Mid Day Meal: ৬ মাসে ১০০ কোটির দুর্নীতি! বাংলায় মিড ডে মিল নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, রিপোর্ট শিক্ষা মন্ত্রকের
Scam: এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১৬ কোটি মিড ডে মিল বেশি দেখানো হয়েছে!
দীপক ঘোষ, কলকাতা: এ বার মিড ডে মিল নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের (Mid Day Meal)। ২০২২ সালে মাত্র ছ'মাসের মধ্যে মিড ডে মিল নিয়ে অন্তত ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। বলা হয়েছে, গত বছর এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই বিপুল টাকার দুর্নীতি হয়েছে। হিসেব চাইলে ১৬ কোটি অতিরিক্ত মিড ডে মিল দেখানো হয় (Scam)। শুধু তাই নয়, নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে ৭০ শতাংশ কম মিড ডে মিল খাবার সরবরাহ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ।
শিক্ষা মন্ত্রকের জয়েন্ট রিভিও প্যানেল একটি রিপোর্ট তৈরি করে
প্রধানমন্ত্রী পুষ্টি প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে একটি প্যানেল তৈরি করা হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে শিক্ষা মন্ত্রকের জয়েন্ট রিভিও প্যানেল একটি রিপোর্ট তৈরি করে। সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। তাতেই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, গত বছর প্রথম দুই অর্থবর্ষে রাজ্যের তরফে ১৪০ কোটি ২৫ লক্ষ মিড ডে মিলের রিপোর্ট পেশ করা হয়। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের রিপোর্টে ১২৪ কোটি ২২ লক্ষ মিড ডে মিলের উল্লেখ রয়েছে।
মিড ডে মিল প্রকল্পে অন্তত ১০০ কোটি টাকা বেশি দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের থেকে রাজ্য় সরকারের রিপোর্টে ১৬ কোটি মিড ডে মিলের ফারাক ধরা পড়েছে। কেন্দ্রীয় রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই ১৬ কোটি মিড ডে মিল বেশি দেখানো হয়েছে রাজ্যের তরফে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে ওই রিপোর্টের বিষয়টি সামনে এল।
দিল্লির একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, মিড ডে মিল নিয়ে বাংলা থেকে বেশ কিছু অভিযোগ সামনে আসছিল। তাতেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। আর সেই রিপোর্টেই বিস্তর গরমিল চোখে পড়েছে। শুধুমাত্র ছয় মাসে ১০০ কোটির দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে। তার আগের হিসেব জুড়লে টাকার অঙ্ক আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী পুষ্টি প্রকল্প থেকে মিড ডে মিলের জন্য যে টাকা পায় রাজ্য, সেই টাকাতেই দুর্নীতি বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee : TMC জাতীয় দলের তকমা হারানোর পর, আজ বাঁকুড়ায় অভিষেকের প্রথম জনসভা, কী বার্তা ?
বিষয়টি সামনে আসতেই রাজ্যকে তীব্র আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, 'আগেই বলেছিলাম! শিক্ষামন্ত্রকের জয়েন্ট রিভিও রিপোর্টে ১৬ কোটি মিড ডে মিল বাবদ ১০০ কোটির দুর্নীতির অভিযোগ। ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর, ছয় মাসে দুর্নীতি হয়েছে'।
Told you so !
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) April 12, 2023
A Joint Review Mission formed by @EduMinOfIndia, while reviewing the implementation of Midday Meal Scheme in WB found that WB Govt over reported 160 million Midday Meals worth ₹100 Crore between April & Sept 2022 by inflating the no. of beneficiaries significantly: https://t.co/cIz5K1Lvxz pic.twitter.com/XxPyNRNe9W
সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "এটা কোনও নতুন কথা নয় যে বাংলায়. প্রতি ক্ষেত্রেই লুঠ, দুর্নীতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। যারা ১০০ দিনের টাকা, বাড়ি তৈরির টাকা লুঠ করতে পারে, তাদের কাছ থেকে ছাড়ের আশা করেন! চাকরি বিক্রির টাকা যেমন লুঠ হয়েছে, তেমন মিড ডে মিলের টাকাও লুঠ হচ্ছে। লুঠ ছাড়া তৃণমূল কোথায়? আমার কথা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকার মাঝে মধ্যে একটা রিপোর্ট তৈরি করবে ১০০, ৫০০ কোটি টাকা লুঠ। করণীয়টা কী? বার বার বলেছি, কী কী পাচ্ছেন, কী কী করছেন, শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন। রাজ্য-কেন্দ্র দুই পক্ষই নির্বিকার। লাভের কিছু হচ্ছে না।"
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসর রাজনীতির অভিযোগ তৃণমূলের
যদিও তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন শুভেন্দুকে নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দেন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন প্রতিহিংসার রাজনীতির। বলেন, "চোরেদের রাজা যদি চোরের কথা বলেন, যাঁকে প্রকাশ্য টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, যাঁর নাম সিবিআই-এর কাছে আছে, সারদায় সুদীপ্ত সেন জানালেন কত টাকা নিয়েছেন ধমকে চমকে, তিনি বড় বড় কথা বলছেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো ভেঙে চুরমার। এই ধরনের প্রকল্পগুলি কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ে চলে। দুই পক্ষের যোগদান থাকে। এই জয়েন্ট রিভিউ মিশনে রাজ্য-কেন্দ্র দুই পক্ষের প্রতিনিধি থাকার কথা। কিন্তু রাজ্যকে না জানিয়ে একতরফা ভাবে এই প্রকল্প করা হয়েছে। রাজ্যের প্রতিনিধির সই নেই রিপোর্টে। এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। বাংলার প্রতি প্রতিহিংসার আচরণ কতটা মারাত্মক, আরও একবার তা প্রকাশিত হল এই রিপোর্টের মাধ্যমে। "