Purba Medinipur: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বিষয়ে তত্ত্বতালাশ, উপভোক্তাদের বাড়ি ঘুরে দেখলেন কেন্দ্রীয় অফিসাররা
Purba Medinipur News: শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে কোথাও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম পরিবর্তন করে বাংলা আবাস যোজনা করা হয়েছে কিনা, কোনও বাড়িতে, প্রকল্পের নাম লেখা বোর্ড পরিবর্তন করা হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখেন।
বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (Pradhan Mantri Awas Yojana) বিষয়ে, তত্ত্বতালাশ করতে আজও পূর্ব মেদিনীপুরে (Purba Medinipur) উপভোক্তাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরলেন কেন্দ্রীয় সরকারের অফিসাররা। যা নিয়ে সপ্তমে চড়ল তরজা।
আবাস যোজনা নিয়ে তত্ত্বতালাশ, উপভোক্তাদের বাড়ি ঘুরলেন কেন্দ্রীয় অফিসারেরা
এদিন উপভোক্তাদের বাড়ি ঘুরে দেখতে এসে এক অফিসারকে প্রশ্ন করতে শোনা গেল, 'এই বাড়িটায় সরকারি সাহায্য পেয়েউছেন? কী সাহায্য পেয়েছিলেন?' উপভোক্তা মহিলার জানান প্রথমে মেলে ৬০ হাজার। তাতে ছাদ ঢালাই দেওয়া হয়। এরপর কখন কী টাকা পেয়েছেন তার হিসেব দেন ওই মহিলা। অফিসারের পাল্টা প্রশ্ন, 'মানে ১ লক্ষ ১০ পেয়েছেন। কেন্দ্র সরকার, না রাজ্য সরকার কে দিয়েছে টাকাটা?' এই প্রশ্নের উত্তর নেই ওই মহিলার কাছে।
শুক্রবার, শনিবারের পর, সোমবার। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বিষয়ে, পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক জায়গায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে খোঁজখবর নিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিরা। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে, কোথাও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম পরিবর্তন করে বাংলা আবাস যোজনা করা হয়েছে কিনা, কোনও বাড়িতে, প্রকল্পের নাম লেখা বোর্ড পরিবর্তন করা হয়েছে কিনা, উপভোক্তারা কেমন কিস্তিতে টাকা পেয়েছেন, সব খতিয়ে দেখেন কেন্দ্রের আধিকারিকরা। কোথাও, পুরো টাকা পেয়ে গেলেও সম্পূর্ণ হয়নি বাড়ি। সেসব খতিয়ে দেখেন অফিসাররা।
মোবাইল ফোনে উপভোক্তাদের অভাব, অভিযোগ, বাড়ির ছবির ভিডিও করতে দেখা যায় আধিকারিকদের। তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের দাবি, বৃষ্টিতে প্রকল্পের নাম ধুয়ে যাওয়ায়, নতুন করে প্রকল্পের নাম লেখা হয়েছে।
ধলহরা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা ও প্রধান আতিয়ার রহমান বলেন, '১০০ দিনের কাজ নিয়ে কয়েকজন উপভোক্তার সমস্যা রয়েছে। বাড়ি তৈরির পর একটা বাড়িতে ২-৩ বার করে লিখেছিলাম। উঠে যায়, বৃষ্টিতে ধুয়ে যায়। যেহেতু উঠে গেছে তাই পুনরায় লাগিয়েছি।'
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা থেকে গ্রামীণ সড়ক যোজনা - বিভিন্ন প্রকল্পের নাম বদল ঘিরে, কেন্দ্র-রাজ্যের সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। কেন্দ্রের প্রকল্পে রাজ্যের নাম রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন অফিসাররা। সোমবারই বিজেপি বিধায়ক ও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ট্যুইটে লেখেন, 'প্রকৃত ঘটনা জানতে, একটি ইন্সপেকশন টিম পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রক। যদি সত্য প্রকাশ্যে চলে আসে, এই আশঙ্কায় রাতারাতি রং করে বা, পেস্টিং করে, কেন্দ্রের প্রকল্পের নাম সংশোধন করেছে দেউলিয়া পশ্চিমবঙ্গ সরকার।'
তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায় বলেন, 'এটা কেন্দ্রের বাপের টাকা না। রাজ্যও টাকা দেয়। বাংলা আবাস যোজনা তো মুখ্যমন্ত্রী নিজের নামে করছেন না। বাংলাকে টাকা না দিয়ে গরিব মানুষকে মারতে চায়।'
প্রকল্পের ‘নাম বদল’ তরজা। কেন্দ্র-রাজ্যকে কটাক্ষ বামেদের। আইনজীবী ও সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের কথায়, 'প্রকল্প যদি কেন্দ্রের হয়, রাজ্য কার্যকর করবে, সেটাই তো রাজ্যের কাজ। নাম বদলানোয় কোনও কৃতিত্ব নেই। একটা সময় বহু কোটি টাকার কাজ করেছি। জ্যোতি বসু প্রকল্প নাম দিয়েছি? আর কেন্দ্রের অফিসাররা যে আসছে, এতেও তো অনেক খরচ। তা দিয়েই একটা বাড়ি হয়ে যায়।'
পূর্ব মেদিনীপুরের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বিডিও জানিয়েছেন, গোটা বিষয়ে তিনি খোঁজ খবর নেবেন।