US Tariffs on India: কেন ভারতের উপর চড়া শুল্ক চাপাল আমেরিকা? মুখ খুললের প্রাক্তন RBI গভর্নর রঘুরাম রাজন, বললেন, ‘রাশিয়া থেকে তেল কেনা ইস্যুই নয়’
Raghuram Rajan:ইউনিভার্সিটি অফ জুরিখে UBS Centre for Economics in Society-র আলোচনাসভায় এই মন্তব্য করেন রাজন।

নয়াদিল্লি: দুই দফায় ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে আমেরিকা। আরও শুল্ক চাপানো হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্যই ভারতকে ‘শুল্ক শাস্তি’ দেওয়া হয়েছে বলে যদিও দাবি তাঁর। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন গভর্নর তথা অর্থনীতিবিদ রঘুরাম রাজন এব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করছেন। তাঁর মতে রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর শুল্ক চাপাননি ট্রাম্প। বরং ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের দাবিতে দিল্লি যে অবস্থান গ্রহণ করে, তারই ফলস্বরূপ ‘শুল্ক শাস্তি’ চাপানো হয়েছে। (Raghuram Rajan)
ইউনিভার্সিটি অফ জুরিখে UBS Centre for Economics in Society-র আলোচনাসভায় এই মন্তব্য করেন রাজন। তাঁর মন্তব্যের একটি ভিডিও সোশ্য়াল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর কথায়, “ব্যক্তিত্বই মূল সমস্যা, বিশেষ করে হোয়াইট হাউসের অন্দরের একজন ব্যক্তিত্ব। ট্রাম্প ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ থামানোর কৃতিত্ব দাবি করলে, দিল্লির তরফে যে মন্তব্য করা হয়, তা যেভাবে গ্রহণ করা হয়েছিল…পাকিস্তান কৌশলী অবস্থান নেয়। আরা বলে, ট্রাম্পের জন্যই (যুদ্ধবিরতি হয়েছে) ট্রাম্প।” গোড়া থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব দাবি করে আসছেন ট্রাম্প। ভারত ট্রাম্পকে সেই কৃতিত্ব না দেওয়াতেই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হয়েছে বলে মত রাজনের। (US Tariffs on India)
রাজন জানিয়েছেন, গোটা দুনিয়ার সামনে ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানায় পাকিস্তান, যুদ্ধবিরতিতে তাঁর ভূমিকা ছিল বলে সিলমোহর দেয়। কিন্তু ভারত দাবি করে, আমেরিকার হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি হয়নি। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রত্যক্ষ আলোচনার মাধ্যমেই যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হয়েছে। সেই থেকেই সমস্যার সূচনা বলে মত রাজনের। তাঁর বক্তব্য, “পাকিস্তান কৌশলগত অবস্থান নেয়। ট্রাম্পকেই কৃতিত্ব দেয় তারা। ভারত পাল্টা বিতর্কে গিয়ে দাবি করে, ট্রাম্পকে ছাড়াই যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হয়েছে। মাঝামাঝি কিছু একটা হয়ত সত্য। ভারত ও আমেরিকার মধ্যে ঠিক কী ঘটেছে, তা আমরা কেউই জানি না। আশা করা যায়, সব পক্ষই বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নেবে এবং যুক্তিসঙ্গত চুক্তিতে পৌঁছনো সম্ভব হবে।”
🚨 REPORTER : India got 50% tariffs for buying Russian oil.
— News Algebra (@NewsAlgebraIND) December 8, 2025
RAGHURAM RAJAN : "Russian oil wasn’t the issue. Pakistan credited Trump for the ceasefire, India didn’t. Pakistan has a 19% tariff, India 50%"
India chose National Interest and didn’t bend 🔥pic.twitter.com/1vhipIVBFb
রাজনের মতে, ভিন্ন ভিন্ন এই দাবিই বাস্তবে প্রতিফলিত হয়েছে। ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চেপেছে। সেই তুলনায় পাকিস্তানি পণ্যের উপর শুল্ক চেপেছে ১৯ শতাংশ। রাশিয়ার থেকে তেল কেনা কনিয়ে দিলে দিল্লি এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে কি না, জানতে চাওয়া হলে রাজন বলেন, “রাশিয়ার থেকে তেল কেনা কখনও মূল সমস্যা ছিল বলে মনে হয় না আমার।” তাহলে হাঙ্গেরিকে ট্রাম্প ছাড় দিতেন না বলে মত রাজনের।
জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে নিরীহ পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার পরই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত চরম আকার ধারণ করে। পহেলগাঁও হামলার পর পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান চালায় ভারত, যার আওতায় জঙ্গিঘাঁটিগুলিকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পাকিস্তান পাল্টা আঘাত হানতে এলে কার্যত সম্মুখসমরে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশ। চারদিন ধরে সংঘর্ষের পর শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেন ট্রাম্প। আমেরিকার মধ্যস্থতাতেই দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। ভারত যদিও কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ অস্বীকার করে। এর পর পরই ২৫-২৫ করে দুই দফায় ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপায় আমেরিকা।




















