উদ্যোক্তা গ্রামবাসীরাই, খয়রাশোলের ১৫০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজোর নেপথ্যে এক অজানা ইতিহাস
গ্রামের মানুষেরাই এই পুজোর আয়োজন করে থাকেন। পালা করে পুজো করা হয়।
গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম: গ্রাম্য পরিবেশের যেসকল দুর্গাপূজো হয়ে থাকে তার মধ্যে অন্যতম হল বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের অন্তর্গত নাকড়াকোন্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভাদুলিয়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজো। গ্রামের মানুষেরাই এই পুজোর আয়োজন করে থাকেন। পালা করে পুজো করা হয়। আর সবাই মিলে আনন্দ ভাগ করে নেওয়া হয়। বছরের পর বছর ধরে এই ভাবেই পালন করা হয়ে আসছে এই গ্রামের দুর্গাপুজো।
একসময় এই দুর্গা মন্দির ছিল মাটির এবং খড়ের চাল দিয়ে তৈরি। পরবর্তীকালে গ্রামের মানুষদের সহযোগিতায় তা কংক্রিটের মন্দিরে তৈরি হয়েছে। তবে এই দুর্গাপুজো করার ক্ষেত্রে গ্রামবাসীদের যে অর্থ খরচ হয় সেই অর্থ খরচের ক্ষেত্রে গত কয়েক বছর থেকে সরকারি সহযোগিতা অনেকটাই সহায়তা করছে।
আরও পড়ুন, দশমীতে 'বাড়ির মেয়ে'কে নবমীর রাঁধা ভোগ অর্পণ, গান গেয়ে মা দুর্গাকে বিদায় জানায় চট্টোপাধ্যায় পরিবার
এই পুজোর ইতিহাস সম্পর্কে জানা গিয়েছে, এই পুজো দেড়শ বছরেরও বেশি পুরাতন। একসময় এই পুজো করতেন পাল এবং মোড়ল বংশের মানুষেরা। কিন্তু পরবর্তীকালে তাদের পরিবারে আর্থিক সঙ্কট দেখা দেয়। আর্থিক সঙ্কটের কারণে দুর্গাপুজোর মত এত ব্যয়বহুল একটি পুজো তাদের পক্ষে চালানো সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে আবার মায়ের এই পুজো বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষপাতিও ছিলেন না তারা। তারপরে তারা এই পুজো গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দেন। এরপর থেকেই গ্রামবাসীরা সমবেতভাবে চাঁদা করে এই পুজো চালিয়ে আসছেন।
সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দুর্গাপূজা কমিটিগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। এই গ্রামের এই দুর্গাপূজা কমিটিও সেই সহযোগিতা পেয়ে থাকে। সেই সহযোগিতা তাদের পুজো করার ক্ষেত্রে অনেকটাই সহায় হয়েছে বলেই তারা দাবি করেছেন।
পাশাপাশি এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী শ্রীমন্ত মুখার্জী বলেন মুখ্যমন্ত্রী সবার মুখে হাসি ফোটাতে বা দুঃখ ঘোচাতে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন, সেই মতোই পুজো কমিটিগুলো কে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। করোনা বিধি তথা সরকারি বিধিনিষেধ মেনে এবং শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে যেন পূজা পার্বন অনুষ্ঠিত হয় সে নিয়ে গ্রামবাসী সহ সকলে মিলে আলোচনা করা হয়।