্লেখ করছেন বিপ্লব? সরাসরি প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি। বরং বলতে শোনা যায়, "বাইরে থেকে কে প্রভাব খাটাচ্ছেন, কেন প্রভাব খাটাচ্ছেন, তা প্রত্যেকেই জানেন। এতে দলের সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমি কোনও আমলা নই। কিন্তু যখনই এমন কিছু ঘটে, সঠিক জায়গায় বিষয়টি পৌঁছে দেওয়া আমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। আমি আমার কাজ করে যাব।"
২০১৮ সলে ত্রিপুরায় বিজেপি-কে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিপ্লব। তাতে ২৫ বছরের বাম দুর্গ ভেঙে গেরুয়া শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রী পদে অভিষিক্ত হন বিপ্লব। তার পর থেকে বার বার বিতর্কে জড়লেও, পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন তিনি। কিন্তু ২০২২ সালের ১৪ মে আচমকাই পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। তাতে তাঁর একদা ঘনিষ্ঠ সহযোগী মানিক সাহাকে অন্তবর্তীকালীন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পদে বসায় বিজেপি। এ বছর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জয়ী হলে, পূর্ণ মেয়াদের জন্যই তাঁকে ফের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়।
তার পর থেকেই ত্রিপুরা বিজেপি-তে বিপ্লবের দাপট ক্রমশ কমে আসতে থাকে। রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যের সঙ্গে মোটামুটি সুসম্পর্কই রয়েছে বিপ্লবের। কিন্তু মানিকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তিক্ততায় পরিণত হয়েছে বলে বিজেপি-র অন্দরেই শোনা যায়। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মানিক জানিয়েছিলেন, কোনও ভাবেই তিনি গুন্ডামি এবং রাজনৈতিক হিংসা বরদাস্ত করবেন না। মানিকের হাতে ত্রিপুরা বিজেপি-র রাশ যত শক্ত হয়েছে, ততই বিপ্লবের প্রভাব কমে এসেছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।