Birbhum Fire: আগুনে ঝলসে মৃত্যু দুই শিশুরও, রামপুরহাটে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে ধন্দ, ৭ থেকে ১২, চলছে ওঠানামা
Birbhum Fire: রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মোটর সাইকেলে চেপে চার-পাঁচ জনের একটি দল বকটুই গ্রামে চড়াও হয় (Birbhum News) বলে অভিযোগ।
কলকাতা: জতুগৃহে ঝলসে গেল পর পর দেহ। তাতে গোটা রাজ্য উত্তাল হয়ে উঠলেও, রামপুরহাট অগ্নিকাণ্ডে (Rampurhat Fire) মৃত্যু নিয়ে ধন্দ বজায় রইল দুপুর পর্যন্ত। শুরুতে দমকল বাহিনী জানিয়েছিল, সোমবার রাতে প্রথমে তিনটি দেহ উদ্ধার করে তারা। তার পর সকালে উদ্ধার হয় আরও সাতটি দেহ। পুড়ে যাওয়া বাড়ির একটি ঘর থেকে সাত জনের দেহ উদ্ধার হয় বলে জানায় তারা। অর্থাৎ সবমিলিয়ে ১০টি দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করা হয়। এই পর্যন্ত ঠিকঠাক চললেও, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওঠানামা করতে শুরু করে মৃতের সংখ্যা।
স্থানীয়দের দাবি, কমপক্ষে ১০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাতে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু বীরভূমের (Birbhum Fire) পুলিশ সুপার, সকাল থেকে ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি পরিদর্শন করছেন যিনি, তিনি জানান, সাত জন আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছেন। কিন্তু রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে দাবি, হাসপাতালের দাবি, ছয় মহিলা, দুই শিশু-সহ মোট ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জানান, তাঁর কাছে ছ’জনেরই মৃত্যুর খবর রয়েছে।
সোমবার রামপুরহাটে জাতীয় সড়কের ধারে একটি দোকানে চা খাওয়ার সময় আক্রান্ত হন সেখানে তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ। তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে একদল দুষ্কৃতী। তাতে মৃত্যু হয় ভাদু শেখের। সেই ঘটনায় এলাকার পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত, সেই সময়ই রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মোটর সাইকেলে চেপে চার-পাঁচ জনের একটি দল বকটুই গ্রামে চড়াও হয় (Birbhum News) বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, দেদার ভাঙচুর চালায় তারা। তার পর একে একে কমপক্ষে ১০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাতে পুড়েই ১০-১২ জনের মৃত্যু হয়। হামলাকারীরা নিহত তৃণমূল নেতার অনুগামীদে এবং তারা রাতভর তাণ্ডব চালায় বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা (Rampurhat News)।
আরও পড়ুন: Rampurhat Fire: রাজ্যজুড়ে অরাজকতা, ৩৫৬-র দিকে যাচ্ছে পরিস্থিতি, হুঁশিয়ারি সুকান্ত মজুমদারের
গতকাল রাতেই ওই গ্রামে উদ্ধারকার্য চালায় দমকল বাহিনী। তাদের এক আধিকারিক জানান, পুড়ে যাওয়া বাড়িতে একটি ঘরের মধ্যে থেকেই সাত জনের দেহ উদ্ধার হয়। আগুনে ঝলসে মৃতদেহগুলি মাংস পিণ্ডে পরিণত হয়। তৃণমূল উপপ্রধানের খুন হওয়া এবং ওই রাতেই পাড়ায় হামলা, দুই ঘটনার মধ্যে সংযোগ দেখতে পাচ্ছেন স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, নেতার খুনের প্রতিশোধ নিতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। প্রশাসনের কাছে এ নিয়ে কড়া পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। যদিও দুই ঘটনার মধ্যে কোনও সংযোগ রয়েছে কি না, সে ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। আগুন ধরানো হয়েছে, নাকি গ্যাস সিলিন্ডার বা স্টোভ ফেটে আগুন ধরেছে, তা নিয়েও নানা যুক্তি উঠে আসছে।
গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্য বিজেপি-র (BJP) সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। তাঁর অভিযোগ, "রাজ্যে অরাজকতার শাসন চলছে। পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর লজ্জা থাকলে পদত্যাগ করা উচিত। ১০ জনকে জলজ্যান্ত পুড়িয়ে মেরে দেওয়া হল। এরা আবার কথায় কথায় গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ দেখায়। বিন্দুমাত্র লজ্জা থাকলে ইস্তফা দেওয়া উচিত মুধ্যমন্ত্রীর। ওঁর অপদার্থতা এটি। এত বড় ঘটনা ঘটল, অথচ পুলিশ-প্রশাসন জানতে পারল না! এ রাজ্য ধঈরে ধীরে রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে এগোচ্ছে বলে মনে হচ্ছে আমার।"