Migrant Worker Death: পরিযায়ী শ্রমিক মৃত্যুতে ক্ষোভ, পুলিশকে তাড়া গ্রামবাসীদের
Namkhana News: ভিনরাজ্যে এক পরিযায়ী শ্রমিকের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা। কিন্তু কেন ক্ষোভ?
গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: রাজ্যে ফের আক্রান্ত পুলিশ। পরিযায়ী শ্রমিকের অস্বাভাবিক মৃত্য়ুর ঘটনার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন নামখানার বাসিন্দারা। পুলিশকর্মীদেরকে ধাক্কাধাক্কি, তাড়া করল এলাকার মানুষ। রাত পর্যন্ত ঘেরাও করে চলল বিক্ষোভ। করা হল শ্রমিক ঠিকাদারের বাড়ি ভাঙচুর। সুন্দরবনের এসপি জানিয়েছেন, পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আত্মীয়দের দাবি মেনে দেহের দ্বিতীরবার ময়নাতদন্ত হবে।'
গ্রামে ঢোকা মাত্রই পুলিশকে বাধা দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। সেখানেই শেষ হয়নি, ক্ষোভ এতটাই ছিল যে পুলিশকে নিয়ে টানাহ্যাঁচড়াও হয়। একসময় পুলিশকে তাড়াও করেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু এমন ক্ষোভ কেন? ভিনরাজ্যে এক পরিযায়ী শ্রমিকের (Migrant Worker Death) রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা (Namkhana News)।
দিনকয়েক আগে, পাতিবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিক সান্টু পাত্রর মৃত্যু হয় গুজরাতের সুরাতে। বুধবার গ্রামে ফেরে কফিনবন্দি দেহ। এরপরই শেখ সালেহান নামে এক শ্রমিক-ঠিকাদারের বাড়িতে চড়াও হন গ্রামবাসীরা। পরিবারের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে সান্টুকে। মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের স্ত্রী প্রিয়ঙ্কা পাত্র বলেন, 'লোহার রড দিয়ে আমার স্বামীকে মাথায বাড়ি দিয়েছে। আমার স্বামীকে খুন করেছে।' তাঁর দাবি, 'আমার স্বামীকে যারা এভাবে মেরেছে, তাদের এরকমই শাস্তি হোক।'
মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের আত্মীয় নন্দিতা পাত্রের অভিযোগ, 'আমার ভাসুরের ছেলেকে মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা অন্যান্য সাইট থেকে খবর নিয়েছি। শেখ সালেহানবাবু আমাদের সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ বা সাহায্যে করছেন না। সেই কারণে আমরা বাড়ি ঘেরাও করেছি। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট সহ ওঁরা যা করে পাঠিয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, আমাদের ছেলে কোথাও পড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়ে মারা গিয়েছে। আমরা ৪-৫ দিন আগে আমাদের ছেলের মৃত্যু হয়েছে শুনে লোকাল থানা নামখানায় রিপোর্ট করতে গিয়েছিলাম। ওঁরা কিন্তু আমাদের কোনও রিপোর্ট নেননি। ওঁরা বলছে, যেখানে কাজ করতে গিয়েছিল গুজরাতে, ওইখানে গিয়ে জিডি কর। ওখানে ডিজি হলে তখন আমরা এখানে নেব।'
খবর পেয়ে গ্রামে যায় নামখানা ও ফ্রেজারগঞ্জ থানার পুলিশ। এরপর পুলিশকে ঘিরে ধরে শুরু হয় বিক্ষোভ। পুলিশকর্মীদের টানা-হেঁচড়া করে তাড়া করেন গ্রামবাসীরা। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত পুলিশকে ঘেরাও করে চলে বিক্ষোভ। মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের আত্মীয় ফাল্গুনী পাত্র বলেন, 'সুস্থ ছেলেকে নিয়ে গেছে, মৃতদেহ নিয়ে এসেছে। আর উনি (শেখ সালেহান) আমাদের সঙ্গে কোনও সহযোগিতা করছেন না, কোনও মতে যোগাযোগ করছে না। আমরা সঠিক বিচার চাই।'
দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত ও শ্রমিক-ঠিকাদারের বিরুদ্ধে থানায় FIR দায়েরের দাবি পুলিশ মেনে নেওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সুন্দরবনের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, 'পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আত্মীয়দের দাবি মেনে দেহের দ্বিতীরবার ময়নাতদন্ত হবে। অভিযুক্ত ঠিকাদারের পরিবারে সবাই বেপাত্তা। তাঁদের খোঁজ চলছে।'
গত ৬ ফেব্রুয়ারি কেরলে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের পূর্ব গঙ্গাধরপুর গ্রামের বাসিন্দা এক পরিযায়ী মৎস্যজীবীর। অন্যদিকে, গত মাসে শুধু মালদাতেই মৃত্যু হয়েছে তিনজন পরিযায়ী শ্রমিকের এবার নামখানার পরিযায়ী শ্রমিকের মৃ্ত্যু হল গুজরাতে।
আরও পড়ুন: মমতার মিছিলে বিজেপি বিধায়ক! এবার পদ্ম-শিবির ভাঙাল ঘাসফুল