Rahul Gandhi: সংসদে অনাস্থা আলোচনায় রাহুল গাঁধী, কী বললেন তিনি?
সংসদে অনাস্থা আলোচনায় রাহুল গাঁধী,' ভয় পাবেন না আজ আমি আদানিজীকে নিয়ে বলব না' 'আজ আমার বক্তব্য অন্য প্রসঙ্গে', ' আজ আমি মস্তিস্ক দিয়ে নয় হৃদয় দিয়ে বলব',' আজ আমি আপনাদের সেভাবেও আক্রমণ করব না',' দু-একটা গোল হয়তো দেব, কিন্তু সেভাবে আক্রমণ করব না', ' গতবছর আমি কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর ভারত যাত্রা করেছিলাম',' প্রথমে আমি হয়তো নিজেই নিশ্চিতভাবে জানতাম না কেন এই যাত্রা করছি',' কিন্তু কিছুদিন পরে আমি ধীরে ধীরে বুঝতে লাগলাম' । 'যার জন্য আমি মরতে পারি, মোদিজীর জেলেও যেতে রাজি আছি সেটা বুঝতে শুরু করলাম', 'প্রথম দু-তিনদিনের মধ্যেই আমার মধ্যে যে অহঙ্কার ছিল তা চূর্ণ হয়ে গেল', ' তখন আমার প্রতিদিন ভয় লাগত পরেরদিন চলতে পারব কিনা', ' কিন্তু তখন প্রতিদিন কোনও না কোনও শক্তি আমাকে সাহায্য করত', ' লক্ষ লক্ষ মানুষ এভাবে আমাকে শক্তি দিয়েছে', 'এত মানুষ আসতেন যে আমি আর কথা বলতাম না, দরকার হত না',' শুধু আওয়াজ শুনতাম, ভারত জোড়ো ভারত জোড়ো আওয়াজ' ' কৃষক, শ্রমিক, ধনী, দরিদ্র সব মানুষের আওয়াজ'
১) "ভারত জোড়ো যাত্রা'র উদ্দেশ্য নিয়ে গোড়ায় সচেতন ছিলাম না আমি। তাই সদুত্তর দিতে পারিনি। কিন্তু যেমন যেমন এগোতে শুরু করলাম, বুঝলাম দেশকে বুঝতে, দেশকে জানতেই এই যাত্রা। বুঝতে চাইছিলাম, কেন ১০ বছর ধরে লাগাতার গালিগালাজ শুনতে হয়েছে আমাকে। তাই মানুষের কথা শুনতে শুরু করি। বুঝতে পারি, অহঙ্কার এবং ঘৃণা ত্যাগ করতে হবে। তবেই দেশকে বোঝা সম্ভব।"
২) "একবারও হিংসাদীর্ণ মণিপুরে যাওয়ার সময় পাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওঁর কাছে মণিপুর ভারতের অংশই নয়। এই দেশে মণিপুর আর বেঁচে নেই। মণিপুরের কথা শোনার মতো সময় নেই সরকারের কাছে। মণিপুরে ভারতকে খুন করা হয়েছে। এঁদের রাজনীতি মণিপুরকে নয়, ভারতকে হত্যা করেছে।"
৩) "ভারত মানে দেশের মানুষের কণ্ঠ। সেই কণ্ঠস্বরকে হত্যা করেছেন আপনারা। মণিপুরে ভারতমাতার হত্যা করেছেন। মণিপুরের মানুষকে মেরে ভারতকে খুন করা হয়েছে। আপনারা দেশপ্রেমী নন, আপনারা দেশদ্রোহী। সেই কারণেই মণিপুরে যেতে পারছেন না প্রধানমন্ত্রী। আপনারা ভারতমাতার রক্ষাকর্তা নন, আপনারা ভারতমাতার খুনি।"
৪) "আপনারা সর্বত্র কেরোসিন ছড়িয়ে বেড়াচ্ছেন। মণিপুরে আগুন ধরিয়েছেন। হরিয়ানাতেও একই কাজ করছেন। কারণ ভারতকে খুন করাই আপনাদের লক্ষ্য।"
৫) "লঙ্কায় হনুমান অগ্নিসংযোগ করেননি, রাবণের অহঙ্কার লঙ্কাকে ছারখার করে দিয়েছিল। রাম রাবণকে হত্যা করেননি, অহঙ্কারই রাবণকে শেষ করে দেয়।"
৬) "নরেন্দ্র মোদি যদি ভারতের কণ্ঠ না শোনেন, তাহলে কার কথা শোনেন? দু'জনের কথা শোনেন। দেখে নিন, আদানির জন্য মোদিজি কী কী করেছেন। রাবণও দু'জনের কথা শুনতেন, মেঘনাদ এবং কুম্ভকর্ণের। নরেন্দ্র মোদিও দু'জনের কথা শোনেন, অমিত শাহ এবং গৌতম আদানির। দেখে নিন, আদানির জন্য মোদিজি কী কী করেছেন।"
৭) "আমি মণিপুর বলছি বটে, কিন্তু আসল কথা হল, মণিপুর আর বেঁচে নেই। মণিপুরকে দু'টুকরো করে দিয়েছেন আপনারা। মণিপুরকে বিভাজিত করেছেন, ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন মণিপুরকে।"
৮) "মণিপুরের ত্রাণশিবিরে এক মহিলার কাছে জানতে চেয়েছিলাম কী ঘটেছে। উনি জানান, 'আমার একমাত্র ছেলেকে চোখের সামনে গুলি করে মারা হয়েছে। সারারাত ছেলের মরদেহ আগলে পড়েছিলাম। তার পর মনে ভয় ধরতে শুরু করে। বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসি'। কিছু নিয়ে আসতে পেরেছেন কিনা জানতে পারলে দেখান, কিছু কাপড় আর ছেলের একটি ছবি'।"
৯) "শেষ বার আদানিকে গুরুত্ব দেওয়ায় সমস্যা হয়েছিল। আপনাদের সিনিয়র নেতারা আহত হয়েছিলেন অত্যন্ত। আপনাদের উপরও হয়ত তার প্রভাব পড়েছিল। তার জন্য দুঃখিত আমি। কিন্তু আমি সত্যই বলেছিলাম। বিজেপি-তে আমার বন্ধুদের ভীত হওয়ার কারণ নেই। কারণ আজ আমার বক্তৃতা আদানিকে নিয়ে নয়। আদানি-গোলা ছুড়ব না আজ।"
১০) "আমি কিছু দিন আগে মণিপুর গিয়েছিলান। আমাদের প্রধানমন্ত্রী কিন্তু একবারও যাননি। কারণ ওঁর কাছে মণিপুর ভারত নয়।"
মণিপুর হিংসা নিয়ে বুধবার লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের দ্বিতীয় দফার আলোচনা ছিল। এদিন সেখানেই বক্তৃতা করেন রাহুল। মোদি পদবী মামলায় গত সাড়ে চার মাস লোকসভার বাইরে ছিলেন তিনি। তাঁর সাংসদপদ খারিজ হয়েছিল। দু'বছরের সাজা শুনিয়েছিল আদালত। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট সাজায় স্থগিতাদেশ দেওয়াতেই লোকসভায় প্রত্যাবর্তন ঘটেছে রাহুলের।