(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Birbhum News: ক্রেতার দেখা নেই, শুধু ঋণের বোঝাই বাড়ছে, বোলপুরের কর্মতীর্থ হাটে প্রমাদ গুনছেন মহিলারা
Birbhum News: বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের অন্তর্গত সোনাঝুরি জঙ্গল থেকে কিছুটা দূরে তৈরি হয়েছে কর্মতীর্থ হাট। তার জন্য ২০১৬–’১৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডিআরডিসি খাত থেকে ৬০ লক্ষ টাকা খরচ হয়।
আবীর ইসলাম, বোলপুর: লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর (Self help Group) মহিলা সদস্যদের জন্য তৈরি হয়েছিল শান্তিনিকেতন (Santiniketan) কর্মতীর্থ হাট। কিন্তু করোনার প্রকোপ, মূল্যবৃদ্ধি-সহ হাজারো সমস্যায় দেখা নেই ক্রেতার। তাই আশায় বুক বেঁধে ব্যবসা শুরু করলেও, ঋণের দায়ে এখন জর্জরিত মহিলারা। খেজুরের গুড় বিক্রি থেকে শুরু করে নানা পরামর্শ যদিও দিচ্ছে প্রশাসন। কিন্তু তাতে ঋণ থেকে মুক্তি মেলা তো দূর, রোজকার খরচের জোগান দিতেই হিমশিম খাচ্ছেন সকলে। সেই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। বিজেপি-র (BJP) অভিযোগ, প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে টাকা লুঠ করছে শাসকদল। যদিও তাদের অভিযোগ ধর্তব্যের মধ্যেই আনতে চাইছে না তৃণমূল (TMC)। কোনও ইস্যু না পেয়ে, ইচ্ছাকৃত ভাবে খোঁচানো হচ্ছে বলে দাবি তাদের।
বীরভূম জেলার পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে অন্যতম হল কেন্দ্র শান্তিনিকেতন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সেখানে ভিড় করেন মানুষ। এ বার সেই শান্তিনিকেতনের বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের অন্তর্গত সোনাঝুরি জঙ্গল থেকে কিছুটা দূরে তৈরি হয়েছে কর্মতীর্থ হাট। তার জন্য ২০১৬–’১৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডিআরডিসি খাত থেকে ৬০ লক্ষ টাকা খরচ হয়। সেই হাটেই ব্যবসা করে আসছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। কর্মতীর্থ হাটকে আরও সুন্দর করে তোলার জন্য বিধায়কের তহবিল থেকে ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছে ছাউনিও। সেখানে বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ১২০ জন মহিলা সদস্যের ব্যবসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার জন্য কম-বেশি ঋণও নিতে হয়েছে মহিলাদের।
আরও পড়ুন: বাড়িতে কাজের সময়ে রাজমিস্ত্রির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, শপিং-এর নাম করে পালিয়েছিলেন ২ গৃহবধূ
কিন্তু করোনরা জন্য বেশ কিছু দিন বন্ধ ছিল হাট। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হওয়ার পর নতুন করে ব্যবসা শুরু করেন তাঁরা। কিন্তু তার পর থেকে বেশ কয়েক মাস কেটে গেলও, ক্রেতার দেখা মিলছে না। ফলে পড়ে থেকে থেকে নষ্ট হচ্ছে জিনিসপত্র। তার উপর ঋণের বোঝা বেড়েই চলেছে।এমন পরিস্থিতিতে জর্জরিত সকলে। বোলপুরের মুলুকের বাসিন্দা হাসিনা বেগম স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য। তিনি ২৫ হাজার টাকার ঋণ নিয়ে ছিলেন। প্রতিমাসে ২৫০ টাকা সুদ দিতে হয়। তিনি জানিয়েছেন, মুলুক থেকে টোটোয় চেপে হাটে যেতে আসতেই 200 টাকা খরচ হয়। খেতে খরচ হয় ২০ টাকা। স্বামী অসুস্থ। ছেলে ব্যবসা করলেওষ লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছে না সে-ও। তাতেই ক্রমশ ঋণে ডুবে যাচ্ছেন।
প্রশাসনের তরফে যদিও মহিলাদের উৎসাহ জোগানো হচ্ছে। হস্তশিল্পের পাশাপাশি খেজুরের গুড়ও পসরায় রাখতে বলা হয়েছে। তবে তা পর্যটক টানতে কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে সন্দেহ মিটছে না। বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের বিডিও শেখর শাই বলেন, “শুধুমাত্র স্বনির্ভর দলের মহিলাদের জন্য এই হাট। আমরা প্রশাসনের তরফ থেকে সমস্ত রকম ভাবে চেষ্টা করছি পর্যটক টানার। খেজুরের গুড় পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এবার সেটাও রাখা হয়েছে। আগামী দিনে আরও ভাল ভাবে এই হাটকে আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা চলবে।”