Anubrata Mondal: ইডি হেফাজতে ভোট ম্যানেজার, বীরভূম নিয়ে উদ্বেগ তৃণমূলে, চওড়া হচ্ছে ফাটল!
Cattle Smuggling Case: অনুব্রত জেলে বন্দি থাকাকালীনই, বীরভূমে দল পরিচালনার জন্য সাত সদস্যের কোর কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
কলকাতা: শেষ পর্যন্ত দিল্লি যেতেই হল অনুব্রত মণ্ডলকে। শুক্রবার পর্যন্ত এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হেফাজতে থাকছেন। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অনুব্রতর এই দিল্লিযাত্রা তৃণমূলে জন্য শুভ বলে ঠাহর হচ্ছে না। কারণ এ যাবৎ বীরভূমে তৃণমূলের ভোট ম্যানেজার হিসেবেই কাজ করেছেন অনুব্রত। তাঁর অনুপস্থিতিতে সেখানে জোড়াফুল শিবিরের মতানৈক্য প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
বীরভূমে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য তথা অনুব্রতর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত কাজল শেখের সাফ কথা, পঞ্চায়েতের যুদ্ধে অনুব্রত-হীন বীরভূমে শাসকদলের পারফরম্যান্সে কোনও প্রভাবই পড়বে না। তাঁর বক্তব্য, "বিজেপি-র চক্রান্ত। তা ছাড়া কিছুই নয়। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। বিজেপি যে উদ্দেশ্যনিয়ে অনুব্রত মণ্ডল মহাশয়কে দিল্লি নিয়ে গিয়েছেন, ওটা সফল হবে না। চক্রান্ত চক্রান্তই রয়ে যাবে। তৃণমূল যে জায়গাতে রয়েছে, সেখানেই থাকবে।"
অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে বীরভূমে তৃণমূলের ভোটবাক্সে কোনও প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে, কাজল বলেন, "এক বিন্দুও প্রভাব পড়বে না। পশ্চিম বাংলায় তৃণমূল চলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে।"
যদিও কাজল শেখের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি তথা অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মলয় মুখোপাধ্যায়। বীরভূমে তৃণমূলে সহ-সভাপতি তিনি। মলয়ের বক্তব্য, "দলটা তৈরি করেছেন মমতা। বীরভূম জেলায় আমরা দেখেছি, অনুব্রত মণ্ডল প্রচণ্ড পরিশ্রম করে বীরভূমে দলটাকে দাঁড় করিয়েছে। তাই বীরভূম জেলায় তাঁর একটা ভূমিকা ছিল, আছে থাকবে।"
অনুব্রত জেলে বন্দি থাকাকালীনই, বীরভূমে দল পরিচালনার জন্য সাত সদস্যের কোর কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু অনুব্রতকে নিয়ে দলের অন্দরের মতবিরোধ প্রকাশ্য়ে চলে এল। তাতে নয়া সংযোজন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের মন্তব্য। অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে বীরভূমের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত তিনি, নিজেই জানিয়েছেন।
এই প্রেক্ষাপটেই আবার বীরভূম নিয়ে নতুন চ্য়ালেঞ্জ ছুড়েছেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তাঁর বক্তব্য, "একটা অনুব্রত গিয়েছে। কিন্তু হাজারটা মদন মিত্র-দেবাংশু তৈরি হয়েছে। আমাকে দিন না! আমি বীরভূমে এক মাস থেকে ভোট করতে রাজি আছি। অনুব্রতর হাতে তৈরি করা মাটি, সেই মাটি কিন্তু বদলায়নি। রাঙা মাটি যেরকম শক্ত ছিল, সেরকমই আছে। সেটা ভোটের দিন বোঝা যাবে। আমি রাজি বীরভূমের দায়িত্ব নিতে। অনুব্রতর তৈরি গড় একটা তিহাড় বদলাতে পারবে না।"
এ দিকে, ইডি হেফাজতের প্রথম দিন যখন অনুব্রত মণ্ডলকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে, তখন কেষ্ট-ভূম, বীরভূমে কার্যত উৎসব পালন করে বিজেপি। হোলির সকালে গেরুয়া আবির নিয়ে পথে নামেন বিজেপি-র বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি। বিকেলে সিউড়িতে চড়াম চড়াম ঢাক-সহযোগে গুড়-বাতাসা বিলি করা হয়। বাঁকুড়ায় বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা বিলি করেন গুড়-বাতাসা আর নকুলদানা। ঢাক-ঢোল বাজিয়ে রাস্তায়, ট্রেনে-বাসে, পথ চলতি মানুষকে গুড়-বাতাসা আর নকুলদানা খাওয়ান।