Coochbehar : রবীন্দ্রনাথের ক্রমাগত আক্রমণের মুখে নরম জবাব বর্তমান জেলা সভাপতির, এড়ালেন দলীয় কোন্দলের কথাও
Coochbehar : গত পুরভোটে জয়ের পরও ২০২২-এর মার্চে গিরীন্দ্রনাথ বর্মনকে সরিয়ে ফের পার্থপ্রতিম রায়কেই জেলা সভাপতির দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হয়।
শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার : আক্রমণের পাল্টা আক্রমণ নয়, বরং নরম জবাব। কোচবিহারের প্রাক্তন জেলা সভাপতির ক্রমাগত আক্রমণের মুখে নরম জবাব দিলেন বর্তমান জেলা সভাপতি। মানতে চাইলেন না দলীয় কোন্দলের কথাও।
তৃণমূলের বর্তমান বনাম প্রাক্তন জেলা সভাপতির বিরোধ ঘিরে সরগরম কোচবিহারের রাজনীতি। গত কয়েকদিন ধরেই চাঁছাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানাচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। নাম না করে কখনও গোখরো বলে খোঁচা, কখনও আবার বিশ্বাসঘাতক বলে কটাক্ষ।
গত পুরভোটে জয়ের পরও ২০২২-এর মার্চে গিরীন্দ্রনাথ বর্মনকে সরিয়ে ফের পার্থপ্রতিম রায়কেই জেলা সভাপতির দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হয়। সেই প্রসঙ্গ টেনেই সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেছিলেন, “কাকে কাকে ল্যাং মারেনি একটা লোক! আমাকে ল্যাং মারল! ঠিক আছে। মিহির দা-র সঙ্গে ল্যাংই মারল না, দল থেকে তাড়াল। তারপরে বিনয় বর্মন, তাঁর ঘাড়ে চেপে বসল। তাঁকে দল থেকে তাড়াল। বিনয়ের পরে কে আসল ? ও, উনি নিজেই আসলেন। ঠাকুর নিজেই বসলেন আসনে। গিরীনবাবু আসলেন। ভদ্রলোক মানুষ, শিক্ষিত মানুষ। ভাল মনের মানুষ। সাদা মনের মানুষ। সবাইকে বিশ্বাস করে চলতে থাকলেন। এই চলতে গিয়ে কখন যে ফিতে কেটে দিয়েছে গিরীনদাও বুঝতে পারেনি, আমরাও বুঝতে পারিনি।
এর আগে গত ২৮ এপ্রিল রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেছিলেন, একটা গোখরো সাপকে - তাকেও বিশ্বাস করা যায়। তাকে নিয়ে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়া যায়। কিন্তু যার জন্য সুপারিশ করেছিলাম, তাকে আজ আর বিশ্বাস করা যায় না।
এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেছিলেন, কেউ কেউ সভাপতির ডাকে মিছিলে না গিয়ে অন্য মিছিলে হাজির হয়েছে। আমি দলের জেলা সভাপতি মিটিং আহ্বান করেছি। আপনি ২-১ জন লোক নিয়ে চামচাগিরি করতে যাবেন, এটা হতে পারে না।
তবে এবার কার্যত কৌশলী নীরবতার পন্থা নিলেন তিনি। পার্থপ্রতিম রায় বললেন, আমি দলের কোনও বিষয়ে প্রকাশ্যে বলার কোনও পক্ষপাতী নই, জিমবাবু অত্যন্ত সজ্জন ভালো মানুষ। উনি যদি সরাসরি আমাকে বলতে পারতেন আমি বারবার তাঁকে ফোন করেছি। এটা সমস্যা নয়, এটা মিটে যাবে।
২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে পর্যন্ত কোচবিহারে জেলা তৃণমূল সভাপতি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কিন্তু লোকসভা ভোটে কোচবিহারে তৃণমূল হেরে যাওয়ার পর, বিনয়কৃষ্ণ বর্মনকে জেলা সভাপতি করা হয়। সেইসময় পার্থপ্রতিম রায় ছিলেন জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি। ২০২০ সালে পার্থপ্রতিম রায়কে জেলা সভাপতি করে তৃণমূল। কিন্তু ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে জেলায় খারাপ ফলের পর পার্থপ্রতিম রায়কে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেয় দল। গিরীন্দ্রনাথ বর্মনকে নতুন জেলা সভাপতি করা হয়। কিন্তু গত পুরভোটে জয়ের পর, মার্চ মাসে গিরীন্দ্রনাথ বর্মনকে সরিয়ে ফের পার্থপ্রতিম রায়কেই জেলা সভাপতির দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হয়। গত মাসে কোচবিহারে তৃণমূলের কোর কমিটি থেকে নাম বাদ পড়ে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের। তার পর থেকেই কখনও সোশ্যাল মিডিয়া, কখনও বা প্রকাশ্য মঞ্চে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন তিনি।