Bankura : শীতের আমেজ গায়ে মেখে দ্বারকেশ্বরের পাড়ে আট থেকে আশি, কোভিড আবহে মুড়িমেলা কেঞ্জাকুড়ায়
Bankura 'Murimela' : কোভিড আবহে (Covid Situation) আতঙ্ক তো রয়েছেই। যার ফলে কিছুটা ফিকে হয়েছে মুড়ির মেলা...
পূর্ণেন্দু সিংহ, কেঞ্জাকুড়া (বাঁকুড়া) : এ ভালবাসা যেন চিরন্তন । কথা হচ্ছে, মুড়ির সঙ্গে রাঢ়বাংলার মানুষের। শীতের (Winter) শিরশিরানি গায়ে মেখে, নদীর পাড়ে বসে চপ-মুড়ি আর বেগুনি খাওয়া। সঙ্গে কাঁচা লঙ্কা। রয়েছে উপরি পাওনাও। আত্মীয়-পরিজন আর বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে খোশগল্প। ঠান্ডার আমেজ গায়ে মেখে এই অনুভূতি নেন রাঢ়-বাংলার অনেক জায়গার মানুষই। বাঁকুড়ার (Bankura) কেঞ্জাকুড়ার মুড়িমেলা তার অন্যতম দৃষ্টান্ত।
কোভিড আবহে (Covid Situation) আতঙ্ক তো রয়েছেই। যার ফলে কিছুটা ফিকে হয়েছে মুড়ির মেলা। কিন্তু, মুড়ির টানে বেরিয়ে এলেন অনেকেই। এ যেন মুড়ির টানে মুড়ির মেলা। দ্বারকেশ্বরের ঘাটে বসে মুড়ি খাওয়ার আনন্দে মাতল আট থেকে আশি৷ গায়ে চাদর-সোয়েটার চড়িয়ে কাছের মানুষদের সঙ্গে বসে একের পর এক 'খাবল' মুড়ি তুলে গেলেন অনায়াসে। সঙ্গে ছিল চপ-বেগুনি-টমেটো-শশা-কাঁচা লঙ্কা-পিঁয়াজ মটরশুঁটির মতো উপকরণ। যা জমিয়ে তুলল মুড়ি মেলার আমেজ।
আরও পড়ুন ; বন্ধ হল রামপুরহাটের বুংকেশ্বরী মেলা, করোনা কালে বড় পদক্ষেপ পুলিশের
মুড়ি মেলা শুরুর ইতিহাস যাই হোক কেন, কেঞ্জাকুড়ার মুড়ি মেলা এখনও প্রমাণ করে রাঢ়বাংলার মানুষের সঙ্গে মুড়ির ভালবাসা কতটা নিবিড়। বহু প্রাচীন এই মেলা। লোকমুখে জানা গেছে, কেঞ্জাকুড়ার দ্বারকেশ্বর নদের ঘাটে সঞ্জীবনী আশ্রমে হরিনাম সংকীর্তন শুনতে আসতেন আশপাশের বহু গ্রামের মানুষ। সারারাত ধরে হরিনাম সংকীর্তনের আসরে মেতে উঠে গ্রামের মানুষ বাড়ি ফিরতেন সকালে। সকালে বাড়ি ফেরার পথে দ্বারকেশ্বর নদের ঘাটে মুড়ি খেয়ে তারপর সকলেই নিজের নিজের বাড়ি ফিরে যেতেন। সেই মুড়ি খাওয়ার চল আজ পরম্পরায় মুড়ি মেলার রূপ নিয়েছে। রাঢ়বাংলার মানুষের সাথে মুড়ির সম্পর্ক যে কত গভীর, এই মেলাই তার অন্যতম প্রমাণ। সেই সম্পর্কের হাত ধরেই বছরের পর বছর ধরে মুড়ি মেলা জনপ্রিয় হয়েছে।
কেঞ্জাকুড়ার সঞ্জীবনী আশ্রম চত্বরের দ্বারকেশ্বর নদের চরে প্রতি বছর মাঘ মাসের ৪ তারিখে বসে মুড়ি মেলার আসর। কেঞ্জাকুড়া সহ আশপাশের ৩০ থেকে ৪০ টি গ্রামের মানুষ আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে হাজির হয়ে যান মুড়ি মেলার আসরে। মুড়ির সাথে নানান পদ মেখে শীতের সকালে মুড়ি খাওয়ার আনন্দে মেতে উঠেন আট থেকে আশি। নদের চরে বসে জমাটি গল্পের সাথে মুড়ির খাওয়ার জমজমাট আসর মনে করিয়ে দেয় রাঢ়বাংলার মানুষের একেবারে পছন্দের খাদ্য তালিকায় বিরাজ করছে মুড়ি। মুড়ি খেয়ে সঞ্জীবনী আশ্রমের হরিনাম সংকীর্তন ও মেলায় যোগ দিয়ে উৎসবের আবহে মেতে ওঠা। এইভাবেই বছরের পর বছর ধরে মুড়ি মেলায় আজও মেতে ওঠেন সকলেই।