West Bengal Assembly: বিধানসভার বাইরে ঘুগনি-মুড়ি-চায়ের স্টল বিজেপি বিধায়কদের, ‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা’য় ঝালমুড়ি বিক্রি অগ্নিমিত্রার
Agnimitra Paul: বিধায়ক পদ সামলে বাড়তি রোজগারের জন্য বিজেপি বিধায়করা যে ঘুগনি-মুড়ি চা বিক্রি করতে নামেননি, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই।
উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: রাজ্য বিধানসভার (West Bengal Assembly) বাইরে ঘুগনি-মুড়ি-চায়ের স্টল। খদ্দের ডাকতে হাঁক দিয়ে চলেছেন বিধায়করা। বৃহস্পতিবার শহর কলকাতায়, বিধানসভার মূল ফটকের গায়ে ফুটপাত ঘেঁষে এমনই বেনজির দৃশ্য চোখে পড়ল। ঠেলার উপর পসরা সাজিয়ে দাঁড়িয়ে বিজেপি (BJP) বিধায়কদের। থার্মোকলের বাটিতে ঘুগনি ছেলে বিক্রি করতে দেখা গেল কাউকে। মশলাপাতি দিয়ে ঝালমুড়িও বানাতে দেখা গেল কাউকে কাউকে। রাজ্য বিধানসভার বাইরে এমন দৃশ্য আগে কখনও যে চোখে পড়েনি, তা নির্দ্বিধায় বলা যায়।
বিধানসভার বাইরে ঘুগনি, মুড়ি, চা বিক্রি বিজেপি বিধায়কদের
বিধায়ক পদ সামলে বাড়তি রোজগারের জন্য বিজেপি বিধায়করা যে ঘুগনি-মুড়ি চা বিক্রি করতে নামেননি, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। বরং পুজোর আগে রাজ্যের বেকার যুবকদের চা-ঘুগনির যে পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), তার বিরুদ্ধেই এমন অভিনব উপায়ে প্রতিবাদের রাস্তা বেছে নিয়েছেন বলে জানান বিজেপি বিধায়করা। তাই অগ্নিমিত্রা পাল থেকে মনোজ টিগ্গা, বিধানসভার বাইরে একজোটে ঘুগনি-মুড়ি চা বিক্রেতা হিসেবে আবির্ভূত হলেন তাঁরা।
বিধানসভার বাইরে ঘুগনি-মুড়ি-চা কিনতে খদ্দেরের ভিড় যদিও দেখা যায়নি। তবে থার্মোকলের বাটিতে ঘুগনি নিয়ে ‘ঘুগনি, ঘুগনি, ১০ টাকা, ১০ টাকা’ বলে হাঁক দিতে দেখা গেল বিজেপি বিধায়কদের একজনকে। ‘আমার খোকা লুটবে বঙ্গ, করবে দেদার চুরি, তোমার খোকা বেচবে পুজোয় ঘুগনি-ঝালমুড়ি’, স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে থাকতেও দেখা গেল অনেককে। স্টিলের কৌটোয় একে একে মশলাপাতি, মুড়ি ঢেলে ঝালমুড়ি বানালেন খোদ অগ্নিমিত্রা পাল।
এ নিয়ে প্রশ্ন করলে বিজেপি-র পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ (Manoj Tigga) কটাক্ষ মিশ্রিত সুরে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন কেটলি, চেয়ার, টেবিল কিনে চা-ঘুগনি বিক্রি করতে। বলেছিলেন, ১ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে কোটিপতি হওয়া যায়। আমাদের রক্তে কয়লা, বালি, পাথর চুরি নেই, বড় ধরনের দুর্নীতি করতে পারব না আমরা। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের পথ দেখিয়েছেন যে, এ ভাবে কোটিপতি হওয়া যায়।’’ বাংলার শিক্ষিত যুবসমাজকে চা-ঘুগনি বিক্রি করতে বলে মুখ্যমন্ত্রী অপমান করেছেন বলেও মত তাঁর।
বুটিক ছেড়ে, বিধায়কের কাজ ছেড়ে ঝালমুড়ি বিক্রি করছেন কেন জানতে চাইলে অগ্নিমিত্রা বলেন (Agnimitra Paul), ‘‘দিদিমণি বলেছেন তো! বলেছেন, ঝালমুড়ি-চা-বিস্কিট বিক্রি করেও কোটিপতি হওয়া যায়। মাকে বলেছি বড় কেটলি, কাগজের কাপ কিনে দিতে। আমরা বিজেপি বিধায়ক। তাই বলে মুখ্য়মন্ত্রীর পরিবারের মতো কোটিপতি হতে ইচ্ছা যায় না! একেবারেই লজ্জা নেই, তাই তো বিক্রি করতে নেমেছি!’’
মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণাতেই, জানালেন অগ্নিমিত্রা
যুবসমাজকে চা বিক্রির পরামর্শ দেওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একহাত নেনও অগ্নিমিত্রা, তাঁর কথায়, ‘‘২০২১ সালে বলেছিলেন, দ্বিগুণ চাকরি দেবেন। তাহলে কি ঝালমুড়ি বিক্রির কথা বলেছিলেন! এই যে এত আয়োজন, বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন, সবাই কি এমনি এমনি খেয়ে চলে গেলেন! সব লোক দেখানো!’’ এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও যুকদের পকোড়া বিক্রির কথা বলেছিলেন। ২ কোটি চাকরির কথা সোনা গিয়েছিল তাঁর মুখেও। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরলে অগ্নিমিত্রা দাবি করেন, ২ কোটি চাকরি হয়েছে। এমনি এমনি ভারত অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে বিশ্ব তালিকায় উঠে আসেনি।