Bankura News: প্রবল বর্ষণে জলের তলায় সিমলাপালের সেতু, যোগাযোগ পুরো বন্ধ এই অংশে
Bankura Bridge Submerged: ভয়াবহ দুর্যোগে বিপর্যস্ত একাধিক এলাকা। মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে ফের জলের তলায় বাঁকুড়ার সিমলাপালের এই অংশ।
পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: ঝাড়খণ্ডে সৃষ্ট নিম্নচাপের জেরে প্রবল বর্ষণে (Heavy Rain) ভুক্তভোগী বাঁকুড়াও। ফের জলের তলায় সিমলাপালের লক্ষীসাগর সংলগ্ন পাথরডাঙ্গা-ভেলাইডিহা সেতু। ফলে লক্ষীসাগর-বাঁকুড়া ভায়া হাড়মাসড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ। চরম সমস্যায় সিমলাপাল ও তালডাংরা ব্লক এলাকার একটা অংশের মানুষ।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে বিগত বাম আমলে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের উদ্যোগে সিমলাপালের পাথরডাঙ্গা-ভেলাইডিহা এলাকায় শিলাবতী নদীর উপর এই কজওয়ে তৈরী হয়। উদ্বোধন করেন তৎকালীন মন্ত্রী উপেন কিস্কু। কিন্তু অল্প বৃষ্টিতেই বছরে একাধিকবার জলের তলায় এই সেতু চলে যাওয়ায় চরম সমস্যায় পড়েন ওই এলাকার অসংখ্য মানুষ।বুধবার সকালে গিয়ে দেখা গেল, কজওয়ের উপর দিয়ে বইছে জল, যানচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। এই অবস্থায় প্রশাসনের জলমগ্ন কজওয়ের ওপর দিয়ে যাতায়াতের উপর সম্পূর্ণের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা অজয় পণ্ডা, বিমল মল্লরা বলেন, এই রাস্তা দিয়ে সিমলাপাল এলাকার একটা বড় অংশের মানুষ যাতায়াত করেন। বাঁকুড়া শহরের সঙ্গে যোগাযোগের সহজ মাধ্যমও এই রাস্তা। এই অবস্থায় মানুষকে দূর্ভোগের হাত থেকে বাঁচাতে চৣওড়া ও উঁচু সেতুর দাবি তাঁরা জানাচ্ছেন বলে জানান।
আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার বদলাতে পারে আবহাওয়া। এই মুহূর্তে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদ জেলায়। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতে। ভারী বৃষ্টি হবে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং নদিয়ায়।বৃহস্পতিবারও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। শুক্রবারও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গে আজ অতি ভারী বৃষ্টি নিয়ে কমলা সতর্কতা। বেশ কয়েকটি জেলাতে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া রয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি চলবে। বৃষ্টির স্পেল শনিবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে।আজ অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং জেলায়। ভারী বৃষ্টি হতে পারে দার্জিলিং, কোচবিহার, মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং উত্তর দিনাজপুরে। বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলাতে।
আরও পড়ুন, প্রবল বর্ষণের জেরে বাতিল একাধিক ট্রেন, রইল তালিকা
এই মুহূর্তে সিকিমের পরিস্থিতি ভয়াবহ। নর্থ সিকিমের লোনাক লেকে, মেঘভাঙা বৃষ্টি। তার জেরে চুংথাম বাঁধ ভেঙে ভয়াল আকার নিয়েছে তিস্তা। নদীতে প্রবল জলোচ্ছ্বাস। জলস্তর ১৫ থেকে ২০ ফুট বেড়ে গিয়েছে। স্রোতের টানে ভেসে যাচ্ছে বাড়ি ঘর-গাছ পালা। পাহাড়ি রাস্তায় ভাসছে গাড়ি। চুংথাম এলাকা কার্যত সিকিম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। বানভাসি লাচেনও। বন্য়ায় ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক সেনাছাউনি। ২৩ জন সেনা জওয়ানের খোঁজ মিলছে না বলে সেনার তরফে জানানো হয়েছ।ভয়াবহ দুর্যোগে বিপর্যস্ত কালিম্পংও। জলের তো়ড়ে ধসে গেছে রাস্তা। তিস্তা বাজার, রাম্পু সহ বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং এবং দার্জিলিং যাওয়ার বিকল্প রাস্তার ওপর দিয়েই বইছে জল। সম্পূর্ণ বন্ধ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এদিকে, তিস্তায় জলস্তর ব্য়াপক বেড়ে যাওয়ায় গজলডোবা, জলপাইগুড়ি় সহ তিস্তা তীরবর্তী এলাকাগুলি লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা মাঝারি বৃষ্টি চলবে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলাতে। ভারী ও অতি ভারী বৃষ্টির ফলে উত্তরবঙ্গে পার্বত্য এলাকায় ধস নামতে পারে। দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় ধস নামার প্রবণতা সবথেকে বেশি। নদীর জলস্তর বাড়তে পারে উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গে। নীচু এলাকায় জল জমে শস্যের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা।