AC New Rule: ঘর ঠান্ডা করে চাদরমুড়ি দিয়ে শোওয়ার দিন শেষ, আর ইচ্ছেমতো কমানো যাবে না AC-র তাপমাত্রা, কড়া ব্যবস্থা সরকারের
Narendra Modi Government: বিদ্যুৎ বাঁচানোর লক্ষ্যেই এমন পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন খট্টর। জানা যাচ্ছে, শীঘ্রই AC-র তাপমাত্রা বেঁধে দেবে কেন্দ্র।

নয়াদিল্লি: গরমে হু হু করে বিকোচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (AC)। সেই নিয়ে কোনও বিধিনিষেধ না থাকলেও, AC-র তাপমাত্রা বেঁধে দিতে উদ্যোগী হল কেন্দ্র। গৃহস্থের ঘরে বসানো AC হোক বা কর্পোরেট অফিসের AC, অথবা গাড়ির AC, ইচ্ছে মতো তাপমাত্রা কমানো-বাড়ানো যাবে না আর। শীঘ্রই সেই মর্মে নির্দেশিকা প্রকাশ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মঙ্গলবার একথা জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। (AC New Rule)
বিদ্যুৎ বাঁচানোর লক্ষ্যেই এমন পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন খট্টর। জানা যাচ্ছে, শীঘ্রই AC-র তাপমাত্রা বেঁধে দেবে কেন্দ্র। এর পর AC-র তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে কমানো যাবে না, ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের থেকে বাড়ানোও যাবে না। AC-র তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে এই প্রথম সরকারের তরফে এমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বৃহত্তর লক্ষ্যেই এমন পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন খট্টর। (Narendra Modi Government)
গতকাল খট্টর বলেন, "AC-মান নির্ধারণে শীঘ্রই নতুন বিধান কার্যকর হবে। AC-র তাপমাত্রা ২০ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নির্ধারিত থাকবে। অর্থাৎ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে ঠান্ডা করা যাবে না, ২৮ ডিগ্রির চেয়ে বাড়ানো যাবে না। এই প্রথম এমন পরীক্ষামূলক পদক্ষেপ করা হচ্ছে, যাতে AC-র তাপমাত্রা নিয়েও সুনির্দিষ্ট বিধান কার্যকর করা যায়।"
শুধুমাত্র গৃহস্থের বাড়ি নয়, অফিস-কাছারি, গাড়ি---সব ক্ষেত্রেই এই বিধান কার্যকর হবে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির জেরে জলবায়ু পরিবর্তন চরম আকার ধারণ করছে বলে লাগাতার সতর্ক করে আসছেন বিজ্ঞানীরা। ঘরে ঘরে AC বসানোর হিড়িকও এর জন্য বহুলাংশে দায়ী। ভারতে অন্তত ১০ কোটি AC কার্যকর রয়েছে। প্রতি বছর আরও ১.৫ কোটি করে সংখ্যা বাড়ছে। এর ফলে গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন আরও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, AC-র তাপমাত্রা যত কমানো হয়, ততই বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়। ১ ডিগ্রিও যদি তাপমাত্রা বাড়ানো হয়, তাতে ৬ শতাংশ কম বিদ্যুৎ লাগে। অর্থাৎ AC-র তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি বাড়িয়ে ৩ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ বাঁচাতে পারি আমরা। গত বছর গ্রীষ্মে ভারতে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ ২৫০ গিগাওয়াটে পৌঁছে যায়। চলতি বছরে তা ২৭০ গিগাওয়াটে পৌঁছে যেতে পারে। তাপমাত্রা বেঁধে দেওয়া গেলে ২০৩৫ সালের মধ্যে ৬০ গিগাওয়াট চাহিদা কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
শুধু তাই নয়, ঘরে ঘরে AC বসে যাওয়ায়, যথেচ্ছ বিদ্যুৎও খরচ হচ্ছে। AC-র তাপমাত্রা যত কমানো হয়, তত বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়। অনেক ক্ষেত্রেই তাপমাত্রা যত কমানো হয়, ততটাও প্রয়োজন থাকে না। তাই AC-র তাপমাত্রা বেঁধে দেওয়া গেলে বিদ্যুতের অপচয় যেমন বন্ধ করা যাবে, তেমনই গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমনও কমবে বলে আশাবাদী সরকার। পাশাপাশি, বিদ্যুতের বিলও গৃহস্থের আয়ত্তের মধ্যে থাকবে। তাই খট্টর বলেন, "আমরা ঠিক করেছি, AC-র সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখা হবে। সর্বোচ্চ ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়ানো যাবে তাপমাত্রা। দেশের সর্বত্র AC-র ব্যবহারে অভিন্নতা আনা সম্ভব হবে এতে, বিদ্যুতের সাশ্রয় হবে।"
এই মুহূর্তে বাজারে যে AC কিনতে পাওয়া যায়, তাতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নির্ধারিত রয়েছে। নতুন বিধান এলে সেই তাপমাত্রায় হেরফের ঘটবে। পাশাপাশি, খট্টর জানিয়েছেন, ঘণ্টায় ৩০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ ধরে রাখতে সক্ষম ব্যাটারি স্টোরেজ সিস্টেম তৈরির জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে প্রস্তাব দেওয়া হবে। এর ফলে সৌরবিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ ধরে রাখা সম্ভব হবে, জীবাশ্ম জ্বালানির উপর কমবে নির্ভরশীলতা। এর জন্য সরকার ৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ভর্তুকিও দেবে বলে জানিয়েছেন খট্টর। আগামী তিন মাসের মধ্যেই টেন্ডার বেরোবে।























